আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেকনো মোল্লা



গত পোস্টে উল্লেখ পরে অনেকেই টেকনো মোল্লারে নিয়া মজাক করিয়াছেন, তাই তারেই ডেডিকেটেড এই পোষ্ট। আগামী পোস্টে আশাকরি ছাপাকল আর অপর বাস্তব নিয়ে বকবো। ছবিখান যেইটা আছে ওইটা আমার না, টেকনোর। (পুতলার যায়গায় আমারে মনে মনে বসায়ে নিতে পারেন)ভাই আমার দেখা হল প্রায় একুশ বছর পরে। লাস্ট টাইম যখন দেখা হত, তখন হেবী মারপিট করতাম বলে মনে আছে, তবে কয়েক মাসের বড় হবার জন্য, মোটামুটি এডভান্টেজ নিতাম।

তারপর বহুদিন ওরা মিডলিস্টে, আমি দেশে, এর মাঝে ও এসেছিল একবার দেশে, আমি তখন অন্যখানে, পরে চলে গেল ভোল পাল্টাতে ম্যারিকা। সেখানে প্রথমবারের মতন মায়ের আঁচলের বাইরে এসে জীবনের সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল ছোকরাকে। মায়ের সাথে করা জিদগুলো ঠিক যায়গায় এসে কাজে লাগিয়ে মোটামুটি পায়ের নিচে মাটি দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। নাসায় কাজ করেছে, প্রোগ্রামিং করেছে, হাবিজাবিও করেছে। মাতৃকারাগার থেকে মুক্তি পাবার প্রথম বছরে সাধ মিটিয়ে ম্যারিকান ড্রীম সফল করতে চেয়েছে।

ভালই আগাচ্ছিল সময়ের সাথে। ধাক্কা খেল একসময়ে। আবুধাবী থেকেই আসা ওর আরেক দোস্ত হটাত গাড়ী এক্সিডেন্টে কবরবাসী হল, আর নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করল। প্রথমবারের মত বাপের ঝাড়ি ছাড়াই নিজেকে সামলানো শুরু করল। খাবারদাবারে হারাম বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা শুরু করল, আর তার জন্য রেডীফুড ছেড়ে হাত পুড়িয়ে রান্না শুরু করল।

জানতামনা নিজের কপোলযুগলের এমন চমতকার শোভাবর্ধন করেছে এই কবছরে। ওয়েলকাম ব্যাক টু দি ফ্যামিলি। এমএসএন এ নিজের নিক টেকনো মোল্লা দিয়ে রাখতো সে থেকেই আন্দাজা লাগানো দরকার ছিল। তের বছর পরে বাংলাদেশে আসার পরে যাই দেখে তাতেই একটা স্বপ্নভাব লেগে থাকে। খুব সম্ভবত আবার একযুগ পরে আসবে, আর কখনোই এদেশে লম্বা সময়ের জন্য থাকবে না।

তবুও নাক কোঁচকায়নি আর ঠোঁট ওল্টায়নি, বাস্তবতা হিসাবে মেনে নিয়ে চুপচাপ দেখে নিয়েছে। সামহোয়ারের অফিস থেকে ফেরার সময়ে গাড়িতে টুকটাক আলাপ হচ্ছে, গত কদিন ধরেই দেখি ফকির আসলেই ছোকরা লক্ষী ছেলের মত পকেট থেকে দুটাকা পাঁচটাকা বের করে দেয়। হটাত প্রশ্ন করলাম, খেয়াল করেছ? ঢাকায় ফকির অনেক কম? ও বেশ ইম্প্রেসড হয়ে বলল, হ্যাঁ তাইতো, আগে তো ঢাকার রাস্তায় নামলেই... ঠান্ডা অসহায় রাগটা শিঁড়দাড়া দিয়ে বয়ে গেল। আস্তে বললাম, ঢাকাকে এতটাই ব্যায়বহুল করে দেয়া হয়েছে যে, ভিক্ষা করে এখানে টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে গেছে। আর ফ্ল্যাট আর এপার্টমেন্টের যেই জঙ্গলে আজ বেশিরভাগ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সেখানে দরিদ্র কোন সাহায্যপ্রার্থীর প্রবেশাধিকার নাই।

তার পরের রাস্তাটা দুজনের মাঝেই অস্বস্থিকর নীরবতা ঝুলে থাকে। আমি হয়তো বেলুনে সুঁই ফোটালাম, কিন্তু ওয়েলকাম টু রিয়েলিটি। ছোকরা আজকে উড়াল দিচ্ছে। জানি না আরো একুশ বছর লাগবে কিনা পরেরবার মুখোমুখি হতে। তার আগ পর্যন্ত শুভকামনা


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।