ভালোবাসার ঊর্বশী বুকে লেখা আছে এক নাম- সে আমার দেশ, আলগ্ন সুন্দর ভূমি- বিমূর্ত অঙ্গনে প্রতিদিন প্রতিরাত জেগে ওঠে তার উদ্ভাসিত মুখ
পড়ছি, আলী মাহমেদ শুভ'র ব্ল্লগিং। দারুণ একটি ভালো লাগা বই। বারবার পড়তে মন চায়। এখনও শেষ করতে পারিনি। তবে একই বিষয় হয়তো কয়েকবার পড়ে ফেলেছি।
মা'র কাছে ফেরা, বাংলা ভাই, শায়খ রহমান পর্বগুলো, কবি কষ্টটা ছড়িয়ে দাও, নীল পদ্মে, হরতাল- গণতন্ত্রের ছাল, আমার আনন্দ বেদনার অপকিচ্ছা পর্বগুলো, ঘুষ নামের সুখ পাখিটা, ক্রসফায়ার, মহা আবিষ্কার..., আমাদের কোনো পরিচয় নাই! এরকম বেশ কিছু প্রাণবন্ত লেখা। আলী মাহমেদ-এর বিশেষ গুণ হলো পাঠককে ধরে রাখার ক্ষমতা। এ বইটিও তাঁর ব্যতিক্রম নয়।
সামহোয়্যারইনব্ল্লগে শুভ-র লেখার নিয়মিত পাঠক আমি। তাঁর ব্ল্লগের সতেজ গদ্য আমাকে সব সময় টানে।
তবে তাঁর ব্লগের হঠাৎ অপমৃত্যু আমি চাইনি- যা লেখক নিজে ঘোষণা করেছেন। আমরা হয়তো অনেকে বুঝতে পারিনি নয়টি বই যাঁর আগে প্রকাশ পেয়েছে এমন বিরাট লেখকই শুভ। তবে একথা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি বব্লগের অনেক ভক্ত ছিলো তাঁর লেখার। সে বিচারে শুভ নামের ব্ল্লগার পুরোমাত্রায় সফল। আলী মাহমেদ-এর ব্লগ করচা শুভ'র ব্ল্লগিং বইটি সেজন্যই আমাদের খুব আনন্দ দিচ্ছে।
বইটি পড়তে যেয়ে সে জিনিসটি আমার কাছে বারবার মনে হয়েছে তা হলো একজন বড়ো মাপের লেখকের সানি্নধ্যে ছিলাম আমরা। আশা রাখছি অনেকদিন বেঁচে থাকবে তাঁর এই ব্ল্লগকথন। ভবিষ্যতেও তাঁর সাহচর্য পাবো, শুভ না হোক হয়তো অন্য কোনো নামে, অন্য কোথাও।
বইয়ের লেখার সমালোচনা করার দুঃসাহস দেখানোর কোনো মানে হয় না। সব ক'টি লেখাই প্রাণবন্ত, সতেজ, ঝরঝরে।
রূপকধর্মী চরিত্রে উঠে এসেছে জাতীয়, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। জাতীয় চেতনার সুন্দর প্রতিফলন রয়েছে বইটিতে। আছে আত্মকথন, স্মৃতিচারণ, কৌতুকপ্রধান লেখা কিংবা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস। বাংলাদেশের সামপ্রতিকতম মৌলবাদী নাশকতামূলক কর্মকান্ডের নায়করা তাঁর লেখায় এসেছে কঠোর কটাক্ষে, রূপকে। রাজাকার, আল-বদর, পাকিস্তানীদের হাতে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের নৃশংস হত্যার কাহিনীগুলোর বর্ণনা মর্ম স্পর্শ করে; আমাদের মনন, চেতনা জাগ্রত করে।
বইটি আগাগোড়া পড়লে একটি ব্যাপার স্পষ্ট হয় এটা সামহোয়্যারইনব্ল্লগের টেঙ্ট। হুবহু ছাপা হয়েছে শুভ-র ব্ল্লগ থেকে, আলাদা টাইপ করা হয়নি কোনো। ভাষা, বানানরীতিতে শুভ নামের ব্ল্লগারকে খুঁজে পেতে সমস্যা হয় না। ঝকঝকে ছাপা ও সুন্দর প্রচ্ছদের এ বইটি সংগ্রহে রাখার মতো। তবে বইয়ের শুরুতে লেখাগুলোর সূচি থাকলে আরও ভালো হতো।
পছন্দ অনুযায়ী খুঁজে লেখাগুলোকে বের করা যেতো তখন। রাজনীতি, ইতিহাস, আত্মকথন-এর পাশাপাশি দেশের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটগুলো লেখকের জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় আরও বেশি স্থান পেলে ভালো লাগতো। কলেবর, সম্পাদনার কারণে হয়তো বেশ কিছু প্রিয় লেখা মিস করেছি বইয়ে- যেগুলো আগে ব্ল্লগে পড়েছিলাম । বাকি লেখাগুলো নিয়ে পরবর্তীতে দু'একটি বইয়ের আশায় রইলাম লেখকের কাছে। আলী আহমেদ শুভ'র ব্ল্লগিং বইটির বহুল প্রচার কামনা করছি।
01.03.2007
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।