সুশীলের ভেকধারী এক মহা ভন্ড!
আজকের পর্ব জামাতের সাবেক পাঁচ এমপিদের নিয়ে।
১. মাওলানা আব্দুস সোবহান
একাত্তরের কীর্তিকলাপঃ
মাওলানা আব্দুস সোবহান ১৯৭১ সালে পাবনা জামাতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ছিলেন। যে ৭৮ টি আসনে পাকিস্তান আবার উপনির্বাচনের আয়োজন করে সেইখানে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন পাবনা থেকে। এই উপ নির্বাচন পাকিস্তান সরকার ৬ ডিসেম্বর বন্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া তিনি ২০০১ সালে পাবনা - ৫ থেকে নির্বাচিত হন।
তিনি পাবনা শান্তি কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মওলানা সোবহানের বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাঙালি জাতিসত্তাবিরোধী ভূমিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে আল বদর, রাজাকার, শান্তি কমিটি গঠন করে ৩০ লাখ নিরীহ, নিরস্ত্র, শান্তিকামী মানুষ হত্যায় সহায়তা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যাবতীয় নৃশংস কার্যকলাপে সহায়তার জন্য তার বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২ , বিকাল ৩টায় তাকে পাবনার মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির হতে বলা হয়। কিন্তু সে সময়ে তিনি তার দলনেতা যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের সঙ্গে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। (সূত্র : ‘একাত্তরের দালালেরা’ : শফিক আহমেদ এবং এডভোকেট শফিকুল ইসলাম শিবলী, পাথরতলা, পাবনা)।
বর্তমান কাহিনীঃ
তার বিরুদ্ধে ত্রাণ বিতরনে অসাধুপন্থা অবলম্বনের জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে এই তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে। তার মালিকানাধীন আল আমানা হসপিটাল (পাথরতলা, পাবনা) থেকে ১৬০ পিস ত্রানের ঢেউটিন উদ্ধার করা হয়েছে। জামাতী সৎ লোকেরা ক্ষমতায় যেয়ে মসজিদে পা ফেলার থেকে ত্রাণ মন্ত্রলানয়ে যেতেই উৎসাহী বেশি বলে মনে হইতেছে!!
২. মিয়া গোলাম পারওয়ার
তিনি খুলনা মহানগরের জামাতের আমীর পোস্টে আছেন। খুলনা - ৫ থেকে নির্বাচিত এই সাবেক এমপির বিরুদ্ধে একটি স্থানীয় পাটকলকে (আসিফ জুট মিল) কৌশলের মাধ্যমে ৩৫ লক্ষ টাকা লুটপাট করে ধংস করে দেবার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মিল ম্যানেজারের দায়েরকৃত মামলাতে তাকে এই লুটের জন্য ও ২ কোটি টাকা ইলেক্ট্রিসিটি বিল বাকি করানোর জন্য দায়ী করা হয়।
মামলাটি বর্তমানে খান জাহান আলী থানায় তদন্তাদীন রয়েছে। এই অভিযোগ মাথায় নিয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে সংবাদপত্র সূত্রে জানা গেছে (আমাদের সময়, নভেম্বর ৬, ২০০৭)। সৎ লোকেদের পিছে পুলিশ কেনো হাতকড়া নিয়ে তাড়া করে!!
৩. এ. এম. রিয়াসাত আলী বিশ্বাস
সাতক্ষীরা - ৩ আসনের এই সাবেক জামাতী সাংসদ ও তার ছেলেকে জলমহাল দখল এবং মাছ লুটের অভিযোগে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া মালেকা খাতুন নামের এক মহিলা তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মে ৮, ২০০৭ এ প্রতারনা মামলা দায়ের করায় তাকে ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নেবার জন্য চাপ দেয় বাপ বেটা মিলে; নাহলে কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। এই অভিযোগে মালেকা খাতুন থানায় একটি জিডি দায়ের করেন যা তদন্তাদীন আছে।
সৎ লোকের দল জামাতের এই সৎ এমপি শুধু নিজে নন, ছেলেকে সাথেও সৎ (!) কাজ করে বেড়ান!! ছেলেকে এই শিক্ষা দিচ্ছে সৎ লোকের দলের কান্ডারিরা!!
৪. আব্দুল্লাহ আল কাফি
১৯৭১ সালের তথাকথিত উপনির্বাচনে তিনি পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত হন। এছাড়া ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ এর নির্বাচনে তিনি প্রতিদন্দ্বিতা করেন। মজার ব্যাপার হলো প্রতিবার নির্বাচনের আগে তার নাম আপগ্রেড হয়! ১৯৯১ সনে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন মোহাম্মদ আবদুল কাফি নামে, ১৯৯৬ সনে তিনি হয়ে গেলেন মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কাফি আর ২০০১ সনে তিনি হয়ে গেলেন প্রফেসর আব্দুল কাফি। মাওলানা, প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল কাফি ২০০১ সনে নির্বাচনে দিনাজপুর - ১ আসনে বিজয়ী হবার পরে দেশ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি ফেব্রুয়ারি ২৩ তারিখে ২০০৪ সনে উত্তরায় একটি প্লট পান এবং দখল বুজে নেন।
তারপর তিনি একটি মিটসুবিসি পাজেরো গাড়ি আমদানি করেন। সৎ লোকের পয়সা ভুতে যোগায়!!
৫. মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন
যশোর - ৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সাংসদ মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে অক্টোবর ১৩, ২০০৭ এ চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে কেশবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগে আরো দুটি পৃথক মামলা করা হয়। কেশবপুর থানার উপ-পরিদর্শক শওকত হোসেন জানান, মিজানুর রহমান চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এর আগেরদিন শুক্রবার মামলা করেন কামরুজ্জামান ও আফসার আলী সানা।
তারাও একই অভিযোগ করেছেন তার বিরুদ্ধে। মামলাগুলোর এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে শওকত হোসেন জানান, সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে বিভিন্নজনকে কলেজে প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ করা হয়েছে (বিডিনিউজ২৪, অক্টোবর ১৯, ২০০৭)। সৎ লোকের দলের পার্থিব সম্পদের প্রতি লোভ দেখা যাচ্ছে তেমন কম না!!
এই হলো সৎ (!) লোকের কিছু নমুনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।