নকল সফটওয়্যার ব্যবহার বা কপিরাইট প্রসঙ্গ অধুনা বেশ আলোচিত বিষয়। আসছে নভেম্বরে প্রথমবারের মতো বিজনেস সফটওয়্যার এলায়েন্স (বিএসএ) নামক একটি আন্তর্জাতিক পাইরেসিবিরোধী সংস্থা এ বিষয়ে ঢাকায় একটি সেমিনারেরও আয়োজন করছে। সংস্থাটি সারা দুনিয়ায় সফটওয়্যার পাইরেসির বিরুদ্ধে রিতিমতো যুদ্ধ করে আসছে। পাইরেসির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'ওয়াচ লিস্ট' এ থাকার প্রেক্ষিতে এই সেমিনার অবশ্যই অনেক গুরুত্ব বহন করে। ধারণা করা যেতে পারে, পাইরেসির 'স্বর্গ' থেকে বাংলাদেশের পতনের দিন ঘনিয়ে আসছে।
কিন্তু যারা সফটওয়্যার শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছে কেবলমাত্র কপিরাইটই কি যথেষ্ট? কপিরাইট ভায়োলেশনের এই ভয়ঙ্কর সময়ে প্যাটেন্টের সঙ্গে সফটওয়্যারের সম্পর্ক নিয়ে লিখেছেন মোস্তাফা জব্বার।
সফটওয়্যারের জন্য কপিরাইটই যথেষ্ট - আমাদের ধারণা এমনটাই। কিন্তু সারা দুনিয়ার পরিস্থিতি এবং বাস্তব অবস্থা অবলোকন করলে এটি নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, কপিরাইট হচ্ছে কোন সফটওয়্যারের কপি, বিক্রি, বিতরণ, ব্যবহার এককথায় পাইরেসির বিরুদ্ধে একটি ব্যবস্থা মাত্র। কিন্তু সফটওয়্যারের প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা অনেকটাই নির্ভর করে প্যাটেন্টের ওপর। প্রযুক্তিবিশ্বে এখন সফটওয়্যার উন্নয়নকারীরা তাই কপিরাইটের পাশাপাশি প্যাটেন্টের প্রতিও নজর দিচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রথম সফটওয়্যার প্যাটেন্ট -
সুদীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর সংগ্রামের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে 'বাংলা স্ক্রিপ্ট ইন্টারফেস সিস্টেম' নামক একটি প্যাটেন্টের প্রত্যয়ণপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্যাটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস-এর নিবন্ধক জনাব মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই এই ব্যতিক্রমী প্যাটেন্টটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ১৯৯২ সালে প্রথম এই প্যাটেন্টটির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে প্যাটেন্ট অধিদপ্তর এই আবেদনটি গ্রহণ করেনি। এর অন্যতম কারণ ছিল, এটি সফটওয়্যার হিসেবে কিভাবে প্যাটেন্ট অনুমোদন পাবে সেটি তখন নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
এমনকি এই প্যাটেন্টটি পরীক্ষা করার মতো জ্ঞানী কোন কর্মকর্তাও তখন ছিল না।
কিন্তু ২০০৪ সালের আবেদনটি বিবেচনা করা হয়। সুদীর্ঘ সময় পরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১০ মে ২০০৭ তারিখে এই প্যাটেন্টটির গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ১২০ দিনের মধ্যে এর ব্যাপারে কোন আপত্তি না ওঠায় এর প্রত্যয়ণপত্র প্রদান করা হয়। আপাতদৃষ্টে এটি একটি সাধারণ ও নিয়মিত ঘটনা মনে হলেও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য এটি একটি গুরুত্ব্বপূর্ণ ঘটনা।
