অফিস শেষে বাসায় ফিরছি। বাস স্টান্ডে বসে'র (ম্যাডাম) সাথে দেখা। তিনিও বাসায় ফিরবেন, বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমাকে পেয়ে বললেন এক সাথে যাওয়ার জন্য। বসের কথা তো আর অমান্য করা যায়না, বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।
বাসে প্রচুর ভিড় থাকায় ্লতিনিও যেমন উঠতে পারছিলেননা তেমনি আমিও তাকে রেখে আলাদাভাবে যেতেও পারছিনা। অনেক সময় পার হয়ে গেলে বাসে উঠতে না পারায় তিনি বললেন কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন, এক্ষেত্রেও আমি নীরব, হাঁটা শুরু হল সাথে শুরু হল গল্প। এ বিষয় সে বিষয় বিবিধ বিষয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাল শ্রোতা হিসাবে অফিসে আমার একটি গূণ আছে। এক্ষেত্রে সেটাই করলাম।
শুধু শুনে গেলাম কিছু বললামনা। হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেইটের সিজান পয়েন্টের সামনে পর্যন্ত চলে গেলাম। সেখানেও বাসে তেমন কোন সুবিধা করতে না পারায় তিনি রিঙ্া করে সংসদ ভবন পর্যন্ত যাওয়ার জন্য বললেন। আমি তো বরাবরই নিরুপায়, যেহেতু সে বলছে সেহেতু আর না করলাম না। রিঙ্া করে যাচ্ছি এবারও শুরু হল তার কথা।
বলে রাখা ভাল তিনি বিবাহিত কিন্ত এখন আলাদা মানে তার স্বামীর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। যাই হোকা রিঙ্ায় যেতে যেতে এক পর্যায়ে শুরু হল তার এককীত্ব জীবনকে নিয়ে কথা। আমি বুঝতে পারছিলাম না তিনি কেন এসব আমার সাথে বলছেন। তারপরও শুনতে হবে তাই শুনছিলাম আর মাঝে মাঝে হ্যা, হূ, হ্যা করে যাচ্ছিলাম। এক সময় সংসদ ভবনের সামনে রিঙ্া থেকে নামলাম, রিঙ্ার ভাড়া দিতে চাইলে তিনি না করে নিজেই ভাড়া দিলেন।
তারপর কিছুক্ষন সেখানে বসলাম তার জীবনের গল্প চলছিল তখনও। একাকী জীবন, স্বাধীনতা চেয়েছিল জীবনে তাই বনিবনা হয়নি, বন্ধুবান্ধব ছিল অনেক, শ্বশুর, শ্বাশুরী মেনে নেয়নি বিয়ের প্রথম দিন থেকে, তাই তাদের থেকে স্বাামীকে নিয়ে আলাদা থাকত। তারপরও স্থায়ীত্ব হয়নি। এখন একা থাকে, চাকরীটা সে জন্য নেয়া, নিজে কোনরকম বেঁেচ থাকা, স্বাামী বেচারও তাকে মারধর করত, মানসিক নির্যাতনও করত। এছাড়াও অনেক কথা, সেগুলো আর লিখলাম না।
এ কথা গুলো যখন বলছিল ততক্ষনে তার চোখে জল এসে গেছে।
শেষের কথাটুকু বেশ ভালভাবে খেয়াল করলাম, সে বলছিল, তার বলার ভঙ্গিমাটা এমন ছিল " তোমাকে যে কেন আমি আমার জীবনের এত কথা বললাম আমি নিজেও বুঝতে পারছিনা"
আমি নিজেও বুঝিনি সে যে কেন এত কথা আমাকে বলল !!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।