বন্ধ জানালা, খোলা কপাট !
ওসমান গনির ব্রক্ষ্মতালু জ্বলছে । রাগলে এরকম হয় তার । বৈদ্যুতিক তারে বসা কাকটার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকাল সে । ওই অশিক্ষিত কাকটা এই মাত্র তার গায়ে টয়লেট সেরে দিয়েছে ! কুঞ্চিত ভ্রু নিয়ে ওসমান দেখলো,তার সার্ট ভরে গেছে কাকের ইয়েতে । এই জিনিষ আবার একেবারে সার্টে না পড়ে, প্রথমে মাথায় অতঃপর মুখমন্ডল ছুঁয়ে সার্ট ।
গনি মিয়ার গা ঘিনঘিন করছে । মনে হচ্ছে এখুনি ওয়াক...। সেই সঙ্গে তরতর করে লাফিয়ে ওঠছে রাগের পারদ । লাফিয়ে ওঠছে কারণ,একজন ভ্দ্দরলোকের গায়ে টয়লেট সেরেও,কাকটা হাওয়া খাওয়ার ভঙ্গিতে বসে আছে । কাল্লুটা নির্লিপ্ত চোখে গনিকে জরিপ করছে যেন ।
কাকা রবে কাকীয় সঙ্গীত সাধনও চলছে যথারীতি । মহা বিরক্ত হয় ওসমান গনি। এই নগরে কতো মিটিং,মিছিল প্রতিবাদ সভা হয় (তখনতো আর জরুরী অবস্থা ছিল না ) ! কিন্তু কাক সম্প্রদায়ের বেয়াদবির কোন প্রতিবাদ হয় না। কাক গুলাকে মানুষ করার স্কুল খোলা হয়না । অথচ এটা সময়ের দাবী,এদেরকে সহবত শেখাতে হবে-'বাথরুম সারিবার পূর্বে নয়ন মেলিয়া নীচে দেখিয়া লইবে ! পথচারী ভদ্দরলোকের গায়ে হাগু করিয়া তাহাকে অনভিপ্রেত বিব্রত করিবে না !'
বিরস বদনে ওসমান গনি ফের মেস মুখো হয় ।
সকালটা বাজেভাবে শুরু হয়েছে,মনটা তেতো হয়েছে তার । আশ্চর্য ! কাকেরাও আজকাল তার সঙ্গে মশকরা করছে ! এরা কি করে বুঝল যে ওসমান গনির এখন দুঃসময়। আফসোস, হাতি খাদি পড়লে চাম-চিকায়ও..। ওসমান গনি এখন গভীর খাদে পড়েছে । সিগারেটের বাকী অনেক হওয়াতে দোকানদারও বাকীতে আর সিগারেট দিবে না বলে দিয়েছে ।
মোটের ওপর বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা তার । মনে হ্চ্ছে কাক সম্প্রদায়ও জেনে গেছে, এখন সে বেকার বলে আকার নেই তার । এখন তাই তার দেহের ওপর মল ত্যাগ করতেও তারা দ্বিধান্বিত না । পরিহাস ! কাকেদের নির্মম পরিহাস !
হাত ঘরিটায় চোখ রাখে ওসমান গনি। ন'টার ঘর ছুঁই ছুঁই করছে ঘরির কাঁটা ।
প্রায় দৌঁড়ের ওপর বাসায় পৌঁছায় সে । সকাল দশটার চাকরীর ইন্টার ভ্যুটা তাকে ধরতেই হবে ! গোপন সূত্রে সে জেনেছে,বন বিভাগের এই চাকরীটা একবার নিজের করে নিতে পারলে,গনি মিয়ার সত্যিকারের গনি হওয়া ব্যাপার না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।