এই প্যাটেন্টটির মতো প্রত্যয়ণপত্রে স্বাক্ষর নিবন্ধক প্রায় প্রতিদিনই বহুবার করে থাকেন। বলা যেতে পারে, এমন শত শত প্রত্যয়ণপত্র তার দপ্তর থেকে নিয়মিত ইস্যু করা হয়ে থাকে। কিন' এই প্রত্যয়ণপত্রটির একটি বাড়তি বিশেষত্ব রয়েছে। এই বিশেষত্বটি হলো: এটিই বাংলাদেশের প্রথম প্যাটেন্ট যা কার্যত একটি সফটওয়্যার। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এটি একটি মাইলফলক ঘটনা।
আগামীতে বাংলা স্ক্রিপ্ট ইন্টারফেস সিস্টেমের দৃষ্টান্তটি আরো ব্যাপকভাবে আমাদের এই শিল্পে বারবার উল্লেখিত হবে - এটি নিশ্চিত করে বলা যায়।
কপিরাইটই একমাত্র মেধাস্বত্ত্ব নয়, প্যাটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ -
বাংলাদেশে যারা সৃজনশীল কাজ করেন তাদের কাছে কপিরাইট শব্দটি ব্যাপকভাবে পরিচিত। এর সঙ্গে সিনেমা, সঙ্গীত, চিত্রকলা, ভাষ্কর্য এবং সর্বশেষ সফটওয়্যার জড়িত। চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, চিত্রকলার ব্যাপারে এটি সত্য যে, কপিরাইটই এর একমাত্র মেধাস্বত্ত্ব। কার্যত কপিরাইটের বাইরে এসব সৃজনশীল কাজের আর কোন সুরক্ষার ব্যবস্থাও নেই।
কপিরাইট কার্যত কোন মেধাসম্পদের কপি বা নকল করার বিষয়ে কপিরাইট স্বত্ত্ববানকে রক্ষা করে।
আমাদের সাধারণ ধারণা যে, কপিরাইটই হলো সফটওয়্যারেরও প্রধান মেধাস্বত্ত্ব সুরক্ষা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কপিরাইট সফটওয়্যারের কপি বিতরণ করা বন্ধ করে। কিন্তু সফটওয়্যারের সঙ্গে যে নির্মাণ কৌশল ও কর্মপ্রক্রিয়া জড়িত সেটি কপিরাইটে রক্ষা করা হয়না। যেমন একটি ইঞ্জিনের লোহালক্কড় মেধাস্বত্ত্ব নয় বরং এর নির্মাণ ও কাজ করার প্রক্রিয়াটিই মেধাস্বত্ত্ব।
এর মাঝে বিদ্যমান মেটালটি একটি সাধারণ বিষয় মাত্র। তেমনি, একটি ঔষধের ফর্মুলাই হচ্ছে তার বড় মেধাস্বত্ত্ব। এর মাঝে যে উপাদানগুলো আছে তার কি পরিমাণ কিভাবে মিশ্রণ করার ফলে ঔষধটি কাজ করবে এই ফর্মুলাটি হলো এর মেধাস্বত্ত্ব। কপিরাইট এই প্রক্রিয়াটির মেধাস্বত্ত্বকে সংরক্ষণ করেনা। তবুও আমরা মেধাস্বত্ত্ব বলতে কপিরাইটকেই বেশী সময় বুঝিয়ে থাকি।
সম্ভবত সেজন্যই আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই কপিরাইটের বিধান সংরক্ষণ করার জন্য আন্দোলন করে এসেছি এবং ২০০০ সালের কপিরাইট আইনে সেটি অন্তর্ভুক্তও হয়।
বস্তুত বার্ণ কনভেনশন অনুযায়ী সফটওয়্যার সাহিত্যকর্ম হিসেবে কপিরাইটের আওতায় আসে। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের কপিরাইট আইনটির আরো সংশোধন হয় এবং আইনগতভাবে সফটওয়্যারের কপিরাইট এখন সুরক্ষিত। যদিও এখনও আইনটির কোন প্রয়োগ নেই এবং পাইরেসি এখন বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে তথাপি আইনের বিধান থাকাটাই একটি বড় সাফল্য। কিন্তু সফটওয়্যার উন্নয়নকারীদের মাঝে এখনো এই ধারণা কাজ করেনা যে, কপিরাইটের বাইরেও আমাদের মেধাস্বত্ত্ব সুরক্ষা করা দরকার।
এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলা দরকার, মেধাস্বত্ত্ব নির্ভর করে তিনটি আইনের ওপর। কপিরাইট আইন হলো এর একটি। কপিরাইট আইনের বাইরে প্যাটেন্ট ও ডিজাইন আইন এবং ট্রেডমার্ক আইন রয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে প্যাটেন্ট ও ডিজাইন আইনটি ব্রিটিশদের প্রণীত। এটি ১৯১১ সালের।
এই উপমহাদেশের জন্য এই আইনটি ব্রিটিশরা প্রণয়ন করেছিল। ভারতে সেই আইনটির সংশোধন করা হয়েছে ১৯৭০ সালে। পাকিস্তানে ২০০০ ও ২০০২ সালে প্যাটেন্ট আইন প্রবর্তন করা হয়। উভয় দেশেই ট্রেড মার্ক আইনও বদলানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্যাটেন্ট আইনটির কোন সংশোধন করা হয়নি।
ট্রেড মার্ক আইনটিও ১৯৪০ সালের। তবে আইনটি পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু লোকের ক্ষুদ্র সুবিধার ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে প্যাটেন্ট আইনটি পরিবর্তনের কোন আয়োজনই নেই। ফলে সফটওয়্যার শিল্পের মতো আরো কিছু শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে।
প্যাটেন্ট-এর সূচনা -
ধারণা করা হয়, প্রাচীন গ্রীক সমাজে কোন কোন নগরে প্যাটেন্ট প্রথা চালু ছিলো।
সেটি শুরু হয়েছিলো খাবার দিয়ে। চমৎকার একটি রান্নার প্রণালীকে উদ্ভাবকের নিজস্ব আবিষ্কার হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (যেমন এক বছর) অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেনা এমন বিধান করা হতো। প্রাচীন রোমেও এমন ব্যবস্থা চালু ছিল।
১৪৭৪ সালে ইটালিতে প্রথম আধুনিক প্যাটেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়। ভেনিস প্রজাতন্ত্র একটি ডিক্রি জারি করে যে, নতুন আবিষ্কারের তথ্য প্রজাতন্ত্রকে জানাতে হবে, যাতে আবিষ্কারক তার আবিষ্কারের প্যাটেন্ট রাইট পেতে পারেন।
ইংল্যান্ডে ১৬২৩ সালে রাজা জেমস-১ এর অধীনে নতুন আবিষ্কারের প্রকল্পের জন্য প্যাটেন্ট অধিকার প্রদানের বিধান ঘোষণা করা হয়। ঐ দেশের রানী এ্যান-এর আমলে (১৭০২-১৪) আইনজ্ঞরা এই প্যাটেন্ট পাবার জন্য একটি লিখিত বিবরণ প্রদানের ব্যবস্থা করেন। সেই ব্যবস্থাটি এখনো প্যাটেন্ট ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
১৭৭৮-৭৯ সময়কালে আমেরিকার অনেক রাজ্য নিজস্ব প্যাটেন্ট ব্যবস্থা চালু করে। ফলে একটি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যা পরবর্তীতে ফেডারেল সরকার একীভূত করে।
এই উদ্দেশ্যেই আমেরিকান কংগ্রেস ১৭৯০ সালে প্যাটেন্ট আইন পাস করে।
১৭৯০ সালের ৩১ জুলাই পটাশের প্যাটেন্ট প্রদানের মধ্য দিয়ে আমেরিকায় প্যাটেন্টের যাত্রা শুরু হয়। তবে প্রথম দিকে প্যাটেন্ট ছিলো যন্ত্র ও রসায়ন ইত্যাদির প্রক্রিয়াভিত্তিক। যেহেতু ইউরোপে শিল্পবিপ্লব হয় সেহেতু ইউরোপেই প্রথম এই চাপটি বেশী অনুভূত হয় যে, আবিষ্কারকে রক্ষা করতে হবে। পরে বিষয়টি আমেরিকাতেও প্রভাব ফেলে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, এই প্যাটেন্ট ব্যবস্থার ফলেই পৃথিবীতে সকল আবিষ্কারক নতুন নতুন আবিষ্কারে উৎসাহিত হয়েছেন। সমাজে যেভাবে বস্তুগত পণ্যের মালিকানা দাবী করা যায়, প্যাটেন্ট ব্যবস্থা মেধাজাত সম্পদের ক্ষেত্রে সেই মালিকানা প্রদান করে বলেই এর গুরুত্ব অনেক। এক সময় ইউরোপে জমিরও প্যাটেন্ট দেয়া হতো। সেটি ছিলো জমির ওপর মালিকানা প্রদানের ব্যবস্থা। পরে অবশ্য সেই ব্যবস্থা বদলে যায়।
