কপিরাইট © সংরক্ষিত.. লিখিত অনুমতি ছাড়া প্রকাশ নিষেধ
সাদেকের বুকে চিকন ব্যথা।
বুকের মাঝখানে, মন যেখানে, হৃ-দয় যেখানে।
সেইখানে ছ্যাকার দগদগে ঘা।
'সাদেক তুমি বড় ভালো ছেলে। বেশি ভালো।
'-এই বলে সুরমা চেয়েছিলো সাদেকের দিকে। পচিশটা সেকেন্ড।
নক্ষত্রের মত জ্বলজ্বলে প্রেমদেরও মরে যেতে হয়।
হয় নাকি! এই ভেবে সাদেকের সূক্ষ চোখ তখন খেল খতমের আলামত জব্দে ব্যস্ত শিডিউলে ঝাপিয়ে পড়েছিল।
প্রতিদিনকার মত।
কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় নি। সুরমার বুকে তখন অন্য মাংসের গন্ধ। সুরমা তখন যে কোনো নারী।
এইসব সোনার পিত্তল মূর্তিকে সন্ধ্যার শেষ আলোয় শেষবারের মতন রিকশায় তুলে দিয়ে হুমায়ূন সাহেবের মুক্তভার মনীষী হিমু হয়ে যখন সাদেক বাড়ির পথ ধরে তখন আকাশে নতুন চাঁদ। আর তার পাশে মরিচ বাতির মত নক্ষত্ররা নিঃশব্দ কিচির মিচির করে।
সাদেক পরাজিত সেনাপতির ক্ষতবুক নিয়ে সারাটা পথ কাতরায়, একবার নক্ষত্রের পানে চেয়ে, একবার বেদনার পানে।
ছিপখান তিনদার তিনদড়ি মাল্লার মেসে ফিরে সাদেক ঘাম মুছে বালিশের তলা থেকে সুরমার ছবিটা বের করে চেয়ে থাকে। আর ভাবে, কেন সে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলো?তার কি করার কিছুই ছিল না?
এতদিনের এই ভালোবাসাবাসি তাহলে কি শুধুই মিথ্যে কুহুকিনী?
যে অধিকারে সুরমাকে প্রেমের মিছিলে শরীক হতে বলেছিলো একদিন,বলেছিলো লাল শাড়িটা তোমার পড়ে এসো- সেই অধিকারের সনদ এক কথাতেই ছিড়ে কুটিকুটি?
সে কি অথৈ জলে খুঁজেছিলো শুধু দূরগগনের সাঁঝের তারা আর মেঘের ছায়া?
কোন পাপে খোদা তাকে এই শাস্তি দিলেন?
নিষিদ্ধ গন্ধম তো সাদেক একা খায়নি। সাদেক খেয়েছিলো, খেয়েছিলো সুরমাও। তাহলে শাস্তি কেন শুধুই তার- এই ভাবতে ভাবতে সাদেকের মনে পড়ে যায় প্রয়াত চিত্রনায়ক জাফর ইকবালের সেই অমর গান-
সুখে থাকো,ও আমার নন্দিনী
হয়ে কারো ঘরনী-
জেনে রাখো, প্রাসাদেরও বন্দিনী
প্রেম তবু মরে নি।
সে কী! সাদেক এই সব কী ভাবছে! সুরমা অন্য কারো ঘরনী কেন হতে যাবে?
ছি ছি। ছ্যাকা খেয়ে মাথাটা সাদেকের একদম গ্যাছে।
তবু কেন যেন ঘরণীর ভাবনাটা সাদেকের মাথা থেকে দুর হচ্ছে না।
দুর হ।
দুর হ।
দুর হ।
এই ভাবতে ভাবতে আর সদ্য খাওয়া ছ্যাকার অবিরাম ভার সইতে না পেরে একসময় সাদেক বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে, আর ঘুম বাড়ার সাথে সাথে বালিশটাও সাদেকের মুখ নিঃসৃত কষে মাখামাখি হতে থাকে সমানুপাতিক হারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।