আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারো প্রতি জুলুম নয়....

কষ্ট হলেও সত্য বলা বা স্বীকার করার সাহসই সবচেয়ে বড় সততা।

একবার এক যুদ্ধে অনেক শত্রু মুসলমানদের হাতে বন্দী হল। সেদিন আজ-কালকার মত আধুনিক কোন জেলখানা ছিল না। তাহলে বন্দীদের কি করা যায়? সিদ্ধান্ত হল বন্দীদের মুসলমানদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। অবশেষে তাই করা হল।

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রা)। তাঁর ভাগেও একজন দুশমনকে দেয়া হল। বন্দীটি ছিল খুবই খারাপ স্বভাবের লোক। সে হযরত উসমানের কোন কথাই শুনতে চাইত না। অথচ উসমান (রা) তাকে কোন কটু কথা বলতেন না।

তিনি বন্দীর সাথে ভাল ব্যবহার করতেন। হযরত উসমান (রা) যেভাবে চলতেন লোকটিকেও সেভাবে চালাবার চেষ্টা করতেন। এরপরও বন্দীটির স্বভাবে কোন পরিবর্তন আসেনি। এ রকম বেয়াদবী আর কতদিন সহ্য করা যায়? একদিন হযরত উসমান (রা) বন্দীর ব্যবহারে খুবই রুষ্ট হলেন। তিনি রাগের মাথায় বন্দীটির কান মলে দিলেন।

এতে লোকটি খুব ব্যথা পেল। ব্যথায় সে কেঁদেই ফেলল। হযরত উসমান (রা)-এর রাগ তখনও থামেনি। অনেকক্ষণ পর উসমান (রা)-এর রাগ পড়ল। তখনই তার মনে পড়ল বন্দীর কান মলার কথা।

তিনি বুঝতে পারলেন কাজটা ভাল হয়নি। এর জন্য আল্লাহর নিকট তাকে যে জবাবদিহি করতে হবে। একথা ভেবে উসমান (রা) বেশ অনুতপ্ত হলেন। অনুশোচনায় খলিফার মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল। উসমান (রা) ছুটে গেলেন বন্দীর নিকট।

তাকে বললেন, ‘ভাই, আমার অন্যায় হয়েছে, এ জন্য আমি খুব অনুতপ্ত। এস, তুমিও আমার কান মলে দাও। ’ হযরত উসমান (রা)-এর কথা শুনে বন্দী অবাক হল। উসমান (রা)-এর কান মলে দিতে হবে? তা কি করে হয়? না, তা কোনদিন সম্ভব নয়। হযরত উসমান (রা) কিন্তু নাছোড় বান্দা।

তিনি বললেন, ‘না, বন্দী, এটা হতে পারে না। তোমাকে অবশ্যই প্রতিশোধ নিতে হবে। তা না হলে আমাকে যে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। ’ উসমান (রা) যতবার লোকটিকে অনুরোধ করছিলেন, সে ততই অবাক হচ্ছিল। উসমানের (রা) ব্যবহার দেখে বন্দী বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে পড়ল।

বন্দীটি উসমানের কথায় কোনভাবেই রাজি হচ্ছিল না। এদিকে হযরত উসমানও দমবার পাত্র নন। তিনি বন্দীকে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করতে থাকলেন। বন্দীটি ভীষণ বিপদে পড়ে গেল। অথচ বদলা নেয়া ছাড়া আর কোন বিকল্পও ছিল না তার সামনে।

তাই সে আস্তে করে হযরত উসমানের কান ছুঁয়ে দিল। উসমান (রা) এতে সন্তুষ্ট হলেন না। তিনি বন্দীকে ধমক দিয়ে বললেন, আমি যেভাবে তোমাকে কান মলা দিয়েছিলাম ঠিক সেভাবেই তুমি জান মলে দাও, যাতে আমিও ব্যথা অনুভব করি। বন্দী লোকটির পক্ষে যে এ রকম করা অসম্ভব। তাই লজ্জায় তার মুখ লাল হয়ে গেল।

সে সিদ্ধান্ত নিল আর কখনও হযরত উসমান (রা)-এর অবাধ্য হবে না। উসমান (রা) যা বলবেন সে তাই করবে। বন্দীটি চিরদিনের জন্য ভাল মানুষে পরিণত হয়ে গেল। উসমান (রা)-এর মহানুভবতা বন্দীকে সোনার মানুষে পরিণত করল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.