আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়, পাড়ে লয়ে যাও আমায় মেডিটেশন বা ধ্যান, এই শব্দটির গভীরতা অনেক।
"ধ্যান" শব্দটি সংস্কৃত ধাতু ‘ধ্যৈ’ ধাতু থেকে এসেছে। ‘ধ্যৈ’ মানেই ‘চিন্তা করা’ ব্যাখ্যা করে বলে গেলে কোন একটি বিষয় বা বস্তুকে অবলম্বন করে তার প্রতি মনকে স্থির রেখে যাবতীয় চিন্তা শুন্য করার নামই ধ্যান। অন্য অর্থে- আমাদের মগজের এলোমেলো চিন্তা ভাবনা গুলো,যেগুলোর জন্য আমরা মগজের পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারি না,সেগুলোর লাগাম টেনে ধরা। বলা হয়, এর ফলে মনকে আপনি নিয়ে যেতে পারেন অনাবিল প্রশান্তির অনন্য এক জগতে।
বিভিন্ন ধর্মেই ধ্যানের বিভিন্ন রুপ। ধর্মগতভাবে ধ্যানের পটভূমি জানতে আপনাদের একটা লিঙ্ক দিলাম। ধ্যানঃ ধর্ম ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে
ইচ্ছে করলে পড়ে ফেলতে পারেন মেডিটেশন নিয়ে উইকির একটা ডক রিসার্চ অন মেডিটেশন
বাংলাদেশে বর্তমানে সিলভা মেথড, কোয়ান্টাম মেথড সহ অনেক প্রতিষ্ঠান মেডিটেশনের কোর্স করায়।
মেডিটেশন চর্চার পথিকৃৎ এর নাম যদি বলতে বলা হয় তবে বলা যাবে মাহি কাজি ও তাঁর প্রতিষ্ঠান আইসোমেট্রিকের নাম।
বর্তমানে ১৩১ টি দেশে পরিচিত সিলভা মেথডকে তিনিই বাংলাদেশে এনেছেন।
মাহি কাজিও সিলভা কে জানতে এই লিঙ্কে ঢু মারতে পারেন মনের গবেষক মাহী কাজীর কথা
আগেই বলে রাখি,’৬০-এর দশকে প্রাচ্যে বিভিন্ন রকমের ধ্যান পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করার কয়েক বছরের মধ্যে পাশ্চাত্যেও এর প্রভাব পড়ে। ১৯৬৪ সালে সাইকো কেরারনেটিক্স, ১৯৬৬ সালে সিলভা মেথড, ১৯৬৮ সালে ইএমটিসহ মেডিটেশনের প্রায় অর্ধশত পদ্ধতি চালু হয়। তবে এরমধ্যে সিলভা মেথড সবচেয়ে জনপ্রিয়। এই মেথড বর্তমানে বিশ্বের ১৩১টি দেশে ৩০টি ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সিলভা মেথডের একমাত্র অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান আইসোমেট্রিক লিমিটেড।
যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাহি কাজি।
বর্তমানে কোয়ান্টাম মেথডে মহাজাতক নামে পরিচিত আল বোখারি সিলভায় কোর্স করেছিলেন। তারপর নিজের মত করে ধ্যান চর্চার এই সিস্টেম কে পরিমার্জিত করে কোয়ান্টাম মেথড চালু করেন(কোয়ান্টাম মেথড আন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত নয়)।
আমার মতে কোয়ান্টাম মেথডে মেডিটেশনকে একটু ভুল ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বা অতিরঞ্জিত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সিলভাতেও কিছু কিছু ব্যাখ্যাতীত কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু কোয়ান্টামের কারসাজির কাছে তা কিছুই না। যেমন-মনের ঘরে গিয়ে হার্টে অপারেশন এই সব।
কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠানের একটা জিনিষ ভালো। সেটা হল- লং রিলাক্সজেশন। এটা মেডিটেশনের প্রাইমারী ধাপ।
আগেই বলে রাখি মেডিটেশন আপনার মনযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে, ব্রেইনকে আরও কর্মক্ষম করে তুলবে। ব্যস,এটুকুই। কিন্তু এর ফলে আপনি আপনার মস্তিষ্কের দুই পার্ট মানে রাইট আর লেফট হেমিস্ফিয়ারকে সমানে ব্যবহার করতে পারবেন। যা আপনার কল্পনা শক্তিকে আগের চেয়ে অনেক শাণিত করবে। ফোকাসিং পাওয়ার বাড়াবে।
আর কনফিডেন্স বাড়াবে। যেটা আপনার মধ্যে একটা ভালো লাগা নিয়ে আসবে।
আর চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেডিটেশনের প্রয়োগ এই লিঙ্কে ঘুরে আসতে পারেন।
ক্যান্সার রিসার্চ ইয়ুকে
এখানেও যেতে পারেন....
মেডিটেশন ফর হার্ট পেশেন্টস
আরেকটা কথা, ধ্যান করার জন্য যে একেবারে প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে বা টাকা দিয়ে কোর্স করতে হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। আপনি ইচ্ছা করলে নিজে বাসায় বসে ধ্যান বা রিলাক্সজেশন করতে পারেন।
শ্রদ্ধেয় ব্লগার লিসানি ভাই এর একটা পোস্টের লিঙ্ক দিচ্ছি আসুন, দুনিয়ার সবচে সহজ ধ্যানটা করে ফেলি
মেডিটেশনের বিজ্ঞানসম্মত অনেক দিক আছে। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানগুলো এটার সাথে নিজেদের মনগড়া কথা লাগিয়ে বিষয়টাকে বাণিজ্যিক খাতেও নিয়ে এসেছে। আপনি,আপনার জন্য যা বিজ্ঞানসম্মত শুধুমাত্র তাই এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গ্রহন করতে পারেন। এর বেশী কিছু নয়।
আপনার মানসিক প্রশান্তি কামনা করছি।
হ্যাপি মেডিটেশন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।