আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাবনা গুলো জড়িয়ে যাচ্ছে...

ছিল রুমাল...হয়ে গেলো....

একটা গপ্পো লিখবো ভেবে রেখেছিলাম...মানে গল্পটা আমাক লিখতেই হবে 'এ্যাট এনি কষ্ট'...আসলে অনেক আগেই লিখতে শুরু করে দেওয়া উচিত ছিলো...কেন কি, লেখার জন্য তাগিদ দিচ্ছে অনেকেই...অনেকদিন আগে থেকেই... এই তো আমার নদীটা...ওহ্ স্যরি..নদী নয় ওটা নদ...যে কিনা, আমি যখন বালিকা ছিলাম তখন ভয়ানক খরস্রোতা ছিল এবং আমাকে প্রবল স্রোতের টানে একদিন প্রায় ড়ুবিয়ে মারতেই বসেছিলো...কাল রাত্তিরে খুব দুঃখ করে বললো, কারা নাকি একটা স্লুইস গেট নামক এক আজব যন্ত্র বানিয়ে তার চলাফেরা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছে...তার 'আপন বেগে পাগল পারা' হওয়ার আর কোনো উপায়ই নেই, এখন ওরা যদি বলে, তুই হাঁট...উঁহু, এতো দ্রুত নয়, ধীরে ধীরে, তাহলে সে তাই করতে বাধ্য...অথবা...যদি বলে, এ্যাই খবরদার নড়াচড়া একদম করবি না, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাক, তবে তাকে দাঁড়িয়েই থাকতে হয়...আমি ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বলি, কি করবি বল, সারা দেশেই জরুরী অবস্থা, চলাফেরা সবারই নিয়ন্ত্রিত.... তুই, আমি তো কোন ছাড়! অথবা নদীর পারের সেই তেঁতুল গাছটা... যাকে নাম দিয়েছিলাম 'তামারা-ই-হিন্দ'...আমার গ্রেট গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদারের আমল থেকে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো...যার নিবিড় ছায়ায় কত গ্রীষ্মের দুপুর... যার শেকড় বাকড়, ডালপালা গোধুলী আলোয় বিমূর্ত ভাষ্কর্যের মতো রহস্যময় দেখাতো...যাকে কিনা আমার গ্র্যান্ডফাদারের কনিষ্ঠ পুত্রের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিলো...ক'টা টাকার বিনিময়ে...আহ্ মাত্র ক'টা টাকার বিনিময়ে একটা মুর্তিমান ইতিহাসকে মানুষ কিভাবে বাজারে বিক্রি করে দেয়?কিভাবে আবার, যেভাবে হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নসম্পদ টুকরো টুকরো ভেঙ্গে ফেলতে আমাদের একটুও দ্বিধা হয়না, হাত কাঁপে না....আহা!আমার 'তামারা-ই-হিন্দ' তোকে আমি আর কি সান্ত্বনা দেব বল! আর আমাদের কাঠের দো'তলা দক্ষিণদুয়ারী ঘরের পেছনে যে পাতকুয়ো তার তো লিটারালি দুঃখ রাখবার কোন জায়গা নেই? এমন স্বচ্ছ, বিশুদ্ধ জলের আধার...সমস্ত গাঁ শুদ্ধ মানুষ, কত অচেনা পথিকের তৃষ্ণা মিটিয়ে এসেছে আজন্ম...কিরকম অকৃতজ্ঞ মানুষের দল...আজকাল ওকে নাকি প্রায় ডাষ্টবিনেই পরিণত করেছে...কি করবি বল পুরো দেশটাকেই তো এখন মোটামুটি একটা ডাষ্টবিন বানিয়ে ফেলেছি আমরা.... সে যাই হোক, যেটা বলছিলাম...প্রায় প্রতি রাত্তিরেই ওরা আমার কাছে অভিযোগ করে, আমি নাকি ওদের কথা ভুলতেই বসেছি। কথা অবশ্য খুব মিথ্যে বলেনা...বয়স তো কম হলো না...স্মৃতি-মৃতি গুলো ক্রমশঃই ঝাপসা হয়ে আসছে। তাই ভাবছিলাম, সব কিছু ভুলে যাওয়ার আগে একটা গল্প লিখেই ফেলি ওদের নিয়ে...কিন্তু লিখতে বসেই হলো মুশকিল...ভাবনাগুলো কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারছি না... বুঝতেই পারছি না ঠিক কোথা থেকে শুরু করবো....একদম শুরু থেকে শুরু করে সোজাসুজি শেষ করবো....নাকি শেষ দিয়ে শুরু করে পরে ফ্ল্যাশব্যাকে যাবো...অথবা এমন হতে পারে যে, মাঝখান থেকে শুরু করে খানিকটা ফ্ল্যাশব্যাক, তার পর শেষের দিকে যাওয়া...আরো ভয়ানক কান্ড হলো এই যে, গল্পের শুরু অথবা শেষ কোনটাই আমার জানা নেই...কি যে করি...সব কিছু জড়িয়ে মরিয়ে নিয়ে...এখন আমি পাগল ছাগল...ব্যোমভোলা হয়ে বসে রয়েছি.......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।