অতীতকে নিয়ে নস্টালজিক হতে ভালোবাসি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেও।
আমার একমাত্র বোন এই জুলাইতে একুশে পা দিলো। অবশ্য 'গোল্ডেন কি' হাতে পেয়েও তার কোন বিকার নাই, আগের মতই আছে। এখনও লার্নার্স লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালায় আর গান শুনতে শুনতে আনমনা হয়ে যায়। বিশে জুলাইএ বাসার নিয়ম অনুযায়ী ওর খাওয়ানোর কথা।
চিকেন বের করে আমাকে বললো গরম করতে। সুবোধ বালিকার মত আদেশ পালন করলাম, মাঝখানে এসে দেখেও গেলাম কতটুকু হলো। খাওয়ার আগে সবকিছু ঠিকঠাক করতে আপুনি এলো রান্নাঘরে। হাসি মুখে কথা বলতে বলতে হঠাত্ত (বানানের জন্য সামহোয়ার ইন দোষী!) আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো, হাতে চিকেনের বাটি। পুড়ে যাওয়া লালচে কালো জিনিষটা কিভাবে ওখানে গেলো বোঝার চেষ্টা করছিলাম।
কপাল ভালো সেদিন অন্য খাবারও ছিলো। (ক্লোজআপহাসি)
মার তিন সপ্তাহের ছুটির সময়ে আমরা অতটা খারাপ ছিলাম না। স্বাধীনতা বেড়েছিলো একটু খানি, যেমন রাতে দেরিতে ঘুমানো বা সকালে দেরিতে ওঠার জন্য বকা শুনতে হয় নি। ঘর অগোছালো রেখে টিভির সামনে বসতে পেরেছি নিশ্চিন্তে! বাবার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে বলতে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যেত খাওয়ার টেবিলে। বেশির ভাগ দিনই কেটেছে বাইরে, আর রাতে মার সাথে কথা হতই।
তবুই শুক্রবারে মাকে তুলে আনতে গিয়ে অন্যরকম ভালো লাগায় মন ভরে ছিলো। এতদিন এ মানুষটাকে ছেড়ে যে ছিলাম কিভাবে!
আমার এক খালাত ভাই ছোটবেলা থেকেই আমাকে খুব আদর করে আর ডাকে 'ভূতুনী আপুনি'। সে সুত্র ধরে আমিও তাকে বেরসিকভাবে ডাকি 'ভূত ভাইয়া'। পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে আসার পর চিঠি দিতাম। কিছুদিন পর ইমেইল করা শুরু করলাম, প্রথমে প্রতিদিন, তারপর প্রতি সপ্তাহ, তারপর প্রতি মাস।
গত বছর ধরে একদমই কথা হয় নি। মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশ থেকে আসার আগে ভাইয়া আফসোস করছিলো আমরা ওর বিয়েতে থাকতে পারবো না, আর সেদিন হুট করে শুনি ভূত ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গিয়েছে, বিয়ের ছবি পাঠিয়েছে। নতুন ভাবীর সাথে ভাইয়াকে দেখে খুবই ভালো লাগলো।
আমাদের পরিবারে অনেকদিন কোন বিয়ে হয় নি, তাই এই বিয়েটা সবাইকে একসাথে এনেছে। ছবিতে সবাইকে দেখে অসম্ভব খারাপ লাগছিলো।
ওদের সুখ-দুঃখ কিছুতেই থাকতে পারিনা, অথচ আমারও ঐ ছবির অংশ হওয়ার কথা ছিলো। ওরাতো এখনও আমার পরিবারই।
অনেকদিন কাছের মানুষগুলোকে দূরে ঠেলে রেখেছি। ওদেরকে আবার কাছে টানতে ইচ্ছে করছে। কাছের মানুষদেরকে, আর কাছের, কাছের মানুষদেরকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।