সফটওয়্যার ও প্যাটেন্ট -
১৯৬২ সালের ২১ মে ব্রিটেনে প্রথম সফটওয়্যার প্যাটেন্ট পাবার জন্য আবেদন করা হয়। লিনিয়ার প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের জন্য কম্পিউটার কৃত স্বয়ংক্রিয় সমাধান ( A Computer Arranged for the Automatic Solution of Linear Programming Problems) নামক এই প্যাটেন্টটি ১৭ আগস্ট ১৯৬৬ অনুমোদিত হয়। এরপর বিগত চার দশকে সারা দুনিয়ায় সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট প্রদানের ব্যবস্থা হয়েছে এবং নানা বিতর্ক থাকার পরও সফটওয়্যারের প্যাটেন্টকেই সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ বলে মনে করা হয়।
ব্রিটেনে সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট চালু হবার পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার প্যাটেন্ট প্রদান করা হতোনা। মার্কিন প্যাটেন্ট অফিস বৈজ্ঞানিক সত্য বা গণিতের বিষয়কে প্যাটেন্ট দিত না।
তাদের মতে এটি সার্বজনীন। কোনভাবেই এসব ব্যক্তিগত সম্পদ হতে পারেনা। কিন' আমেরিকার সুপ্রিমকোর্টে একটি মামলা দায়ের ও তার রায়ের পর অবস্থা পাল্টে যায়।
১৯৮১ সালে ডায়ম বনাম ডারে মামলায় আমেরিকান সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন যে, সফটওয়্যার প্যাটেন্ট করা যেতে পারে। আদালতের বক্তব্য ছিল এরকম, "যদিও এলগরিদম প্যাটেন্টযোগ্য নয়, তথাপি যেসব যন্ত্র এই এলগরিদম ব্যবহার করে তাকে অবশ্যই প্যাটেন্ট করা যায়" (while algorithms themselves could not be patented, devices that utilized them could)।
এই রায়ের পর আমেরিকায় প্যাটেন্টের জন্য আলাদা একটি আদালতও প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯০ সালেই প্রথম আমেরিকায় কম্পিউটার সংক্রান্ত প্যাটেন্টের গাইড লাইন প্রকাশ করা হয়।
ইউরোপে সফটওয়্যারের প্যাটেন্টের জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৯৭০ সালে ইউরোপিয় প্যাটেন্ট কনভেনশন হবার পর ইউরোপে অসংখ্য সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট প্রদান করা হয়। ইউরোপিয় প্যাটেন্ট কনভেনশন-এর ৫২(২) অনুযায়ী কম্পিউটারের প্রোগ্রাম প্যাটেন্ট করা যায়না।
কিন্তু ৫২(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কম্পিউটার প্রোগ্রামও প্যাটেন্ট করা যায় যদি সেটি কোন কারিগরি সমাধান প্রদান করে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সফটওয়্যার প্যাটেন্ট করা যায়। জাপানে সফটওয়্যার সরাসরি প্যাটেন্টযোগ্য। পাকিস্তান, ভারতে এবং অস্ট্রেলিয়ায়ও সফটওয়্যার প্যাটেন্টযোগ্য।
প্যাটেন্ট কি?
