চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা
উইলিয়াম এএস ঔডারল্যাণ্ড (৬ ডিসেম্বর ১০১৭-১৮ মে ২০০১) ছিলেন একজন ডাচ অস্ট্রলিয়ান কমাণ্ডো অফিসার। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রতক্ষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব বীর প্রতীক প্রদান করে। তিনি এই খেতাবপ্রাপ্ত একমাত্র বিদেশী।
ঔডারল্যাণ্ড বাটা স্যু কোম্পানীর প্রডাকশন ম্যানেজার হয়ে ঢাকা আসেন ১৯৭০ সালে।
১৯৭১ সালের শুরুর দিকে তিনি কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক পদে টঙ্গীতে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাজনৈতিক বিভেদ ও সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান অভিজাত পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের দ্বারা নৃশংস আক্রমণের শিকার হয়, যা অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত। ঔডারল্যাণ্ড পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডে মানসিকভাবে প্রভাবিত হন এবং তাদের এই কর্মকাণ্ডের ছবি তুলে বহির্বিশ্বে পাঠিয়ে দেন। এদিকে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও গেরিলা দল মুক্তিবাহিনীর ভিতরে যুদ্ধ তাতক্ষণিকভাবে শুরু হয়ে যায়। প্রশিক্ষণ পর্যায়ে সামান্য অনুশীলিত গেরিলা অপারেশনগুলোর পরিপুর্ণ বিকাশ ঘটে আগস্টের পরে।
ঢাকার অর্থনৈতিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানা হয়। ঔডারল্যাণ্ড ঢাকার গেরিলা যুদ্ধের পরিচালনায় অংশ নেন। তিনি ২২তম বালুচ রেজিমেণ্টের অধিনায়ক সুলতান নেওয়াজের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং এর মাধ্যমে ঢাকা ক্যাণ্টনমেণ্টে অবাধ যাতায়ত শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি গভর্ণর জেনারেল টিক্কা খান এবং ইস্টার্ণ কমাণ্ডের এ্যাডভাইজার সিভিল এ্যাফেয়ার্স মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলির সাথে “বিশেষ বন্ধুত্ব” গড়ে তোলেন এবং পূর্বাঞ্চল কমাণ্ডের এ. এ. কে. নিয়াজীর সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে সেনানিবাসে অবাধে যাতায়তের নিরাপত্তা পাশ যোগাড় করে ফেলেন। এর মাধ্যমে ঔডারল্যাণ্ড মুক্তি বাহিনীর জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন এবং প্রাপ্ত তথ্য সেক্টর-২ এর এটিএম হায়দার ও জিয়াউর রহমানকে পাঠিয়ে দেন।
বাটা কোম্পানির টঙ্গীর নিজস্ব কার্যালয়ের ভিতরে তিনি গেরিলা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেন এবং সংগঠিত করেন। তিনি ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশকিছু গেরিলা অপারেশনের নেতৃত্ব দেন। তিনি যোদ্ধাদের খাদ্য ও ঔষধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন এবং প্রায়ই তাদের আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করেন।
ঔডারল্যাণ্ড বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ সামরিক খেতাব বীর প্রতিক অর্জন করেন।
ঔডারল্যাণ্ড বাংলাদেশের বাটা স্যু কোম্পানি থেকে ১৯৭৮ সালে অবসর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফেরত যান।
২০০১ সালের ১৮ মে তিনি নর্দার্ন অস্ট্রেলিয়ার পার্থের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
সুত্র: উইকি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।