পল্লব
নান্দনিক দৃষ্টিতে একটি ভবন খুব সুন্দর বলে পরিগণিত হলেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে দুর্যোগের সময় এটি একটি মৃতু্যকূপে পরিণত হতে পারে। এজন্য একটি ভবন নির্মাণের সময় 'ক্রানত্দিলগ্নে' ভবনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বন্দোবসত্দ করা অবশ্যকরণীয়। উন্নত বিশ্বের একটি ভবন যেসব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয় সেটার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো।
ফায়ারপ্রম্নফ এরিয়া সেপারেশন ওয়াল : একটি ভবন আয়তনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের ওপর হলে ভবনটিকে দুই অথবা দুইয়ের অধিক রম্নমে বিভক্ত করা হয়। সর্বোচ্চ আট থেকে 10 হাজার বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট (আনুমানিক) এই রম্নমগুলো অগি্নপ্রতিরোধক দেয়াল দিয়ে আলাদা করা হয়।
এই সংরক্ষিত জায়গাগুলোর চারপাশের দেয়াল এবং ছাদ অগি্নপ্রতিরোধ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কয়েকটি বড় রম্নম তৈরি করা হয়। রম্নম তৈরির মূল লক্ষ্য হচ্ছে একটি স্থানে আগুন লাগলে যেন অন্য রম্নমে আগুন বা ধোয়া সহজে না ছড়ায়। বিশেষ করে আগুন লাগলে কালো ধোয়ার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে অনেক মানুষের মৃতু্য ঘটে। স্বাভাবিক সময় এক রম্নম থেকে অন্য রম্নমে যাওয়ার জন্য ঋরৎব-ৎধঃবফ দরজা থাকে, যা কি না সব সময় খোলা অবস্থায় থাকে এবং অগি্নকা-ের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিটি রম্নম বহির্গমন সিড়ির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে।
ফায়ার এসকেপ : বহুতল ভবনে সিড়িগুলো ফায়ার এসকেপ হিসেবে কাজ করে। এলিভেটর বা লিফট জরম্নরি অবস্থায় বন্ধ করে দেয়া হয় এবং এদের ব্যবহার ওই সময় নিরাপদ অপসারণের জন্য অত্যনত্দ ঝুকিপূর্ণ। এছাড়াও এলিভেটর ঝযধভঃ-এর মধ্য দিয়ে ভবনের অন্য তলায় আগুন প্রবেশ করতে পারে। এজন্য সিড়িকে বহির্গমনের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সিড়িগুলোর চারদিকের দেয়ালগুলোকে অগি্নপ্রতিরোধক সামগ্রী দিয়ে সম্পূর্ণ মুড়ে দেয়া হয়।
সিড়ির সঙ্গে যুক্ত দরজাগুলো ঋরৎব ৎধঃবফ হয়ে এবং সব সময় বন্ধ অবস্থায় থাকে। ঞুঢ়ব-ী নামে এক ধরনের জিপসাম বোর্ড একটি বহুল প্রচলিত নির্মাণ সমাগ্রী, যা কি না অগি্নপ্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ঋরৎব ঝঢ়ৎরহশষবৎ : একটি নির্দিষ্ট আয়তনের বেশি ভবনগুলোতে বাধ্যতামূলক ঋরৎব ঝঢ়ৎরহশষবৎ-এর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। এই ব্যবস্থায় একটি ভবনের প্রতিটি প্রানত্দে জরম্নরি অবস্থায় আগুন নেভানোর জন্য পানি নির্ঝরণের ব্যবস্থা থাকে। প্রতি আট/দশ ফিট অনত্দর অনত্দর সিরিলংয়ে ঝঢ়ৎরহশষবৎ যবধফ গুলো পানির পাইপের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
সব পানির পাইপগুলো একটি কেন্দ্রীয় ঋরৎব ঝঢ়ৎরহশষবৎ রাইজারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ঝঢ়ৎরহশষবৎ যবধফ গুলো একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি নির্ঝরণ করতে থাকে আগুন নিভানোর জন্য।
ফায়ার অ্যালার্ম : জরম্নরি অবস্থায় ফায়ার অ্যালার্ম অনেক জীবন বাচাতে সাহায্য করে। একটি 10 তলা ভবনের যে কোনো স্থানে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ভবনের সব তলায় ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে এবং অন্য ফ্লোরের লোকজন যতো দ্রম্নত সম্ভব ভবন থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। প্রতিটি সিড়ির দরজায় এবং করিডোরগুলোতে ঊীরঃ ংরমহ বিকল্প ব্যাটারি চালিত বিদু্যতের মাধ্যমে আলোকিত করা থাকে।
