[লেখক-শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান]
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বাস্তবমুখী রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক কর্মসূচির দর্শনে উদ্বুদ্ধ করে প্রতিটি মানুষকে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে তার ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন ও নিষ্ঠাবান করে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে তাদের প্রত্যেককে দেশ ও তার জনগণ এবং বিশ্ববাসীর কল্যাণ করার সুযোগ করে দিতে হবে। একথা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে, জাতি হিসেবে আমরা নিজেরা শক্তিশালী, সুদৃঢ় ও সফলকাম না হতে পারলে আমরা বিশ্বমানবতার সেবা করতে পারব না। পূর্বে উল্লেখিত পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করতে হলে আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে--যাতে জাতীয় স্বার্থেই গঠনধর্মী বিরোধী দলের অস্তিত্ব থাকবে। দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণ এসব চিন্তা ও কাজের মূল পথ নির্দেশিকা হবে।
আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা এমন এক বিশ্ব-পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে--যেখানে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আদর্শের কর্মসূচী জনগণকে নিষ্ক্রিয় ও নির্বাক করে দেয়; যার ফলে রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় জনগণের ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত শক্তি কার্যকরী হতে ব্যর্থ হয় এবং দুঃখ, কষ্ট, ব্যর্থতা ও পরাজয়ের গ্লানি ক্রমন্বয়ে বেড়ে চলে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা বিশ্বব্রম্মাণ্ডে সব সম্পদ ও সম্ভাবনাময় দ্বার আজ যখন মানুষের অগ্রগতি ও জাগরণের পথরুদ্ধকারী সীমাবদ্ধতা ও নিয়ন্ত্রণের আদর্শ গ্রহণ করে তখন তা মানুষের একক ও সম্মিলিত কাজের শক্তি শুধু খর্ব করে না; বরং তা মানব সমাজকে অগ্রগতির পরিবর্তে পশ্চাদগামী করে পরিণতিতে অবশ্যম্ভাবী আত্মবিনাশ ডেকে আনে। নিয়ন্ত্রিত ও সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তারা স্বভাবতই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হবে এবং যদিও তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা পূর্বের আদর্শবাদভিত্তিক থাকবে না, যথার্থভাবেই হবে প্রতিক্রিয়াশীল। যদি তারা পুরাতন দৃষ্টিভঙ্গি আঁকড়ে থাকে তবে তারা বহুমুখী সমস্যার আবর্তে ক্রমান্বয়ে আত্মবিনাশের সম্মুখীন হবে। এই ক্রমিক প্রক্রিয়া অঞ্চল বিশেষ ও বিশ্বের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ামকের দ্বারা প্রভাবান্বিত হবে। প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা মানুষকে স্বাধীন সত্তা দান করেছেন--যাতে মানুষ তার নিজস্ব শক্তির পূর্ণ ব্যবহার ও মতা দ্বারা তা বহুমুখী প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পারে; সেজন্য তাকে যথাযথ সুযোগ দিতে হবে।
আগের পর্বগুলি পড়ুন:
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (পর্ব-৫)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।