এখন থেকে আমি 'মুক্ত মানব' -এই নিক-এ লিখবো। আপনি আমন্ত্রিত।
মির্চা-মৈত্রেয়ী: গল্প নয় সত্যি!
ক্লাশের প্রথমদিন সবার একটা চেষ্টা থাকে বরফ গলানোর। অনেকগুলো অচেনা মুখ প্রায় ষোলো সপ্তাহের জন্য একটা রুটিনে বাঁধা পড়ে যায়। টিচার-রা চেষ্টা করেন প্রত্যেককে দু-তিন জনের গ্রুপে ভাগ করে তাদেরকে চেনা-জানার সুযোগ করে দিতে।
আমার ভাগে পড়লো রুমেনিয়ার এক ছেলে। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে বলে উঠলো, 'তুমি মৈত্রেয়ী'র দেশের'? আমি বল্লাম পাশের দেশের তবে অভিন্ন ভাষার কথা। আমি বল্লাম 'তুমি 'ন হন্যতে' পড়েছো'? বল্লো, 'না, তবে আমি মির্চার অনেক লেখায় মৈত্রেয়ী'র কথা পড়েছি। বুঝলাম, ঘটনা তাহলে সত্যিই ছিলো...। আমাদের বন্ধু হয়ে যেতে সময় লাগলো না।
ড্রাকুলার মৃত্যু নেই!
সেই বরফ ভাংগা পার্টিতে আমি এবং কাতালিন (মির্চা জুনিয়র) ছাড়াও আরেকজন ছিলো। এর বাড়ি কলম্বিয়ায়, নাম কাঁচি (সিজার)। লাতিন রসবোধও যে খুব একটা কম যায় না সেটা প্রমান করতে সিজার সময় নিলো না। যেই মাত্র কাতা বল্লো যে ওর বাড়ী রুমেনিয়ায়, সাথে সাথে সিজার ছদ্মভয়ে দুহাতে নিজের গলা ঢাকলো। ভৌতিহাসিক-দের মতে, ড্রাকুলার আদি নিবাস নাকি রুমেনিয়ার ট্রানসিলভেনিয়া অন্চলের কোন এক দুর্গে ।
পরবর্তীতে যখনই সিজার কাতালিন-এর দ্যাখা হতো, সবাই জানতো সিজারের প্রথম কাজ হচ্ছে দুহাতে নিজের গলা আড়াল করা। কে না জানে, ড্রাকুলাদের ত্বষ্ণা সর্বদা মনুষ্য গ্রীবার নাগাল পেতে উদগ্রীব...। সবাই হেসে খুন হয়ে যেতো সিজারের শয়তানিতে।
নেট প্যাহা
তখনো কোর্সওয়ার্কের পালা শেষ হয়নি। ব্যাকপ্যাক কাঁধে টিপিক্যাল ছাত্র।
ভার্সিটি-টা একদম ডাউণ টাউনে, মানে, শহরের মধ্যিখানে। ক্যাম্পাস বলতে যে সবুজ ছবিটা মনের মধ্যে উঁকি দ্যায়, এটা মোটেও সেরকম না। অনেক গুলো বিল্ডিং-এর একটা মহানাগরিক হুলুস্থুল বড়জোর।
এ দেশেও ফকির-মিসকিন চোখে পড়ে, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে। বিলাতি ইংরেজী অভিধানের beggar শব্দটার এদেশে চল নেই।
এদেশে হাতপাতা মানুষদেরকে বলে pan handler (প্যাহা)।
মুখচেনা এক প্যাহা একদিন আমার এক পরিচিত লোকের কাছে কুড়ি ডলার চেয়ে বসলো। ভদ্রলোক জানতে চাইলেন ঠিক কুড়ি ডলারের কি প্রয়োজন। প্যাহার অকপট উত্তর , শীতের মধ্যে বাটি(pan) হাতে দাঁড়িয়ে থাকা আর ভালো লাগে না। একমাসের জন্য ইণ্টারনেট কানেকশন-নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বাড়িতে বসেই.....।
গল্পে অপরিচয়ের বরফ গললো। আমরা বন্ধু হলাম।
[সংবিধিবদ্ধ স্বীকারোক্তি: এগুলো নিছক মজার গল্প হিসেবে বলা। কাউকে কিম্বা কোন পেশাকে বড়-ছোট কিছুই করার কোন উদ্দেশ্য নেই, কখনো ছিলো না।
অনেক দিন কাতালিনের সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি, কোনদিন গলার উপরে দাঁত বসাবার চেষ্টা করেনি।
প্যাহা কেউ শখ করে হয়না। অনেক কষ্টে হয়। দরকার পড়লে আমিও হবো। ডাউন টাউনের কয়েকজন প্যাহা-বিশেষ করে সেই অন্তর্জালিক ছেলেটা আমার বন্ধু, ওদেরকে কেউ বংগবাজার থেকে আদি ও আসল হিমু কোম্পাণীর হলুদ পান্জাবী কিনে দিলে খুব ভালো লাগবে। সেই সাথে আমাকেও একটা! কলারের মাপ ষোলো, হাত ৩৬-৩৭]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।