আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আকাশ পাতাল রেলের স্বপ্ন ও আমাদের ক্যান্টনমেন্ট সাম্রাজ্য!

http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002

একদিন আমি আবিষ্কার করলাম, আমার চুল পেঁকে গেছে। সব চুল সাদা। হাজার বছর ধরে ঢাকার পথে প্রান্তরে এই লক্কর ঝক্কর গাড়িতে , এই তেল চিটচিটে নোংরা সিটে বসে ঘুমিয়ে পড়া আমি জেগে উঠে দেখি- থুথ্থুরে এক বুড়ো!! আমার যখন খুব ক্ষুধা লাগতো তখন অফিসের লাঞ্চ বক্সটা বের করে খেতে বসলেই আমার দিকে সবাই হা করে তাকিয়ে থাকতো! সবাই যার যার নাওয়া খাওয়া ভুলে আমার দিকে তাকিয়ে আমার খাওয়া দেখতো! বিভিন্ন টিভি চ্যানেলগুলো আমার সেই খাওয়া সরাসরি টেলিভিশনে লাইভ টেলিকাস্ট করতো! ইদানীং তো আবার নানান বিধি নিষেধ!! ইদানীং আমার লাঞ্চ খাওয়া টেলিভিশনে খুব একটা দেখায় না!! আমি খেতাম একটু অন্যভাবে। সরাসরি হাতের খাবার মুখে না তুলে আমি হাতটা মাথার পেছন দিয়ে ঘুরিয়ে তারপর মুখে দিতাম। আপনারা অবাক হচ্ছেন, তাই না! আমি খুব মজা পাই এভাবে হাত ঘুরিয়ে খেতে! এতে হজমের দারুণ সুবিধা হয়!! আপনারা চাইলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।

হজমের সুবিধা হলেও ও পায়ুপথে মল নিষ্কাশনে কোনো প্রবলেম না হলেও আমার অন্য একটা সমস্যা হলো। আমার চুলে পাঁকন ধরতে লাগলো। আমার বয়স বেশি না, এই ধরেন ২৮! কিন্তু আমি হাজার বছরের এক বুড়ো!! ঠিক তখন আমাদের দেশের গণতন্ত্রে আশাবাদী, সামরিক সাপোজিটরি প্রিয় দেশের সর্বাধিনায়কেরা আমাকে একটা বুদ্ধি দিলেন। বুদ্ধিটা হলো, মাথায় প্রতিদিন ষাড় গরুর কাঁচা গোবর লেপতে হবে! এতে মাথার ভেতরকার মগজ উর্বর হবে এবং সাদা চুল আস্তে আস্তে কালো হবে। কিন্তু কোথায় পাবো আমি এই ষাড় গরুর কাঁচা গোবর !! আসলে, কিছুতেই কিছু হলো না।

আমি যে বৃদ্ধ সেই বৃদ্ধই রইলাম। কিন্তু মাথার ভেতর মগজ বলে কিছু রইলো না। মগজ হয়ে গেলো পানি। সারাক্ষণ মাথায় শুধু থল থল শব্দ। এখন আর কি, আমাকে তো কবরে যেতে হবে।

তাই সব চেষ্টায় বিফল হয়ে আমি এখন কবরের জন্য অপেক্ষা করছি। ইদানীং শুনছি আমাদের সামরিক সাপোজিটরি সরকার আমাকে এই বৃদ্ধ বয়সে বিনোদন দিতে কমলাপুর রেলস্টেশন শহর থেকে তুলে ফেলে এবং তাদের যক্ষের ধন "ক্যান্টনমেন্ট সাম্রাজ্য" বহাল রেখে, এ শহরেই পাতাল রেলের ব্যবস্থা করছে। জীবদ্দশায় কিছু না হোক, মরণের কালে এই ভার্চুয়াল কবর ভ্রমণ আমাকে হয়তো কিছুটা বিনোদিত করবে। মিরপুর থেকে গুলশান দুই বা এক -এর পথে যারা প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।