প্যাটেন্ট সম্পর্কে সাধারণ ধারণা হচ্ছে : প্যাটেন্ট হলো কোন আবিষ্কারের প্রক্রিয়াকে সরাসরি সময়মতো প্রকাশ করা, আবিষ্কারের জন্য নিয়োজিত বিনিয়োগ সুরক্ষা করা ও আবিষ্কারকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার পথ করে দেয়া।
এই ব্যবস্থায় একটি প্রক্রিয়ার পূর্ণ ও বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করার পর আবিষ্কারককে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য তার আবিষ্কার এককভাবে ব্যবহার করার অধিকার প্রদান করা হয়।
সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট নিয়ে এখনো দুনিয়াজুড়ে বেশ কিছু বিতর্ক আছে, যেমনটি আছে কপিরাইট এবং কপি লেফট নিয়ে তেমনটি প্যাটেন্ট নিয়েও বিতর্ক ও মতপার্থক্য প্রচুর। কম্পাটিবিলিটি বা প্ল্যাটফরম ডিপেন্ডেন্সি এবং সভ্যতার চাকা সামনে যাওয়া নিয়ে প্যাটেন্ট বিতর্ক হয়ে থাকে। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা হয়, পিএনজি ফরম্যাট আবিষ্কৃত হয় জিফ ফরমাটের প্যাটেন্ট ভায়োলেট না করার জন্য। অনেক সফটওয়্যার কোম্পানি যেমন 'ওরাকল' বা 'রেড হ্যাট' সফটওয়্যার প্যাটেন্টের বিরোধিতা করে থাকে।
কিন্তু এই দুটি কোম্পানিই আবার নিজেদের পণ্যের জন্য প্যাটেন্ট গ্রহণ করে থাকে। এমনকি কেউ কেউ মনে করেন যে, কপিরাইট এবং প্যাটেন্ট কার্যত একই কাজ করে। বার্ণ কনভেনশন অনুযায়ী যেহেতু সফটওয়্যারের কপিরাইট রয়েছে সেহেতু এর আবার প্যাটেন্টের প্রয়োজন আছে কিনা?
উইকিপিডিয়া অত্যন্ত পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, কপিরাইটের উদ্দেশ্যের বাইরে প্যাটেন্টের সীমানা। কপিরাইট যেখানে কেবলমাত্র নকল করা প্রতিরোধ করে সেখানে প্যাটেন্ট একটি প্রক্রিয়াকে সুরক্ষা করে। সফটওয়্যার উন্নয়নকারীদের জন্য এই প্রক্রিয়াটিকে সুরক্ষা করা খুবই জরুরী।
ওপেন সোর্স ও প্যাটেন্ট -
আমরা সচরাচর ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে কপিরাইট নেই বলে মনে করি। কিন্তু মজার ঘটনাটি ঘটে এর প্যাটেন্ট নিয়ে। ওপেন সোর্স প্রকল্পে কপিরাইটকে তেমন গুরুত্ব না দিয়েও প্যাটেন্টকে কিন্তু বর্জন করা হয়না।
এর অর্থ হচ্ছে কপি করা বা নকল করার ক্ষেত্রে কারো কারো উদারতা থাকলেও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে ওপেন সোর্সের উদ্যোক্তাদেরও আকর্ষণ কম নেই।
প্রদত্ত বিবরণ থেকে এটা পরিষ্কার যে সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
বাণিজ্যিকভাবে সফটওয়্যার তৈরি হোক আর ওপেন সোর্সই হোক প্যাটেন্ট কার্যত আবিষ্কারকের স্বার্থকে ব্যাপকভাবে রক্ষা করে। এ প্রসঙ্গে ট্রিপস চুক্তির অধীনে সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট, ইউরোপিয় ইউনিয়নের কনভেনশনের আওতায় সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামস এন্ড দি প্যাটেন্ট কো-অপারেশন ট্রিটি নামক আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া যায়। এছাড়াও দেশিয় প্যাটেন্ট আইনগুলো এ কারণে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
