আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাতের নির্বাচন কৌশল ও তাদের এমপিদের দুর্নীতি - ০৫

সুশীলের ভেকধারী এক মহা ভন্ড!

আজকের পোস্ট জামাতের সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডল, শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুসের ছেলে ও মাওলানা আব্দুল আজিজকে নিয়ে। মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডল সাতক্ষীরা ২ থেকে নির্বাচিত, শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস খুলনা ৬ থেকে নির্বাচিত আর মাওলানা আব্দুল আজিজ গাইবান্ধা ১ থেকে নির্বাচিত হয়েছিল ২০০১ সালের নির্বাচনে। তাদের কিছু কীর্তি তুলে ধরার আগে ব্রিটিশ পলিটিকাল এনালিস্ট ক্রিস ব্যাকবার্নের বাংলাদেশে জামাতের উপদ্রপের বিষয়ে একটি নিবন্ধের কিছু অংশ তুলে দিলাম। ১. জামাতের সূচনা ---------------- ১৯৪১ সালে মওলানা আবুল আলা মওদুদীর হাতে পাকিস্তানের লাহোরে এই দলটির জন্ম। মওদুদীর মনে হলো, মুসলিম দেশগুলো, তার বিশ্বাস মতো, জাতীয়তাবাদ, নারী স্বাধীনতা ও সমাজতন্ত্রের মতো বিকৃত আদর্শগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

মওদুদী বিশ্বাস করতেন, একটি পুরোপুরি ইসলামি রাষ্ট্র কায়েমের তার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়নে ইসলামের শিক্ষাকে অংশত ব্যবহার করতে হবে। সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং প্রগতির কোনো জায়গা থাকবে না, বলবৎ থাকবে কঠোর শরিয়া আইন। মওদুদী মধ্যপ্রাচ্য-কেন্দ্রিক ইখওয়ান আল মুসলিমিন (মুসলিম ব্রাদারহুড) দ্বারা খুবই প্রভাবিত ছিলেন। মৌলবাদী ইসলামী নেতা সায়েদ কুতবের বন্ধু এবং তার রচনার পাঠক ছিলেন মওদুদী। কুতব কথা বলতেন একটা বিপ্লবী ইসলামি শক্তির পক্ষে, যারা মৌলবাদী ইসলামি রাষ্ট্র কায়েমের পরিকল্পনার বিরুদ্ধবাদীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ করবে।

মওদুদীও এতে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু তিনি এটিকে একমাত্র পন্থা মনে করতেন না। তিনি মনে করতেন, ইসলামী আন্দোলনের জন্য একটা রাজনৈতিক দল দরকার, যাদের কিছুটা অন্তত বৈধতা থাকে এবং তারা যেন প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই তাদের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে পারে। ‘জিহাদ ইন ইসলাম’ বইয়ে লিখেছেন, স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে আমেরিকায় অবস্থানরত কমিউনিস্টদের মতো অবস্থান নিয়ে থেকে তারা যদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাবোটাজ বা সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য জোর তৎপরতা না চালায়, তাহলে হয়তো তারা সরকারের নজরদারিতে খুব একটা পড়বে না। তিনি বিশ্বাস করতেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করতে থাকলে তারা প্রচলিত ব্যবস্থাকে পরিবর্তনের আন্দোলন সুচিত করার জন্যও সুযোগ পেয়ে যাবেন।

এবং যখনই সময় উপযুক্ত বিবেচিত হবে এবং জিহাদের প্রতি পর্যাপ্ত সমর্থনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে, তখনই সশস্ত্র জিহাদে নামা হবে। (সুত্রঃ ভোরের কাগজ, নভেম্বর ২২, ২০০৭) ২. তিন এমপির কিছু কীর্তি ------------------------- ২ ক. মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডলের কিছু আমলনামা দলীয় সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা হয়েছে। সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রানু বিলকিস বানুর আদালতে এই বছর এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী সদর উপজেলার সাতানী শহীদ স্মৃতি কলেজ গভর্নিং কমিটির অবিভাবক সদস্য আব্দুল মালেক মোল্লা। আদালত অভিযোগ তদন্তের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীর অভিযোগ, মাওলানা আব্দুল খালেক কলেজের সভাপতি থাকাকালে ২০০৬ সালের ১৮ এপ্রিল আগরদাড়ি কামিল মাদ্রাসার অফিসকক্ষে এক সভার আয়োজন করেন। উক্ত সভায় অভিভাবক সদস্য হিসেবে তিনি উপস্থিত না থাকলেও তার স্বাক্ষর জাল করে বেশ কিছু অবৈধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সময় মাওলানা আব্দুল খালেক এমপি থাকায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাননি। মন্ডল শুধু নিজের দলের সাফাই গায় তা না, সে আহলে হাদীসের পক্ষ নিয়েও কথা বলে বিতর্কের ঝড় তোলে। সে আহলে হাদিসের নেতা রাজশাহী ইউনিভার্সিটির শিক্ষক গালিবের সাফাই গেয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠায় যেইখানে সে উল্লেখ করে গালিবের মত আহলে হাদিসের নেতার সাথে কোন মৌলবাদী দলের সম্পর্ক নাই অর্থাৎ আহলে হাদিস ধোয়া তুলসিপাতা!! গালিব নাকি চমরপন্থায় বিশ্বাসী না!! ২ খ. শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এর ছেলের কীর্তি আরেক সৎ (!) জামাতি শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস খুলনা ৬ থেকে নির্বাচিত হয়েছিল।

তার ছেলের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের স্থানীয় এক নেতা মামলা করেছে তার মাকে নির্বিচারে পিটানোর জন্য। এই হতভাগার মাকে গাছের সাথে বেধে পিটিয়ে মাথা কামিয়ে মুখে কালো রঙ লাগিয়ে দেয় এই সৎ লোকের ছেলে। সৎ লোকেরা নমুনা দেখাচ্ছে তাদের ছেলেদের তারা কিভাবে মানুষ করতেছে!! ২ গ. মাওলানা আব্দুল আজিজ এই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারিতে মাওলানা আব্দুল আজিজের মাদ্রাসা থেকে ৫ বান্ডিল ত্রানের ঠেউটিন উদ্ধার হয়েছে। সৎ (!) লোকেরা ত্রানের টিন নিয়ে মাদ্রাসায় দিলে কোন পাপ হয় না!! জোট সরকারের সময়ে সংসদ ভবন এলাকা থেকে দুই শিবির কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে জিহাদি বই ও সিডিসহ। তখন এই সাবেক এমপি তাদের মুক্তির জন্য লবিং শুরু করে ও পুলিশের উপর প্রেশার দেয় এই খবর সাংবাদিকদের না জানানোর জন্য।

সে প্রথমে সার্জেন্ট অ্যাট আর্মসকে অনুরোধ করে ও তারপর স্পিকার জমিরুদ্দিন সরকারকে জানায়। কিন্তু স্পিকার আমলে না নেয়ায় তাদেরকে থানায় চালান দেয়া হয়। যদিও তাদের বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট মামলা হয় নাই, ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়। এভাবে জিহাদি চর্চা নিরাপদে চালিয়ে যাওয়ার সব রাস্তা খোলা রাখা হয়। এই হলো সৎ (!) লোকের কিছু নমুনা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.