আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি।
*আল্লাহতায়ালা ছাড়া কোন আলো নেই, সবই অন্ধকার।
*আমরা সবাই আল্লাহ থেকে আগত। সমগ্র বিশ্বজগতই আল্লাহর কাছ থেকে আগত, সবই আল্লাহর ইচ্ছার প্রকাশ (তাজাল্লী) আর সমগ্র বিশ্বচরাচরই তার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
*এক কথায় আম্বিয়ায়ে কেরামের যাবতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো মারেফাতুল্লাহ (আল্লাহর জ্ঞান-পরিচয় দান)।
*অহীর মূল আদর্শই ছিলো মানুষের জন্যে মারেফাত (জ্ঞানপ্রজ্ঞা) সৃষ্টি।
*আউলিয়ায়ে কেরামের বেশীর ভাগ ফরিয়াদই হলো প্রিয়তম (আল্লাহ) ও তাঁর অনুগ্রহ থেকে দুরে ও বিছিন্ন থাকার বিরহ বেদনা।
*আম্বিয়া ও আউলিয়ায়ে কেরামের অর্জিত যাবতীয় কামালতের (পূর্ণতা ও উন্নতি) পেছনে রয়েছে গায়রুল্লাহ থেকে মন উঠিয়ে নেয়া ও একমাত্র আল্লাহর প্রতিই মনোযোগী হওয়া।
*আল্লাহর জিয়াফতখানায় যে বিষয়টি মানুষকে পথ খুলে দেয় তা হলো গায়রুল্লাহকে পরিত্যাগ করা, আর এ বিষয়টি সবার পক্ষে অর্জন সম্ভব নয়।
*নিজেদেরকে খোদার দাসত্বের দরিয়া, নবুয়্যতের দরিয়া ও কুরআনুল করিমের দরিয়ার সাথে সংযুক্ত করুন।
*জেনে রাখুন ইবাদাত ও বন্দেগীর অত্যাবশ্যক দিকগুলোর একটি হচ্ছে আল্লাহতায়ালার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামতগুলোর জন্যে কৃতজ্ঞতা ও শোকরিয়া জ্ঞাপন। প্রত্যেকের উচিত নিজ সাধ্যানুযায়ী এ শোকরিয়া জ্ঞাপনে তৎপর হওয়া। যদিও আল্লাহতায়ালার প্রাপ্য শোকরগুজারী করার ক্ষমতা সৃষ্টির কারোই নেই।
*অত্যন্ত স্পষ্ট যে, আল্লাহতায়ালার গুণগান, প্রশংসা, কৃতজ্ঞতা ও শোকরগুজারীর জন্য অত্যাবশ্যক শর্ত হচ্ছে হকতায়ালার পবিত্র মকাম (মর্যাদা) তাঁর এবং তাঁর মহা মহাপরাক্রমশীল (জালাল) ও সুন্দরতম মহানুভব গুনাবলী (ছেফাত) সম্পর্কে জ্ঞান ও মারেফাত লাভ করা।
*খোদার দাসত্বের রীতি হলো এই যে, আল্লাহর শক্তি ব্যতীত অন্য কোন শক্তিকে গ্রাহ্য না করা এবং আল্লাহর প্রশংসা যা আউলিয়ায়ে কেরাম থেকে এসেছে তাছাড়া অন্য কারো প্রশংসা না করা।
*মূলতঃ প্রশংসা ও গুনগান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ পায় না। আপনি যদি এমনকি একটি গোলাপেরও প্রশংসা করেন এটা মূলতঃ আল্লাহরই প্রশংসা।
*নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আপনাদের কার্যকলাপ যদি দাসত্ব ভিত্তিক না হয় এবং ইসলামী একতা বহির্ভূত হয় তাহলে আপনারা অসন্তুষ্ট ও লজ্জিত হবেন।
*আপনাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য যদি আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে তাহলে এর পশ্চাতে বৈষয়িক কল্যাণও নিহিত রয়েছে। তবে এমতাবস্থায় এ বৈষয়িক কিছু দীনী রুপ পরিগ্রহ করে নেয়।
*শয়তানী বিষয়াদি থেকে দীনি মূলনীতিকে পার্থক্য করার উপায় হলো এই যে, নিজের একান্তে প্রত্যাবর্তনের পর ব্যক্তি তার বিবেকের মাঝেই অনুভব করতে পারবে যে, সে যা চায় তা প্রকৃতপক্ষে কাজটির সম্পন্ন হওয়া, যদিও এ কাজ অন্য কেউ সম্পাদন করেছে বা করছে।
*আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ এবং সব সেরা হিজরত তথা নিজের নাফস থেকে আল্লাহর দিকে হিজরত ও দুনিয়া থেকে পরলোকের প্রতি মনোনিবেশই আপনাদের বলীয়ান করেছে।
*আল্লাহর ওপর ভরসা করার পরই নিজের ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখবেন। কেননা, এ ক্ষমতা ও তাঁর (আল্লাহ) কাছ থেকেই প্রাপ্ত।
*আপনাদের বলছি, আল্লাহ ছাড়া কাউকেই ভয় পাবেন না এবং কারো উপরই ভরসা করবেন না।
একমাত্র আল্লাহতায়ালা ব্যতীত।
*গাইরুল্লার প্রতি মনোযোগ মানুষকে অন্ধকারাচ্ছন্ন ও জ্যোতির্ময় পর্দাগুলোর মাঝে অবগুন্ঠন করে রাখে।
*আল্লাহতায়ালার প্রতি অমনোযোগিতা অন্তরের ময়লাকে বাড়িয়ে দেয়, নাফস ও শয়তানকে মানুষের ওপর প্রাধান্য দান করে এবং অপরাধ-অনাচারকে দিন দিন বৃদ্ধি করে। কিন্তু আল্লাহর স্মরণ ও যিকির অন্তরকে স্বচ্ছ করে, কলবকে শুভ্র চকচকে ও প্রিয়তমের (আল্লাহর) তাজাল্লীগাহে পরিণত করে। এছাড়া তা রুহকে বিশুদ্ধ ও খালেছ করে তুলে ও নাফসের বন্দীত্ব থেকে মানুষকে দূরে রাখে।
*জেনে রাখুন, আল্লাহর গজবের আগুনের চেয়ে কোন আগুনই কষ্টদায়ক নয়।
*যেমনি করে নিজেদের প্রতিরক্ষা করা ও অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আমরা দায়িত্বশীল তেমনি অন্যদের প্রতি এ বিষয়ে আহবান জানানোর ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীল।
*আমরা অবশ্যই আমন্ত্রণ জানাবো, তবে তা যেনো নিজেদের প্রতি না হয়, দুনিয়ার প্রতি আহবান না হয় বরং তা যেনো আল্লাহর প্রতিই হয়।
*আল্লাহর জন্যেই অধ্যয়ন করুন।
*মানুষ যদি নাফসানী লালসার জন্যে তৎপরতা চালায় এবং এ তৎপরতা খোদার জন্যে না হয় তাহলে তার এ কাজ কোন ফলই দেবে না।
বরং শেষতক তার কাজ অর্থহীনতায় পরিণত হবে। যা আল্লাহর জন্যে হবে না তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
*আল্লাহ আছেন। তাঁর প্রতি অমনোযোগী হবেন না। আল্লাহ উপস্থিত রয়েছেন।
আমরা সবাই তার কড়া নজরে আছি।
*লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে দীনী লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পরিণত করুন। আল্লাহর পথে পা বাড়ান।
*সমস্ত জগতই আল্লাহর এজলাস। যা কিছু ঘটছে সবই তার সামনে ঘটছে।
*সব সময় মনে রাখবেনঃ আপনাদের কাজকর্ম আল্লাহর সামনে সম্পন্ন হচ্ছে। যাবতীয় কাজ এমনকি চোখের পলক পর্যন্ত আল্লাহর দৃষ্টিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মুখগুলো যে কথা বলছে তাও আল্লাহর সামনে উপস্থিত, হাতগুলো যে কাজ করছে তাও আল্লাহর সামনে রয়েছে। আগামী দিন আমাদের সবাইকে জবাব দিতে হবে।
*আমরা সবাই আল্লাহর সামনে উপস্থিত রয়েছি এবং আমাদের সবাইকে মরতে হবে।
*আপনাদের অন্তরে এ কথাটা অবশ্যই পৌঁছাতে হবে যে, যে কাজই করুন না কেনো তা আল্লাহর সামনেই করছেন।
*নিজেদের অবগুন্ঠিত ও অধঃপতিত অন্তরে এ উপলব্ধি জাগ্রত করুন যে, এ বিশ্বচরাচর সর্বোচ্চ স্তর আলা ইল্লিয়ীন থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন স্তর তথা আসফালাস সাফিলিন পর্যন্ত সবকিছুই মহাপরাক্রমশালী ও সর্বোচ্চ আল্লাহতায়ালারই তাজাল্লী মাত্র এবং সবই তার ক্ষমতার কবজায় ন্যস্ত।
