আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলার ঈদ-7

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

ঈদ-উল-ফিত্র। 'ফিত্র' শব্দটার মানে আমি অনেক খুঁজেও পেলাম না মানে আমার কাছে যা বই-পত্তর আছে 'ফিত্র' বা ফিত্রা নিয়ে আর সবই লেখা আছে ( মানে নিয়ম-কাকুন আর কি ), নেই যা তা হচ্ছে, শব্দটার অর্থ। গুগলি করলে হয়ত পাওয়া যাবে, তবে আমি বেশ একটু অলস আছি।

এখন এই মানে খুঁজতে আর ভাল্লাগছে না। মোদ্দা ব্যপারটা হল , ঈদের দিনে একটা ছোট্ট দান করতে হয়। সেই দানেরই নাম 'ফিত্র' আমাদের মুখে মুখে যা এখন হয়ে গেছে 'ফিত্রা' বা ফেত্রা। আর সেই থেকেই এই ঈদের নাম ঈদ-উল-ফিত্র। রোযার ঈদ আমরা বলি বটে, তবে এর পোষাকী নাম হল এই।

ও হ্যা, ঁফিত্র শব্দটার মানে খুঁজতে গিয়ে আরেকটা ব্যাপার জানলাম, তা হচ্ছে, রমযানের সাথে ফিত্র'এর কোনও যোগাযোগ নেই। 'ফিত্র' বা ফিত্রা একটি সম্পূর্ণ আলাদা ইবাদত ( পড়ুন , দানরূপে প্রার্থনা) ( বেহেশতী জেওর, প্রথম পর্ব, পৃষ্ঠা-ন : ৩৪৪) । ফিত্রা দেওয়া সবার জন্যে প্রযোজ্য নয়। মানে যাদের কাছে ঠিকঠাক পয়সা কড়ি আছে তাদের উপরেই এই 'ইবাদত' ( পড়ুন দান ) বাধ্যতামুলক। যারা যাকাত নেয় তারা ফিত্রাও নিতে পারে।

একদমই যারা নিম্নবিত্ত মূলত তারাই এই দান নেন। একটু বুঝিয়ে বলি, মাথা গুনে দান করতে হয়, সোয়া দু কিলো সোনালী গম বা যব'এর দাম যা হয় সেই পরিমান টাকা একজনের নামে ফিত্রা হিসেবে দেওয়া হয়। যেমন এবছর সেটা ছিল ২৭টাকা (প্রতি বছরই গমের দামানুসারে এই টাকাটা বাড়ে) । গম বা যবএর বদলে চাল, ছোলা বা যবএর ছাতু ও দেওয়া যায় ফিত্রা হিসেবে, আর এই জিনিসগুলোর মূল্য অনুসারে কোনটা কতখানি দিতে হবে তাও বলে দেওয়া আছে ঐ বইয়ে। বাংলাদেশে কিংবা এখানে, এই কোলকাতায়, সোয়া দু কিলো গমের মূল্যই দেওয়া হয় ফিত্রা হিসেবে।

একজনের ফিত্রা একজনকেই দেওয়া হয়। ঈদের দিন 'সুবেহ সাদিক' ( সূর্যদয়েরও আগে দিনের আলোর আভাস যখন মাত্রই আকাশের বুক চিরে দেখা দেয়, ঐ সময়টাকে 'সুবেহ সাদিক' বলে) পরে যে শিশু ভূমিষ্ট হয়েছে তার ফিত্রাও দিতে হয়। আর এই সুবেহ সাদিকের আগে যিনি মারা গেছেন তার ফিত্রা মাফ । রচনা লিখছি বলে মনে হচ্ছে নিজেরই ! তো ঈদের নামাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথেই পুরুষেরা ফিত্রা দিয়ে আসেন। ঈদাগহের ময়দানে ইমাম ঘোষণা করে দেন, এবছর ফিত্রা কত ঠিক হয়েছে।

সেইমত দান সেরে বাড়িতে ঢোকা। অর্থাত্ কীনা যাঁর বাড়িতে আজ পোলাও মাংস, সেমুই হবে না তাঁদের ব্যবস্থাও হয়ে গেল ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।