লেখাগুলো এলোমেলো হয়েই থাকুক এখানে।
ভেতো বাংগালীর বুদ্ধি যে আটা-খেকো পাকিস্তানীর চেয়ে বেশী ছিল, তার প্রমাণ অনেক বছর আগেই ট্রেনের চেন টানতে গিয়ে হয়ে গেছে। আরো কয়েকটা জাতিকে ধোকা দেয়ার মজার কিছু ঘটনা শোনার পর ইচ্ছে হল, সবার সাথে শেয়ার করার। তিনটি ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে, প্রাবাসী বাংলাদেশীদের কাছেই শোনা।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের সত্য তিনটি ঘটনা, মোটামোটি যেরকম শুনেছি, সেরকমই লেখার চেষ্টা করলাম:
1।
ঘটনাস্থল অস্ট্রেলিয়াতে কোন এক যাত্রীবাহী বাস। নায়ক নবাগত এক বাংলাদেশী ছাত্র। বাসে চড়েছেন তিনি টিকেট ছাড়াই। মাঝরাস্তায় হঠাৎ টিকেট চেকারের আবির্ভাব। "Please show me your ticket"।
নায়কতো টাকা বাচানোর আশায় টিকিট কেনেন নাই, আর চেকার আসতে পারে, এটাও আন্দাজ করেন নাই। কিন্তু এখন 50 ডলার জরিমানা আর ইজ্জত হারানোর বিপদ টের পেতে থাকলেন।
কি করা যায়? কিছুক্ষন হু হা করতে করতে মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। ভাব ধরলেন, ইংরেজী পারেন না। অনেক সময় নিয়ে, ভেংগে ভেংগে উচ্চারণ করলেন, "........me.... people.......no english........." চেকার বেশ কিছুক্ষন বলার চেষ্টা করেলেন, টিকেট না কিনে বাসে চড়া উচিত না।
কিন্তু ব্যর্থ হলেন বক্তব্য বুঝাতে। সব কথার একই উত্তর: "........me.... people.......no english........." । ভাবলেন, টিকেট কেনাটা হাতে কলমে দেখিয়ে দেয়া দরকার, যেন ভবিষ্যতে এই ভুল আর না করে। বাসের ভেতরের টিকিট কাটার যন্ত্রটির কাছে নিয়ে নায়ককে বললেন, পয়সা ঢুকাতে। পাশে তখন উৎসাহী কিছু যাত্রীর ভীড়।
তারও টিকেট কাটা শেখাতে সাহায্য করতে চাচ্ছেন। ততক্ষনে বাস প্রায় গন্তব্যের কাছাকাছি চলে এসেছে। নায়ক তখন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এতক্ষন যখন টিকিট কেনেননি, বাকি সামান্য পথের জন্য কেনার কোন মানে হয় না। আভিনয় চালিয়ে গেলেন বাকি পথটাও।
এক গাদা অস্ট্রেলিয়ান-কে বোকা বানিয়ে বীরদর্পে পৌঁছালেন গন্তব্যে।
2। জার্মানীর নুর্নবার্গ প্রবাসী এক বাংলাদেশীর গল্প। ভদ্্রলোক প্রায় সারাদিন পানির বদলে বিয়ার খান। গাড়ি চালাতে গিয়ে সন্তানের অত্যাচারে অতিস্ট হয়ে মুখে ঢেলে দিলেন একটু বিয়ার।
বাচ্চা ওতেই কাত। গভীর ঘুমে ঢলে পড়ল সে। এর কিছুক্ষন পর রাস্তায় পুলিশ গাড়ি থামাল, এবং নায়ককে বলল এলকোহল পরীক্ষা দিতে (breath test)। নায়ক যথারীতি ধরা। গাড়িতে তিনি কয়েক ক্যান বিয়ার খেয়েছেন।