*আল্লাহর দেয়া নেয়ামতগুলো আল্লাহর বান্দাদের জন্যে পরীক্ষা স্বরূপ।
*যে বিষয়টি মানুষকে নড়বড়েও কম্পমান অবস্থা থেকে মুক্তি দেয় তা হলো আল্লাহর যিকির (স্মরণ)।
*আল্লাহর দিকে মনোযোগী হও, তাহলেই অন্তরসমূহ তোমার দিকে ঝুঁকে পড়বে।
*কাজের পরিমান ও বাহ্যিকতাই মাপকাঠি নয়, বরং যা মাপকাঠি তা হলো কাজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
*জগতে এমন কোন দায়িত্ববান মানুষ নেই যে আল্লাহর পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের অধীন নয়।
*যে কেউ যে কোন পদে এবং যে কোন দায়িত্বেই থাকুক না কেনো তার জন্যে সে পদ ও সে দায়িত্বই হচ্ছে পরীক্ষা।
*ইসলামে মাপকাঠি হচ্ছে আল্লাহর রেযামন্দী (সন'ষ্টি), ব্যক্তিত্বগণ নয়। আমরা ব্যক্তিত্বদের ন্যায়-ইনসাফ তথা খোদার মাপকাঠিতে মেপে থাকি, ন্যায়কে ব্যক্তিত্বের মাপকাঠিতে নয়।
মাপকাঠি কেবল ন্যায় ও সত্য।
*আমাদের উচিত মাপকাঠিগুলোকে খোদায়ী মাপকাঠির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করা।
*জাতি সজাগ হোন! সজাগ হোন সরকার! সবাই সজাগ হোন! আপনারা সবাই আল্লাহর সামনে উপস্থিত রয়েছেন। কাল সবাইকেই হিসাব দিতে হবে। আমাদের শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে অসতর্ক হয়ে চলবেন না।
পদ-পদবীর জন্যে ঝগড়া-ফ্যাসাদ করবেন না।
*বিশ্বটা আল্লাহর দরবার। আল্লাহর দরবারে গুনাহ ও অপরাধ করবেন না। আল্লাহর দরবারে বাতিল ও বিলীয়মান বিষয়ে পরস্পর ঝগড়া করবেন না। আল্লাহর জন্যে কাজ করুন এবং আল্লাহর জন্যেই সামনের দিকে এগিয়ে যান।
*বর্তমানে আমরা সবাই পরীক্ষাক্ষেত্রে উপনীত হয়েছি।
*মানুষ হয়তো বা তার কোন কিছুকে সবার চোখ থেকেই লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু আমাদের সবকিছুই আল্লাহর চোখে সংরক্ষিত হচ্ছে এবং আমাদের আমলগুলোকে আমাদের কাছে ফেরত দেয়া হবে (ফল হিসাবে)।
*আল্লাহকে দলীল হিসাবে ভরসা করুন আর আল্লাহর দলীলের ওপর এ ভরসাই ইনশাআল্লাহ সকল সমস্যা-সংকটের অবসান ঘটাবে।
*যাবতীয় খোদায়ী দায়িত্ব-কর্তব্যই হচ্ছে খোদায়ী অনুকম্পা ও করুণা। অবশ্য আমরা ধারণা করি তা সাধারণ দায়িত্ব কর্তব্য।
*আমাদের অবশ্যই বান্দা (দাস) হতে হবে এবং সবকিছুকেই আল্লাহর কাছ থেকে আগত বলে মনে করতে হবে।
*আল্লাহতায়ালা সব নেয়ামতই আমাদের দান করেছেন। তাই-যা কিছু আমাদের দান করেছেন সবই তার পথে আমাদের ব্যয় করতে হবে।
*আমরা সবাই আল্লাহর। তাই তার পথেই নিয়োজিত থাকতে হবে।
*যে বিষয়টি মুছিবতগুলোকে সহজ করে দেয় তা হচ্ছে এই যে, সকল মানুষই চলে যাবে। আমরা সবাই চলে যাবো। আর তা কতোই না উত্তমহবে যে, আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গীকৃত হবো।
আমরা, আপনারা এবং সকলেই যা কিছুর অধিকারী সবই আল্লাহর থেকে পাওয়া। তাই সর্বশক্তি আল্লাহর জন্যেই ব্যয় করা উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।