যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
একদিন তার ঘোড়াটি যখন সাতারাচ্ছিল, রাজকুমার সমুদ্রের পাশে
শুনতে পেল এক অদ্ভুত আওয়াজ তাকে বলছে "এদিকে, আমার দিকে তাকাও!"
ঘোড়াটি তখন নড়েচড়ে উঠে মনযোগী হলো, কিন্তু তার জন্য ডাকটি ছিল না বলে
পানি ছিটিয়ে আবার সাতারাতে লাগলো!
কণ্ঠস্বরটি বলে চললো, "স্রোতরাজার ঘরে জন্ম আমার
রাজকীয় যোদ্ধা, তুমি কি আমার কোমল বাহুলগ্না হবে!"
দাড়াও! উপরে একটা হাত জেগে ওঠে
তুফানের ঢেউয়ের পরে ঘোড়ার শিরে জরানে সিল্কের রশি ধরে
একজন রূপসী তন্বী লবনাক্ত জল সরিয়ে ভেসে উঠলো
উজ্জল সবুজাভ নীলরঙা সমুদ্রঘাসে বিনুনী করা লম্বা চুল নিয়ে
তার দুই গভীর আখিপাতে আবেগের নিখূত তপ্ততা
সমুদ্রফেনিল গাল বেয়ে আকঙ্খার মুক্তোর মত!
রাজকুমার ভাবলো, "এ মুহূর্তের জন্য নিশ্চয়ই আমার জন্ম..."
তারপরে অতিদ্রুত বিনুনী করা চুলের গোছা ছুয়ে
রাজকুমারীকে তার যোদ্ধার বাহুতে চেপে ধরলো
রাজকন্যা ভয়ার্ত আশংকায় তটস্থ হয়ে ছিটালো জল
কিন্তু রাজকুমার কোন কথা না শুনে টেনে নিয়ে গেল সৈকতে
তারপরে সংগীদের উদ্দেশ্যে হাক ছাড়লো
"বৎসেরা! এসে দেখে যাও! ডাকছি তোমাদের!
দেখ, কি মাছ ধরেছি আমি অননত্দ নীলের মধ্যে থেকে!
কিসের অপেক্ষায় আছো! দেরী করো না!"
এই বলে যেই ঘুরলো তার পুরস্কারকে দেখার জন্য
আশ্চর্য! রাজকুমারীর চোখ থেকে নিভে গেছে আগুণ
কেবল পড়ে আছে তপ্ত সোনালী বালুতে পায়ের কিছু ছাপ
সবুজ পদরেখা, মাছের মত, অবিন্যাসত্দ জমিতে
একটা সরল রেখায় ঢাকা সাপের মত
তাও ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে সূর্যের তাপে
কপাল থেকে একটা কোমল বাস্প উড়ে যাচ্ছে ধ্বংষ নিয়ে
চোখে ক্রমশ ভয়ংকর দুঃখের আধার ঘনিয়ে এল
আর দুর্বল হাত মলিন হয়ে গেল বালু আকড়ে ধরায়
সবশেষে ঠোটদুটো নড়ে উঠলো, কিন্তু বোঝা গেল না কিছুই
তারপরে চলে গেলো, রাজকুমার পারে না আগলাতে
কখনও কি পারবে ভুলতে স্রোতের রাজকুমারীকে?
উৎসর্গঃ জামাল ভাস্কর ও তিমুর।
[link|http://en.wikipedia.org/wiki/Mikhail_Lermontov|wgLvBj
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।