আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর্মি বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনায় কতটুকু সক্ষম

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

আর্মি বেসামরিক প্রশাসন চালানোর জন্য কতটুকু উপযুক্ত? বিষয়টা নিয়ে সাধারণ মানুষের একটা উচ্চধারণা ও প্রত্যাশা রয়েছে। আর্মি যখন সন্ত্রাসী ধরতে যায় তখন জনগণ ভাবে এইবার আর বাচন নাই, রাস্তার পাশে দাড়ালে ড্রাইভারেরা সিগনাল অমান্য করতে ভুলে যায়, ভেজালবিরোধী অভিযানে দোকানদাররা মাল জিনিস ফেলে পালায়, রাজউক উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারে মহানন্দে। এটা আর্মির সংঘবদ্ধ জীবন যাপন ও ট্রেনিং এর কারণে কমান্ড পালন করার সিরিয়াসনেস তৈরী হওয়াতে সম্ভব হয়। তারা অনেক বেশী শ্রম দিতে পারে, অনেক বেশী ভয়ংকর হতে পারে এবং অনেক বেশী দক্ষ হতে পারে তাদের চর্চিত বিষয়ে। আর্মিকে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত করা হয় যেখানে শারিরীক লম্ফঝম্প অত্যাবশকীয়।

উপরের সাড়ির অফিসারদের নিদৃষ্ট মাত্রায় দৌড়াদুড়ি করে পেট ভুড়ি ও ওয়েট কমিয়ে রাখতে হয়। যার জন্য শরীর সুস্থ্য থাকে, বুড়িয়ে যায় না অল্পতেই। অনেক বেশী বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারে। তাদের স্ট্রাটেজী একটা প্রতিপক্ষ ঘিরে। যারা শত্রু।

অন্যদিকে বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান স্টেকহোল্ডার বেসামরিক জনগণ। সংগত কারণে এখানে বেসামরিকদের নিয়োগ বেশী যারা কেহই আর্মির মত ট্রেনিং প্রাপ্ত নয়। বেসামরিক প্রশাসনের প্রতিপক্ষ শক্রকে ঘিরে নয়। আর্মি যেমন একটা স্পেশালাইজড সেক্টর তেমন হাজারটা স্পেশালাইজড সেক্টর নিয়ে বেসামরিক প্রশাসন গঠিত। এখানে দেশরক্ষার জন্য সামরিক শক্তি তৈরীর চিন্তা হয়, নির্ধারণ করা হয় তাদের কেমন হবে জীবন-যাপন পদ্ধতি যা তাদের স্পেশালাইজড হতে সাহায্য করবে।

সরকার পরিচালনার জটিল বিষয়ে তাদের বিশেষায়িত জ্ঞান সমন্বিত নয়, কারণ জনগণ অসংখ্য ডাইভারসিটি লালন করে, চর্চা করে, দ্বিধাবিভক্ত থাকে। সামরিকদের যেখানে শক্র খুঁজতে হয়, সরকারকে তেমন বন্ধু খুঁজতে হয়। আর দেশের সামাজিক নির্মাণগুলো এমনই হয়ে থাকে যা ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব নয়, অথচ তা পরস্পরকে স্পেস দেয়। কখনও স্পেস না দেয়ার খেলাটাও তাদের স্বকীয়তা। এটা একটা জটিল ইক্যুয়েশন, আর্মি এভাবে চলে না, কিন্তু জনগণ এমনই।

কাজেই বেসামরিক প্রশাসনে সক্রিয় অংশগ্রহণ আর্মির বিশেষায়িত চরিত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কোনভাবেই নিজেদেরকে বহিঃশক্রর আক্রমন থেকে মুক্ত কল্পনা করতে পারে না। আমাদের শক্তিশালী সামারিক বাহিনী আমাদের রক্ষাকবচ। বর্তমান সরকার সামরিক ছত্রছায়ায় গঠিত হলেও সামরিক প্রধান সরকার প্রধান হিসাবে আবির্ভূত হয়নি। তবে বিভিন্ন বেসামরিক বিভাগে আর্মির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে যা তাদের সামরিক চরিত্রের জন্য হুমকীসরূপ।

তাছাড়া বেসামরিক প্রশাসন চালানোর জন্য যে ধরণের সময়, ধৈর্য্য ও বিভিন্নমুখী চিন্তার সন্বয়ন ও সমাজ, ব্যক্তির স্বাধীনতাকে লালন করা দরকার - তা আর্মির মত বিশেষায়িত সেক্টরের কর্মকর্তাদের মধ্যে সংগতভাবে থাকার কথা নয়। আর্মি বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনার জন্য একটা ইনটেরিম/জরুরী সময়ের জন্য সক্ষম হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ সময়েরর জন্য নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.