প্যাটেন্টের প্রয়োগ -
বাংলাদেশের কপিরাইট ও অন্যান্য মেধাস্বত্ত্বের বিদ্যমান অবস্থা দেখে এটি মনে হতে পারে যে, প্যাটেন্ট আইন সম্ভবত প্রয়োগ করা যায়না। কিন্তু আমরা যদি আমেরিকার দৃষ্টান্তগুলোর প্রতি একটু নজর দেই তাহলে দেখা যাবে, প্যাটেন্টস্বত্ত্ব খুব ভালোভাবেই প্রয়োগ করা সম্ভব।
সম্ভবত এ কারণেই আমেরিকায় প্যাটেন্টের জোয়ার বইছে।
২০০৪ সালে আমেরিকায় সফটওয়্যারের প্যাটেন্টের সংখ্যা ছিলো ১ লক্ষ ৪৫ হাজার। বাংলাদেশে যেখানে ২০০৭ সালে একটি মাত্র প্যাটেন্ট দেয়া হয়েছে।
জাপনে মাটসুসিটা কোম্পানি 'জাস্ট সিস্টেম' নামের একটি কোম্পানিকে তাদরে প্যাটেন্ট ইনফ্রিঞ্জ করার জন্য আদালতে মামলা করলে হাইকোর্ট মাটসুসিটার পক্ষে রায় দেয়। তবে অনেক সফটওয়্যার কোম্পানি প্যাটেন্টের ক্রস লাইসেন্স করে থাকে।
এর ফলে একের প্রযুক্তি অন্যে ব্যবহার করতে পারে।
বাংলাদেশে সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট -
বাংলাদেশের প্যাটেন্ট আইনটি পুরানো বলে এই আইনের আওতায় সফটওয়্যার হিসেবে প্যাটেন্ট গ্রহণ করার কোন বিধান নেই। যেহেতু এখানে কোন কোড জমা দিতে হয়না বা এর সাথে ম্যানুয়েলও দিতে হয়না সেহেতু যে কেউ প্যাটেন্টের বিবরণ যথারীতি লিপিবদ্ধ করে প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই স্পেসিফিকেশনটি রচনা করাই সম্ভবত একটু কঠিন কাজ।
বাংলা স্ক্রিপ্ট ইন্টারফেস সিস্টেম -
1. A new Keyboard layout to write Bongolipi characters with a QWERTY based Keyboard in a computer or any other microprocessor based device has been invented and 55 Bangla characters are placed in a unique way so that all Bangla characters (Bongolipi) can be written without any hardware modification and to make it effective pairs of Bangla charactaers e.g অ+া (f), ি+ ী (d) , ু + ূ (s), ৃ +র্ (a), +ে ৈ(c), ও + ৗ (x), ক+খ (j), গ+ঘ (o), ং + ঙ (q), চ + ছ (y), জ + ঝ (u), ঞ + হ(i), ট + ঠ (t), ড + ঢ (e) , ন + ণ (b), ত+থ (k), দ + ধ (l), প+ফ (r), ব + ভ (h), ম + শ (m), য + য় (w), র + ল (v), স + ষ (n), ্র+্য(z), ৎ + ঃ (),৭+ ঁ (7), ্্ + ।
(g),
has been created whereas Roman character (g) or Bangla character && (hasanta) has been defined as the link key to create vowels except A & I and almost all conjuncts.
2. A few special encoding has been done to implement the claim described in Claim 1.
বিশ্বজুড়ে সফটওয়্যার প্যাটেন্টের আজকের অবস্থানের কারনে বাংলাদেশ সরকারেররও এ বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেবার সময় এসেছে। এক্ষেত্রে দেশের প্যাটেন্ট আইন সংশোধনের পাশাপাশি আইনের প্রয়োগও জরুরী। বিএসটিআই যেমন মান নির্নয় করার পর সেই মান যাতে মেনে চলা হয় তার জন্য আইনের প্রায়াগিক দিকটা দেখে, তেমনি করে প্যাটেন্ট অধিদপ্তরকে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।