আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছুটি, ফাজলামি ঠান্ডা, ইন্টারভিউ, অফিস কামাই

তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।

ইস্টার উপলক্ষে বছরের প্রথম লম্বা ছুটি। টানা ৪দিন। অনেকদিন থেকে কিছু আত্মীয়স্বজনকে কথা দিয়ে রেখেছিলাম ছুটিতে বেড়াতে আসবো । বৃহস্পতিবারকে অর্ধদিবস বানিয়ে ছুটি উজ্জাপন শুরু।

সকালটা মোটামুটি ভালোই ছিলো। দুপুরে শুরু হলো টানা বৃষ্টি, কিছুক্ষন পর স্নো, ঝড়। মেজাজ বিগড়ে গেলো (কার্টুন ছবির ডোনাল্ড ডার্কের মতো)। কোলন, আখেনের আবহাওয়া আরও খারাপ। সারাদিন ঘরে বসে আড্ডা।

তবে বেশ কয়েকবছর পর অনেকগুলো পুরনো বাংলা সিনেমা দেখলাম। অনেকদিন পর রাত জাগার জন্য শরীর খারাপ হলো। ঘাড় ব্যথা। অফিসে ফোন করে দিলাম আসবো না। চান্সে অফিস কামাই দিলাম।

অবশ্য বাসায় বসে শুধু কার্টুন দেখতে আর কতোক্ষন ভালো লাগে। ঝগড়া করার কেউ নেই। ছুটো বোন ও বেড়াতে। অনেকদিন পর দুপুরে খেয়ে ঘুম। আহ দুপুরে ঘুমের মজাই আলাদা ।

দুপুরে সাধারনত ভাত খাওয়া হয় শুধু ছুটির দিনগুলোতে। ৪দিনের ছুটি ৫দিনে গড়ালো। শরীরের ওজনটাও একটু বাড়লো। হঠাৎ করে গতদিন বেশ স্নো পড়ে সব ফকফকা সাদা। এবছর খুব একটা স্নো পড়েনি।

তবে অসময়ে স্নো বেশ বোরিং। সাইকেল সেই কবে থেকে রেডি করে রেখেছি। সামার আসি আসি করে আসছে না। জার্মান লাইফে প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ দিলাম। ইন্টারশিপের জন্য একটা কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে হয়েছিলো।

সেখান থেকে আর বেরুতে হয়নি। ইন্টারভিউ ভালোই হয়েছে। ওরা পারলে কালকেই জয়েন করতে বলে। আমি এখনো আমার কোম্পানিতে আলাপই করিনি। সকালে ইন্টাভিউ শেষ করে অফিস এসে দেখি ম্যানেজার কাকা অফিশিয়েল ট্যুরে আছেন।

গত একবছরে উনার সাথে গত সপ্তাহে একবার মিটিং করেছি। ফলাফল দেখে উনি খোশ। কিন্তু আমি একবছরে কি পরিমান কাজ শিখেছি সেইটা নিয়ে নিজে সন্তুষ্ট না। সেই জন্য চাকরীর খুজে। লাঞ্চে পুরনো বসের সাথে এই নিয়ে আলাপ করলাম।

বস বলে এখানে অসুবিধা কি? -গত সপ্তাহে RWE(সবচে বড়ো জার্মান পাওয়ার প্রডিউসার) থেকে দুটো মেইল এসেছে। আমাদের পুরনো সফটওয়্যার ভার্সনের ডিভাইস ওখানে ইনস্টল। কিন্তু ডেভোপলমেন্ট থেকে মেইলগুলো আমাকে ফরোয়ার্ড করে দিয়েছে। এখন এগুলো সমাধান করা সম্ভব না। আর ম্যানেজার ঐদিন বলেছে আমার ডেভোলপ করা ডিভাইস ছোট পরিসরে কিছু নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লানটে ডেভিভারী দিবে।

আর জানোই তো, একবার প্রোডাক্ট মার্কেটে গেলে আমার উপর সোনামি'র মতো প্রেসার আসবে। আমি ভয়ে আছি। এগুলো সমাধানের কোন রাস্তা এখন পর্যন্ত আমার জানা নেই। -এতো তাড়াতাড়ি ঘাবড়ে গেলে চলবে নাকি? সবেতো মাত্র শুরু। আমিতো আগেই বলেছি এরকম কিছু হবে।

কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। তুমি ম্যানেজার আসলে আলাপ করো। তুমার রুমে তো টেষ্ট সিস্টেম এখনো তৈরী করোনি। টেস্ট সিস্টেমের জন্য তোমাকে অনেকগুলো ডিভাইস ব্যবহার করে প্রবলেম রিপ্রডিউজ করতে। তারপর সমাধান।

তবে তোমাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে "না" বলা শিখতে হবে। তোমাদের এশিয়ানদের মতো জ্বি হুজুর টাইপ হলে ভবিষ্যতে পস্তাতে হবে। অনেকেই অনেক রকমের প্রবলেম নিয়ে আসবে। তুমি ওগুলো ডাইভার্ট করে তোমার বসের উপর ছেড়ে দিবে। ব্যস, অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

আর এখানে প্রবলেম সমাধান তোমাকেই করতে হবে। তুমি ইউনি পাশ করা ছাত্র। কি ছকে সমস্যা সমাধান করবে সেটা একমাত্র তুমি জানো। এই একটা লোকের সাথে কথা বলে শান্তি পাওয়া যায়। প্রায় সময়ই দুজন বসে পারিবারিক সমস্যা থেকে প্রজেক্ট রিলেটেড হাজারো সমস্যা নিয়ে আলাপ করি।

অনেক সময় বেশ ভালো সমাধান বের হয়ে আসে। রুমে বিরাট হোয়াইটবোর্ড আছে। আছে ১৫/২০টা বিভিন্ন রঙের মার্কার। সমস্যাগুলে নিয়ে ওখানে লজিকেল উপায়ে আকিঝুকি করা হয়। তারপর সমাধান ও হয় লজিকেল উপায়ে।

আগামীতে আর একটা ইন্টারভিউ দেবার ইচ্ছে আছে। টেস্টিং ডিপার্টমেন্টে। মজার কামলা। ডেভোলোপমেন্টের মতো এতো মাথাধরা কাজ নেই। দেখা যাক কপালে কি আছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.