নিঃশ্বাস পরীক্ষায় পজিটিভ আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নায়ক দৃঢ়পণ, বিনা যুদ্ধে নাহি দেব....। মাথা তখনো কাজ করছে তার। পুলিসের সাথে তর্ক জুড়ে দিলেন, তিনি খুব সামান্য বিয়ার খেয়েছেন, ওটুকুতে টেস্ট রেসাল্ট পজিটিভ আসার কথা না। তর্কের এক পর্যায়ে বলে ফেল্লেন, আমার বাচ্চার ব্রিথ টেস্ট করেন, দেখি কি রেসাল্ট হয়।
পুলিস ভদ্্রতা করে বাচ্চার ব্রিথ টেস্ট করল। কিন্তু এ কি? চার বছরের বাচ্চা, তারও এলকোহল টেস্ট পজিটিভ? পুলিস বেচারা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন ন।
আর আমাদের বাংলাদেশী ভাই তার সেরা চালটা চাললেন তখনই। বললেন, তোমাদের আগেই বলেছিলাম, তোমাদের টেস্ট ভুল হচ্ছে। আমি নাহয় দু চুমুক খেয়েছি, কিন্তু আমার বাচ্চা, সেও পজিটিভ? আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি, তোমাদের টেস্ট মেশিনটাই নষ্ট।
ওটা ঠিক করে তারপর ডিউটেতে নেমো। এভাবে অকারণে মানুষকে হেনস্থা করো না।
পুলিশ ভাই তার ক্রিতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে বিদায় জানালেন বাংলাদেশী ভাইকে: "tschuss"।
আবারো জয়ী হলো বাংগালীর বুদ্ধি।
3।
সর্বশেষ ঘটনা দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দেশ আমেরিকাতে। ট্রাফিক আইন ভংগ করে সাথে সাথেই পুলিসের হাতে পড়লেন এক দেশী। পুলিস গাড়ি থামার সংকেত দিল, বিপদ বুঝে দেরী না করে গাড়ী থামালেন বাংগালী। টিকিট খেতেই হবে মনে হয় এবার। কিন্তু মাথায় সুড়ংগের শেষে আলোর মত একটু বুদ্ধি খেলে গেল।
পুলিসকে বল্লেন, দেখ ভাই, আমি জীবনে কোনদিন ট্রাফিক আইন ভাঙ্গি নাই। আজকে এই নিয়ম ভাংলাম শুধু তোমাদের কারণে। পুলিসকে আমি বড় ভয় পাই, দেশে থাকতে পুলিস নিয়া আমার মনে যেই ভয় কাজ করত, তা আজো ভুলি নাই (বাংলাদেশী পুলিস সম্বন্ধে এরাও মনে হয় কম বেশী ধারণা রাখে)। তাইতো পুলিশ দেখলেই পালপিটিশন বাইড়া যায়, আর সব কাজে ভুল করি। তোমাগোরে একখান রিকোয়েস্ট, আমারে যা খুশি শাস্তি দেও, কিন্তু আগে আমার কাছ থেকা তোমরা দুরে সর, নইলে আমার ব্লাড প্রেসার হাই হইয়া কিছু একটা হয়ে যাইতে পারে।
পুলিশ তার অবস্থা বুঝল, দেখল, ট্রাফিক আইন ভাঙ্গাটা আসলে তার অপরাধ না। পুলিশ ফোবিয়ার কারণেই এই সমস্যাট হয়েছে। টিকিট না দিয়া বরং পুলিস যে জনগণের বন্ধু, এই রকম দুই একটা স্বান্তনা দিয়ে বিদায় হলো পুলিস ভাইরা। সব জাতিকে টেক্কা দিয়ে এবার বিশ্ব মোড়ল আমেরিকাকেও হারিয়ে দিল বাংলাদেশ।
বুদ্ধির জন্য কোন র্যাংকিং থাকলে ওখানে যে আমরা টপ-এ থাকবো, এই ব্যাপারে আমার কিন্তু কোন সন্দেহ নাই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।