যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
পেট মোটা হয়ে গেছে। মানে খাদক হয়ে গেছি বাড়ন্তরকমের। প্যন্টের কোমড় বত্রিশ ইঞ্চি এখন বত্রিশটা দাঁত বের করে ব্যাঙ্গ করে, খেয়দেয়ে বেল্ট আর লাগতেই চায় না ঠিক ছিদ্রে। প্যান্টের চেহারা দেখে প্রেমে পড়ে গেলাম, পেটের জন্য এ প্যান্ট আমি ছাড়তে পারবো না। কাজেই তোড়জোড় বেঁধে নেমে গেলাম পেট কমাতে।
পরিচিত মহলের স্বাস্থ্য সচেতনরা জিমে যেতে পরামর্শ দিলো, কিন্তু সময় ও পরিশ্রমের কথা চিন্তা করে সেটা অসম্ভব মনে হলো। একজন ডায়েটিসিয়ান পেটে টোকা দিয়ে বললো, তুমি কেবল খাদ্য উদরপূর্তি কমিয়ে দাও, দেখবে প্যান্ট ফিরে পেয়েছে আগের যৌবন।
সকাল ঘুম থেকে উঠে শুরু করলাম পেট-উপবাস। একটামাত্র রুটি। ডিমের অর্ধেক।
তারপরে অফিসে দুই কাপ র'টি মেরে ঘাপটি মেরে বসে থাকি। এগারোটা পেড়ুতে পেটে মোচড়। আমি আমল দেই না। ঠিক একটায় আবার একটা রুটি, হালকা শবজী আর একটা কলা। তিনটা বাজতেই পেটের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
কিন্তু আমি নাচার, পেটকে শায়েস্তা করতেই হবে। প্রিয় প্যান্টের জন্য এই কোরবানী আমাকে মেনে নিতেই হবে। সন্ধ্যায় এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাবার কথা। তার সাথে দেখা হওয়া মানেই শর্মা বা বারবিকিউ। অনেক ভেবেচিন্তে জিহবাকে শাষন করে বাসায় ফিরলাম।
পেটের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্ন যুদ্ধ চলছে তো চলছেই।
বিকেল ছটায় ঘরে ফিরে টেবিলে দেখলাম, আলুভর্তা, ঘন ডাল আর কলিজা সাজানো। দেখেই আমার নেশা হয়ে গেল। সকাল ও দুপুর জুরে দুই রুটি, পেটের নেশাতো হবেই। রাতের খাবারের ঢের বাকী।
রাতে কিছু না খেলে এখনতো এগুলো খাওয়াই যায়। পোষাক না ছেড়ে হাত ধুয়ে আমি লেগে গেলাম পেটপুজোঁতে। কি পরিমাণ খেলাম তার কোন হিসেব নেই, তবে যখন হুশ হলো তখন দেখি টেবিল ফাঁকা। একটা বিশাল ঢেকুর তুলে রিমোট নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে মনে হলো, শান্তি, ওম শান্তি!
রাত গড়িয়ে এগারোটা। রাতের খাবারের ডাক পড়েছে।
আমি বিকেলে যে হাতির মত গাদিয়েছি সেটা আর মনে থাকে না। খাবার টেবিলে মেনু পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন সেখানে ইলিশখিচুরি। অবশ্য একজন গেস্টের সৌজন্যে। মেহমানকে সংগ দেয়া বড় পুন্যের কাজ।
লেগে গেলাম ভোজনপর্বে। দ্বিতীয় ইনিংসও পুরো সাবাড় করে যখন তৃপ্তির ঢেকুর তুলছি তখন মনে হলো পেটটা আর চলছে না। এরপরের গল্প অতি সাধারণ। বিছানায় পড়ালাম আর ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমের রাজ্যে চলে গেলাম।
আজকে সকালে অনেক কায়ক্লেশে বেল্টটা পরিচিত ঘাটে পরতে পেরেছি।
প্যান্টের বোতামটাও লাগাতে কষ্ট হয়েছে। কালকের মত আজকেও হলে নিশ্চিত আগামীকাল আমার সাধের প্যান্টগুলোর মায়া ছাড়তে হবে। সকালে তাই একটা রুটি খেয়েছি। দুপুরের জন্য আরো একটা রুটি বরাদ্দ। তবে দশটা না বাজতেই মনে হচ্ছে পেটটা খালি খালি।
আমার কি হবে কালিয়া?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।