পৃথিবী যুদ্ধক্ষেত্র, আমরা সবাই যোদ্ধা
[সংশোধিত]
গ্রামীন ফোন আমাদেরকে সেবা দিচ্ছে সত্যি, তবে এই সেবার মূল্য হিসেবে আমাদের সর্বস্ব নিংড়ে নিচ্ছে। যেহেতু আমাদের দেশের আমলারা একদল হিংস্র শ্বাপদ সদৃশ বুভুক্ষ শকুন, তাই সাধারন মানুষদেরকে বহিরাগতরা শুষে নিলে তারা ফিরেও তাকায়না। ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ দেখার জন্যে দেশে ক্যাব নামে একটি সংগঠন রয়েছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে তাদের উদাসীনতাও বিষ্ময়কর।
গ্রামীন এবং অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের কাছে পুরো দেশের মানুষ জিম্মি হয়ে আছে, বিষয়টি মিডিয়াজগত দেখেও না দেখার ভান করে।
কোন মিডিয়াতেই এই শোষনের ব্যাপারে তেমন কোন লেখা কখনো চোখে পড়েনি। মোবাইল অপারেটরদের ব্যাপারে সাধারন মানুষদের ক্ষোভগুলো কখনোই কোনো মিডিয়া গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেনি।
বাস্তবতা হচ্ছে, আমলারা চাচ্ছেনা ঘুষের বান্ডিল হারাতে, মিডিয়া চাচ্ছেনা বিজ্ঞাপনের অঢেল টাকা হারাতে, আর বৈদেশিক কোমপানীগুলো সর্বশক্তিতে নিরীহ সাধারন মানুষের সর্বস্ব নিংড়ে নিতে তত্পর। এত লুটপাটের মাঝে আমরা একদল নির্বোধ ভেড়ার মতো দিগ্বিদিক ছুটছি।
আমার মোবাইলে কেউ কল করলে সে যদি সঙ্গীতের মূর্ছনা শোনে তার জন্যে আমাকে কেন টাকা দিতে হবে? মোবাইলের একটি রিং টোনের বা সঙ্গীতাংশের মূল্য ৫ থেকে ১৫ টাকা পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে?
গ্রামীন আমার নিকট থেকে প্রতিটি কলের সময় ১ থেকে ২৮ সেকেন্ডর টাকা লুটে নেয়।
যদিও আমি উক্ত সময়গুলোতে কথা নাও বলি। গ্রামীনের প্রতিটি গ্রাহকই এই নির্যাতনের শিকার। অথচ যে সময়টুকু আমি কথা বলিনি কেন তার জন্যে আমি টাকা দেব?
কয়েক সেকেন্ডর পয়সা শুনতে সামান্য মনে হতে পারে কিন্তু আমাদের সাধারন মানুষদের কাছে এই কয়েক পয়সাই অনেক কিছু। আমাদের কালো টাকা নেই। সাধারন মানুষের সারাদিনের প্রানান্তকর শ্রমলব্ধ আয়ের টাকা থেকে কয়েক পয়সা করে লুটে নিয়ে গ্রামীন আলীশান অফিস আর বড় বড় বিজ্ঞাপনী ব্যানারে দেশ চেয়ে ফেলেছে।
আমরা দুই, তিন পয়সার মানুষ তাই আমাদের কাছে প্রমান চাওয়া হয় লুটপাটের। পরিসংখ্যান আর সূত্র উল্ল্যেখ করতে বলা হয়। সত্যি কথা বলতে গেলে দাম্ভিকতাপূর্ণ উক্তিতে ছিন্নভিন্ন করার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
গ্রামীনের কারনে দেশের বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এই ধুঁয়া তুলে অনেকে গ্রামীনের পক্ষে সাফাই গাইতে চেষ্টা করেন। যারা গ্রামীনের পক্ষে সাফাই গাইবেন তারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে, গ্রামীন ফোন (এবং অন্যান্য ফোন অপারেটররা তাদের) কর্মচারীদের বেতনের টাকা কোথা থেকে দেয়? এদেশের মানুষের ঘাম ঝরানো, কষ্টার্জিত টাকা রক্তচোষার মতো শুষে নিয়ে তার থেকে কর্মচারীদের বেতন বিজ্ঞাপন আর বিলাসী অফিস সাজানোয় খরচ করা হয়।
মোবাইল অপারেটরদের আয়ের ১ টাকা দেশের ভিতর খরচ হলে ১০ টাকা চলে যায় বাহিরে।
আমাদের ভূখন্ডে আমরাই নির্ধারন করে দেব বহিরাগতরা কিভাবে এদেশে বানিজ্য করবে। আমরাই নির্ধারন করে দেবো বহিরাগতরা কতটুকু পরিমান লাভ করতে পারবে, কতটুকু পরিমান টাকা তারা দেশের বাহিরে নিয়ে যেতে পারবে। এ আমাদের অধিকার, এ আমাদের স্বাধীনতা। আমরা এ অধিকার আদায় করতে পারছি না, এ স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারছি না।
কারন আমরা জানিনা কি আমাদের অধিকার। আমরা জানিনা আমাদের স্বাধীনতার পরিসীমা কতটুকু।
আমাদের যদি নিজেদের অধিকারগুলোর ব্যাপারে জানা থাকে, যদি আমাদের স্বাধীনতার পরিসীমাটুকু জানা থাকে তবে আমরা অধিকার আদায় আর স্বাধীনতা রক্ষার ব্যাপারে সচেষ্ট হতে পারবো। আমরা কি জানি সংবিধান কর্তৃক সংরক্ষিত আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো কি কি? যেহেতু আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানিনা তাই আমরা প্রাপ্য অধিকার আদায় আর স্বাধীনতা রক্ষার ব্যাপারে ম্রিয়মান।
আমরা কি চিরকাল নির্বোধ ভেড়া থেকে যাবো? নাকি আড়মোড়া ভেঙ্গে জেগে উঠবো?
-যোদ্ধা
http://www.genocide71.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।