mahbub-sumon.com
তখন খুব ছোট্ট আমি,
বয়স কতো আর হবে সেটাও মনে নেই,
মফস্বলের ছোট্ট একটি শহরে থাকি তখন।
জন্মদিনে আম্মু একটি বই কিনে দিলেন আমাকে,
"একাত্তরের দিনগুলি - জাহানারা ইমাম ",
তবে প্রচন্ড এক উত্সাহে বইটি পড়েছি সেটা মনে পরে।
ঢাকা তখনো দেখেনি। ছোট্ট একটি শিশুর চোখে ঢাকাকে কল্পনা করতাম। কিভাবে গেরিলারা একশনে যাচ্ছে, ঢাকার কোথায় কোথায় একশন হলো, রুমি-জামীর গল্প, এলিফ্যান্ট রোডের গল্প, সন্তানের জন্য একজন অসহায় মাতার ছুটোছুঁটি,কতো যে গল্প......... ।
ভাবতাম, ইস ... আমি যদি রুমির মতো হতে পারতাম !
বইয়ের পাতায় পাতায় ছিলো মুক্তিযুদ্ধ ও একজন মাতার কথা।
বইটি এখনো আছে আমার কাছে। হয়তো বহু পড়া জীর্ন মলাট ! প্রিয় কিছু বইয়ের অন্যতম।
১৯৯২ সালে যখন শহীদ জননী ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি গঠন করলেন, গন আদালত তৈরি করলেন তখন ১৪ বছরের এক কিশোর আমি। হোস্টলের কঠিন বেড়া ডিঙিয়ে যাওয়া হয়নি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেই ঐতিহাসিক উদ্যানে ।
বিশাল একটি আক্ষেপ রয়েই গেলো সারাটা জীবনের জন্য।
এলিফ্যান্ট রোডের তাঁর বাসায় যখন যেতাম তখন কল্পনার চোখে ভাবতাম , এই এই বাসায় থাকতেন শহীদ জননী !! এই পোর্চে উনি হেঁটে হেঁটে বাহিরে যেতেন !! এই বেড রুমে উনি ঘুমাতেন !! এই রান্না ঘরে উনি শহীদ রুমির জন্য বার্গার বানাতেন !!
দেখা হয়নি তাঁর সাথে। তখন তিনিআমাদের ছেড়ে অনেক দূরে। এখনো এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে যাবার সময় মনে পরে যায় তাঁর কথা। মনে হয় এই রোড দিয়ে একসময় শহীদ জননী হেঁটে যেতেন!!
গতকাল ২৬ জুন ছিলো তাঁর মৃত্যু বার্ষিকী।
১৩ টি বছর, ১৩ টি বছর............
মা ও মা.....তোমায় আজ খুবি দরকার। কেনো তুমি চলে গেলে? কেনো ? কেনো ??
তুমিও নেই সেই আন্দোলনও নেই।
আজ তোমাকে খুবই দরকার ছিলো আমাদের। খুবই...
আজ সেই ঘাতক দালাল ঘুলো লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে গাড়ি হাঁকায়। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি।
কিছুই করতে পারি না। অক্ষম এক মানুষ আমি। ক্ষমা করো আমাকে। ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না আমি।
---------
ছবিঃ মুফতি মুনির (
http://www.adhunika.org )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।