আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার লজ্জা আমি গান গেয়ে বলি, “আমায় শাস্তি দাও’ এমন দিন কি আসবে হবে না ধর্ষণ একটাও ?

আমি ঘুরিয়া ঘুরিয়া সন্ধানো করিয়া স্বপ্নেরও পাখি ধরতে চাই আমি স্বপ্নেরও কথা বলতে চাই আমার অন্তরের কথা বলতে চাই... আজ দুটো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে , মানিকগঞ্জে চলন্ত বাসে পোশাকশ্রমিক তরুণী (১৮) ধর্ষিত হয়েছেন ড্রাইভার ও হেলপারের হাতে এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চন্দন কুমার পোদ্দার তার বাসার কাজের মেয়ে শুক্ল দে (১৫) কে অনেকদিন থেকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল অনেক দিন ধরেই, গতকাল ধর্ষকের স্ত্রী ও কাজের মেয়ে থানায় অভিযোগ করেন । খেয়াল করে দেখবেন এই দুটি ঘটনার দুটি মেয়েই শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধি, দিল্লির মেয়েটি মেডিকেলে ছিল আর আমাদের মেয়েটি গার্মেন্টসের ছিল, আমাদেরও আজ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ধর্ষক আর ধর্ষণের সমর্থকদের বিরুদ্ধে, একটু লক্ষ করুন মেয়ে দুটিই অনেক ছোট ১৫ আর ১৮ বছর বয়স । যে সময়টা তে তার পড়ালেখা করার কথা আর দশটা মেয়ের মত, প্রকাশ করার কথা উচ্ছলতা, অন্তত স্বাভাবিক জীবন যাপন করার কথা সেই বয়সটাতে তাকে নিজের শ্রম বিক্রি করে জীবিকা মেটাতে হচ্ছে, আর এই অধিকার বঞ্চিতদের উপরই এই নির্মম পাশবিকতা ! আরও লক্ষ করুন ধর্ষক দুইজনের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর একজন বাসের হেলপার । দুই প্রান্তের দুই শ্রেণী পেশার মানুষের একই হীন কর্ম আমাদের কাছে বার্তা নিয়ে আসে তোমার যাকে শিক্ষা বল সভ্যতা বল আসলে তা ফাঁকা বুলি, আমাদের নৈতিক শিক্ষার অবক্ষয়, নারীদের ভোগ্য পণ্য হিসেবে দেখার মন মানসিকতা সর্বোপরি নারী নির্যাতনকে মৌন সমর্থন দিয়ে আসার দিন শেষ করতে হবে, এবার আবার জেগে উঠতে হবে পাশের দেশের ‘দামিনী’ বাসে ধর্ষিত হবার পরে আমাদের বিবেক জাগ্রত হয়ে উঠেছিল। এটা জাতি হিসাবে শুভ লক্ষণ।

আমরা মন্দের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পেরেছিলাম। আমরা ফেসবুকে এর বিরুদ্ধে হাজার হাজার পোস্ট দেখেছি। কিন্তু আমাদের দেশের এক পোষাক কর্মী একই রকম ভাবে যখন বাসের ড্রাইভার আর হেল্পারের মাধ্যমে নৃশংস ভাবে ধর্ষিত হলো তখন আমরা চুপ করে আছি্। তখন কোথায় গেল আমাদের মিডিয়া, কোথায় আমাদের ব্লগার, ফেসবুক বন্ধুরা? আজ যদি কোন মন্ত্রীর বা সরকার দলীয় নেতার বোন-ভগ্নী ধর্ষিত হতো তাহলে সরকার কি করতো জানিনা হয়তো আমরা নিজেরাই পরনের কাপড় খুলে ঝান্ডা বানিয়ে মিছিলে নেমে পড়তাম। কিংবা ভারতের কোন মেয়ে যদি আবার ধর্ষিত হতো তাহলে তার জন্য শোক মিছিল করতাম, পোস্টের পর পোস্ট দিয়ে ফেসবুক গরম করে ফেলতাম।

গতকাল বাসে ধর্ষিত হওয়া মেয়েটার জন্য তাহলে কেন আমরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে পারছি না? সে কি সামান্য পোষাক কর্মী বলে, গরীব বলে, কোন রাজনৈতিক মামা চাচা নেই বলে নাকি মিডিয়ায় কেউ নেই বলে? আসুন আমরা ভুল প্রমাণ করে দেই এসব কথা , জানিয়ে দেই গার্মেন্টসের ঐ মেয়েটাকে কিংবা শিক্ষকের বাসার কাজের মেয়েটাকে আমরা তোমার সঙ্গে আছি তাহলে অন্তত পরবর্তী প্রজন্মকে বলে যেতে পারব " আমরা সবার পাশে সবাই ছিলাম, তাই দুর্দিন আজ শেষ হয়েছে । তোমরা আজ এক নিরাপদ ঘৃণাহীন পৃথিবীতে আছ . . . " শেষ করছি কবির সুমনের দুই লাইন ধার করে “...আমিও পুরুষ বল না আমায় কতটা ঘেন্না কর কতবার তুমি মনে মনে বল, “লজ্জায় ডুবে মর”। আমার মুখেও দেখো কি সুমানান নপুংশকের মুখ আমি লজ্জিত ভেবে মেয়েটার ক্ষত বিক্ষত বুক। আমার লজ্জা আমি গান গেয়ে বলি, “আমায় শাস্তি দাও’ এমন দিন কি আসবে হবে না ধর্ষণ একটাও। আমার শহর কুন্ঠিত বড়ো, ক্ষমা করো তুমি মেয়ে পুরুষ বলেই গাইছি এ গান শুধু মার্জনা চেয়ে . . . ।

" ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.