জরম্নরি অবস্থায় বিদু্যৎ না থাকলেও এসব ঊীরঃ সাইনগুলো বহির্গমনের পথ দেখানোর জন্য আলোকিত থাকে।
ফায়ার ড্যাম্পার (ঋরৎব উধসঢ়বৎ) : আগুন লাগলে মেকানিকাল/ইলেকটৃকাল ডাক্ট-এর মধ্য দিয়ে আগুন অন্য জায়গায় অথবা অন্য ফ্লোরে ছড়াতে পারে। এজন্য ফায়ার ড্যাম্পার নামে এক ধরনের ফবারপব ব্যবহার করা হয় যেগুলো জরম্নরি অবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে আগুন সহজে ছড়াতে পারে না।
সিকিউরিটি অ্যালার্ম : আমাদের দেশে কলাপসিবল গেট (ঈড়ষষধঢ়ংরনষব মধঃব) জীবন রক্ষার চেয়ে জীবন হরণের কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ধরনের গেট সাধারণত বাইরে অথবা ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করা থাকে এবং একজন প্রহরীর কাছে চাবি থাকে।
জরম্নরি অবস্থায় চাবি না পাওয়া গেলে ভবনের বাসিন্দাদের একমাত্র বহির্গমন পথটি বন্ধ থাকে। এজন্য উন্নত দেশগুলোতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সদর দরজার ওপর বড় অক্ষরে লেখা থাকে ঞযরং উড়ড়ৎ গঁংঃ জবসধরহ টহষড়পশবফ উঁৎরহম ইঁংরহবংং ঐড়ঁৎং। এছাড়াও মাঝারি ও বড় আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান দরজাগুলো নির্মাণ করা হয় ইৎবধশধধিু হিসেবে, অর্থাৎ জরম্নরি অবস্থায় কয়েকজন লোক ভেতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দরজাগুলো ভেঙে ফেলতে সৰম হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভবনের প্রতিটি বহির্গমন কক্ষের দরজাগুলো সব সময় ভেতর থেকে তালাবদ্ধ থাকে না। যে কেউ অবস্থা বিশেযে যে কোনো সময় বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে।
এই দরজাগুলো বাইরে থেকে চাবি ছাড়া খোলা সম্ভব নয় এবং শুধু জরম্নরি অবস্থায় ব্যবহারের জন্য। তবে কেউ যদি ভেতর থেকে বাইরে আসার জন্য এই দরজা ব্যবহার করে থাকে তাহলে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে অষধৎস বেজে উঠবে।
ফায়ার সার্ভিস একসেস : যে কোনো ভবনের সাইট পস্ন্যান তৈরি করার সময় ফায়ার বৃগেডের গাড়ি যাতে সে স্থানে প্রবেশ করতে পারে এবং গাড়ি ঘোরানোর মতো পর্যাপ্ত জায়গা থাকে সেজন্য স্থানীয় ফায়ার বৃগেড প্রধানের নকশা অনুমোদনে অনুমতি থাকতে হয়। এছাড়াও ওই স্থানে পানি সরবরাহকারী সংস্থার পানির লাইনে পর্যাপ্ত প্রেশার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জরম্নরি অবস্থায় ফায়ার বৃগেডের লোক আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পেতে পারে। প্রধান প্রধান ভবনগুলোর মূল প্রবেশদ্বারগুলোতে কহড়ীনড়ী নামে এক ধরনের তালা-চাবির বন্দোবসত্দ থাকে।
জরম্নরি অবস্থায় শুধু ফায়ার বৃগেডের লোকরা এটি ব্যবহার করে প্রধান দরজা খুলতে সক্ষম হয় যদি যান্ত্রিক কারণে অন্য কেউ দরজা খুলতে না পারে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা : একটি ভবন নির্মাণে ভবনের বাসিন্দা বা ব্যবহাকারীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বাধিক বিবেচ্য। উপরে বর্ণিত বিষয়গুলোর অনেকেই হয়তো আমাদের দেশে নির্মাণ বিধিমালার মধ্যে অনত্দভর্ুক্ত, কিন্তু সেগুলোর সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত না করতে পারলে যে কোনো ধরনের নির্মাণ-বিধিমালা মূল্যহীন। একজন অসাধু বিল্ডিং ইন্সপেক্টর অথবা কর্মকর্তারা অসাধুতার কারণে একটি ত্রম্নটিপূর্ণ নির্মিত ভবন বহুলোকের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন অসাধু ও আইন ভঙ্গকারীদের কঠোর শাসত্দি বিধানের ব্যবস্থা করা।
