জেগেও যে ঘুমের ভান করে তাকে জাগানো যায় না।
জীবন একটাই, আর সেটাকে পুরোপুরি উপভোগ করে আমাদের চোখের আড়ালে চলে গেল সঞ্জীব চৌধুরী। আমার বন্ধু। আমাদের কাছে এই মৃত্যু ভাবনায় ছিল না, কামনার তো নয়ই। মাত্র ৪৫ বছরের জীবন! কেউ এই সময়টাকেই যথেষ্ট মনে করেন, আবার অন্যরা হয়তো না।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে, পরে কর্মেও তাকে পেয়েছিলাম- সবসময় একজন প্রাণবন্ত মানুষ হিসাবে। হাসিখুশি, আনন্দ-উচ্ছল, সৃজনশীল এক মানুষ। স্বল্প সময়েই নিজের প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছে সঞ্জীব। আজ টিএসসিতে তার চিরতরে ঘুমিয়ে পরা মুখ দেখার আগ্রহ ছিল না আমার। সেখানে গেলেও তাই ওকে শেষ দেখা হয়নি।
আমি চাই আমার স্মৃতিতে সঞ্জীব বেঁচে থাকুক তার প্রাণবন্ত মুখটি নিয়েই।
কদিন আগে ফোনে শেষ কথা হয়েছিল। নতুন একটা চাকরির জন্য আক্ষেপ ছিল তার। বলিনি ওর জীবনটা দাসত্বের নয়, সৃজনশীলতার। যদি বলি ও যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই জীবনকে উপভোগ করে গেছে, তাহলে কি ভুল বলা হবে? সাংবাদিকতা করেছিল সঞ্জীব, কিন্তু ওটা তার জায়গা ছিল না।
সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে দ্রুত জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠেছিল বন্ধু আমার। সাফল্যের এরকম এক উঁচু অবস্থানেই আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেল সে।
কেউ কেউ বলবেন, চিরতরে চলে যাওয়ার জন্য ৪৫ বছরটা কোনো সময় নয়। ঠিক। তার স্ত্রী, কন্যা, তার পিছুটান! এরকম যাওয়াটা তাই অনেকের কাছে দায়িত্বহীন ঠেকবে।
এটা স্ত্রী-কন্যা-পরিবার-সমাজের অবস্থান। তাদের কাছে সঞ্জীবকে তাই দায়িত্বহীনই মনে হবে।
কিন্তু সঞ্জীবের নিজের কাছে? চরম একরোখা, অনিয়ন্ত্রিত, বাউন্ডুলে জীবন-যাপনে অভ্যস্ত-সন্তুষ্ট বন্ধুকে এ প্রশ্ন কখনো করা হয়নি। কিন্তু জীবন-যাপন নিয়ে কোনো অভিযোগওতো তার ছিল না। বলা যায় জীবনটাকে প্রতি বিন্দুতে উপভোগ করেছে সে।
সঞ্জীবের জন্য তাই আসুন আমাদের হুইস্কির গ্লাসটাকে উর্ধ্বে তুলে ধরে বলি, "বন্ধু বিদায় বলো না, বলো জীবন ভালবাসি"।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।