ইদানিং খুব ঘাস খাই আর নির্বোধ গরু হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখি,বঙদেশে গরুদের জন্য সব লক্ষীই হাত পেতে আছে । রাষ্ট্র ও সমাজযন্ত্র যখন সংকরিত গরুর গোয়াল ।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ছিদ্রান্বেষী নই,মানুষের মাঝে শুভবুদ্ধি অশুভ স্পর্শ ,সবই থাকে । মানুষকে আমি মহামানব ভাবি না । কারও ভালো কাজে অন্ধ হয়ে তাকে দেবতার আসনে বসাই না ।
নুরে আলম ভাই এর প্রশ্নের জবাবের জন্যে এই পোস্ট ।
তিনি আয়াতুল্লাহ খোমেনী কেনো ধোয়া তুলসী পাতা নন তা জানতে চেয়েছিলেন । একারনে এই পোস্টে খোমেনীর অন্ধকার দিক গুলিই থাকবে শুধু ।
কিন্তু বলে রাখি,ইরানে অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার অবদান অস্বীকার করা যাবে না । তাকে টাইম ম্যাগাজিন ১৯৭৯ সালে ম্যান অফ দ্যা ইয়ার ঘোষনা করেছিল।
এছাড়া বিশশতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী মানুষের মাঝেও উনি একজন(প্রভাব পজিটিভ না নেগেটিভ সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ)।
শুরু করছি কবি এবং দার্শনিক খোমেনী কে দিয়ে । ষাট এর দশকে তিনি যখন শিক্ষকতায় নিয়জিত ছিলেন । সে সময়ে অসংখ্য ইসলামী দর্শনের উপর গবেষনা তিনি করেছেন । এবং তার যুক্তিসমূহে প্লেটো এবং এরিস্টটলের প্রভাব দেখা যায় ।
যদিও তিনি ডেকার্তের দর্শন গ্রহন করেন নি ।
ইসলামিক এথিক্স নিয়ে তার করা একটি বিতর্কিত উদাহরন দেয়া হচ্ছে ,
"যদি ভুমিকম্পের সময় কেউ তার মা,বোন,চাচীর উপর পরে যায় এবং তাতে যদি যৌনতা ঘটে তাহলে সেই যৌনতা হতে উতপন্ন সন্তান হালাল হবে
"
ইসলামিক দর্শন নিয়ে কাজ করা ছাড়াও তিনি কবি ছিলেন । তিনি ফার্সী ভাষাভাষী দের প্রতি অসংখ্য লেকচার দিয়েছেন । তবে সে সকল লেকচারে তার মূল টেক্সট থেকে বিচ্যুতি দেখা যায় এজন্যে তার লেখা বই আসলেই তার লেখা কি না এই নিয়ে বিতর্ক আছে ।
শাহ কে ইয়াযিদ এর সাথে তুলনা করে প্রথম বারুদে আগুন জ্বালান খোমেনী যা পরবর্তিতে তার গ্রেপ্তার এর কারন হয় ।
এবং দেশে রায়ট শুরু হয়ে যায় । তার পরে এই আন্দোলনের মাত্রা তীব্র হয়,খোমেনী কে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হয় ।
তারপর ইসলামী রেভ্যুলিউশন এ খোমেনী দেশে ফিরে ক্ষমতা দখল করেন । তিনি তার বিরোধীদের বিপক্ষে জিহাদ ঘোষনা করেন ।
তার বিরোধীদের খুবই শক্ত হাতে দমন করেন ।
যেমন মিডিয়ার টুটি চেপে ধরা । বিরোধীদল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ,এবং মুসলিম পিপলস রিপাবলিকান পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে তাদের অনেক কেই জেলে পোরেন,যা স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয় দেয় ।
৬৩ জন মার্কিন জীম্মী নাটক তার ক্যারিয়ারে অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা । নির্দোষ মানুষদের শুধুমাত্র জাতীয়তার কারনে জিম্মী করাকে মানবিক দৃষ্টিকোন হতে সমর্থন করা যায় না ।
ইরান ইরাক যুদ্ধকালীন সময়ে খোমেনী অনেকবেশী কঠোর হয়ে পড়েন ।
তার বিরোধীদের গনহারে ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠানোই তা প্রমান করে । (মনে রাখতে হবে তার বিরোধীগন ইরান বিরোধী ছিলো না,কেবলমাত্র ভিন্ন আইডলজিতে বিশ্বাসী ছিলো)
১৯৮৯ সালে খোমেনী "সালমান রুশদী" কে হত্যা ধর্মীয় দায়িত্ব ঘোষনা করেন । রুশদীর কিছু না হলেও রুশদীর বই "স্যাটানিক
ভার্সেস" এর জাপানী অনুবাদকারী আততায়ী দ্বারা নিহত হন । এই ঘোষনার মধ্য দিয়ে তার অন্ধ সংকীর্নতা আবারও প্রকাশ পায় ।
১৯৮৮ সালের কারবন্দীদের উপর সংঘঠিত ম্যাসাকার মানবতার ইতিহাসে অত্যন্ত কালো একটি অধ্যায় ।
ক্ষমতার লোভ কিভাবে মানুষকে পশু বানায় তার উদাহরন ছিলো এই হত্যাকান্ড । People's Mujahedin of Iran operation Forough-e এর সমর্থক দের অন্যায় ছিলো খোমেনী সাপোর্টার না হওয়া।
আর ননমুসলিমদের ইরানে সমানাধিকার দেয়া হয় নি,কারন গর্ভমেন্ট এর উচু পদগুলো মুসলিমদের জন্যে সংরক্ষিত ।
সংকীর্নতার মূল্যবিচারে আমাদের আরও নৈর্বত্তিক হতে হবে । মানবতার স্বরুপ উদঘাটনে ব্যর্থতার কারনেই আমরা এই অবস্থানে এসেছি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।