রাজউক ও রাজউকের মতো সারা দেশের অন্যান্য শহরগুলোতে নির্মাণের সঙ্গে জড়িত দফতরগুলোতে যোগ্য স্থপতি, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগ দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
আমাদের দেশে সাধারণত একটা ভবনের নকশা অনুমোদনের জন্য জধলঁশ ংযববঃ-এর মতো ড্রইং তৈরি করা হয়ে থাকে, যা কি না একটা প্রাথমিক নকশার পর্যায়ে পড়ে। এই প্রাথমিক নকশার ওপরই চূড়ানত্দ অনুমোদন দেয়া হয়, কোনো বিসত্দারিত নকশার (উবঃধরষ ফৎধরিহম) প্রয়োজন হয় না। একটি প্রাথমিক নকশায় শতকরা প্রায় 40 ভাগ ভুলভ্রানত্দি থাকে, যা কি না একটা বিসত্দারিত (ফবঃধরষ) নকশায় দূর করা সম্ভব। যদিও বড় বড় ভবনগুলোর নির্মাণের জন্য অনেক স্থাপত্য ফার্ম ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিসত্দারিত নকশা প্রণয়ন করে থাকে কিন্তু সেগুলোর মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেই।
নিরাপদ একটি ভবন নির্মাণের জন্য শুধু আর্কিটেকচারাল ও স্ট্রাকচারাল ড্রইং যথেষ্ট নয়। সেই সঙ্গে মেকানিকাল, ইলেকটৃকাল এবং পস্নামবিং নকশার অনত্দভর্ুক্তি আবশ্যক। এজন্য রাজউক ভবনে প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা দফতর থাকতে হবে যারা সবাই একটি নকশা অনুমোদনে সম্মতি স্বাক্ষর দেবে। আপাতদৃষ্টিতে আমলাতান্ত্রিক মনে হলেও জনস্বার্থে এগুলোর প্রয়োজন অপরিহার্য।
ভূমিকম্প : ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বিবেচনা করে সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন শহরগুলোকে কয়েকটি সাইসমিক জোনে বিভক্ত করা হয়েছে।
শূন্য থেকে চারের মধ্যে এই জোনগুলোতে তড়হব-ড় এ ভূমিকম্পের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তড়হব-4 এ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। জাপানের টোকিও শহর তড়হব-4, ইনডিয়ার মুম্বাই তড়হব-3, কলকাতা তড়হব-2, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি তড়হব-1, সিঙ্গাপুর তড়হব-1, শ্রী লংকার কলম্বো তড়হব-0 এবং বাংলাদেশের ঢাকা তড়হব-3 তে অবস্থিত। উন্নত বিশ্বে বহুতল ভবন নির্মাণে সাইসমিক বিবেচনা একটি উলেস্নখযোগ্য বিষয়।
ভবন নির্মাণে সম্ভাব্য ভূমিকম্পের ক্ষতিরোধকল্পে বিশেষ স্ট্রাকচারাল ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে।
ভবনের কাঠামোকে ভূমিকম্পে ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রী ও শৈলী ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের প্রায় শতকরা 60 থেকে 70 ভাগ বাড়ি-ভবন লোড বিয়ারিং ইটের দেয়ালে তৈরি। যদিও বিগত কয়েক দশকে বিম-কলাম দিয়ে প্রচুর ভবন তৈরি করা হয়েছে কিন্তু ভবনের ভেতর ও বাইরের দেয়ালগুলো ইটের তৈরি একটি মাঝারি আকারের ভূমিকম্পের এসব দেয়ালগুলো পাশে ভেঙে পড়ে ব্যাপক জীবননাশের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ ভবনই কমবেশি ঝুকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে আছে।
পাচ ও 10 ইঞ্চি দেয়াল ব্যবহারের প্রধান কারণ হচ্ছে সহজলভ্যতা ও সুলভ মূল্য।
এ ধরনের দেয়াল সমানত্দরাল কোনো ধাক্কা (ঞবহংরষব ঝঃৎবংং) বহন করতে পারে না। আমাদের দেশে কাঠের দুষপ্রাপ্যতা ও উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রীর অভাবে সবাই ইটের দেয়াল ব্যবহার করে থাকে। উন্নত বিশ্বে বেশির ভাগ ভবনে বাইরের এবং পাটিশন ওয়ালগুলো ঝঃঁফ দিয়ে তৈরি। বহুল ব্যবহৃত এই ঝঃঁফ কাঠ অথবা গ্যালভানাইজড (এধষাধহরুবফ) ধাতব পদার্থে তৈরি। এটি এক ধরনের লম্বা চতুষ্কোণ আকৃতির লাঠির মতো, যার দুই পাশে জিপসাম বোর্ড দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।
রঙ করার পর বাইরে থেকে দেখলে মোটেও মনে হয় না এটি ইটের দেয়াল নয়। এসব দেয়ালের মধ্য দিয়ে বৈদু্যতিক তার ও অন্যান্য পাইপলাইন সহজে ব্যবহার করা যায়। হালকা ওজনের কারণে এ ধরনের নির্মাণ ভূমিকম্পের জন্য খুব কম ঝুকিপূর্ণ।
কিছু প্রসত্দাবনা
1. বিভিন্ন সময়ে নির্মিত সব বহুতল এবং বড় আয়তনের ভবনগুলোর সেফটি ফিচার পর্যালোচনা করে নতুন করে ঙপপঁঢ়ধহপু ঈবৎঃরভরপধঃব প্রদান করে। একটি ভবনের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দেয়।
2. গার্মেন্ট ও গার্মেন্টের মতো যেসব ভবনগুলোতে অতি দাহ্য পদার্থ বা কাচামাল নিয়ে কাজ করা হয় সেগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত পরিমাণ বহির্গমনের পথ নিশ্চিত করতে হবে।
3. একটি সমন্বিত কেন্দ্রীয় ইঁরষফরহম গধঃবৎরধষ ঞবংঃরহম অমবহপু-এর সৃষ্টি করতে হবে। এই এজেন্সির কাজ হবে যেসব সামগ্রী ভবন নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হবে সেগুলোর গুণগতমান পরীক্ষা করে বিক্রির জন্য ঈবৎঃরভরপধঃব প্রদান করা। স্থাপিত প্রকৌশলীকে তাদের নকশায় সর্বনিম্ন ব্যবহারযোগ্য নির্মাণ সামগ্রীর নাম উলেস্নখ করতে বাধ্যবাধকতা করা।
4. ইলেক্ট্রনিক ডেটাবেজের মাধ্যমে সব অনুমোদিত নকশা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
অনুমোদিত নকশার কপি কমপক্ষে তিনটি পৃথক স্থানে সংরক্ষণ করা, যাতে করে কোনো একটি সংরক্ষণাগারে আগুন লাগলে অথবা কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে অন্য দুটি স্থানে মূল নকশাগুলো অক্ষত থাকে। এছাড়াও ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ নকশার পরিবর্তন সাধন করতে পারবে না।
5. ছোট বড় সব ভবনের চূড়ানত্দ অনুমোদন শুধু বিসত্দারিত নকশার ওপর ভিত্তি করে প্রদান করা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।
6. উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী দেশে তৈরি করার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার থেকে সুবিধা প্রদান করা।
7. বহুতল ভবনগুলোতে বাধ্যতামূলক বার্ষিক নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত করা ও ভবন ব্যবহারকারীদের ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা।
8. নির্মাণের সময় নির্মাণ কাজের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ করা।
আধুনিক প্রযুক্তি ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেও কোনো ভবন শতকরা 100 ভাগ নিরাপদ ও ঝুকিহীন করা সম্ভব নয়। তবে প্রচেষ্টা থাকা উচিত একটি ভবন কতো বেশি নিরাপদ করা যায়। সেখানেই ভবন নির্মাণের যথার্থ সার্থকতা।
লেখক: জহির হক
জহির হক বাংলাদেশ প্রকৌশল ইউনিভার্সিটি থেকে 1981 সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। গত 15 বছর ধরে তিনি আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে স্থাপত্য পেশায় কর্মরত। তিনি লকহিড মার্টিন ও বোয়িংয়ের ভবনের নকশা প্রণয়ন কাজে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার ই-মেইল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।