পচা কথা বলি। আবালেরা অফ যাও।
তিনি মনের কষ্ট কাহাকেও বলিতে না পারিয়া গুম হইয়া বসিয়া রহিলেন। ভাবিতে লাগিলেন, ছাগুরামের মতো ত্রিভূজ হইতে পারিলেই ভালো ছিলো। লোকে গালাগালি করিলেও কোন বড় কাজ দিয়া বাটে ফেলিতে সাহস করিতো না।
তাছাড়া আজ তাহার হাতে তিনটি দন্ড ধারণের দায়িত্ব আসিয়া চাপিয়াছে। এতদিন বহুকষ্টে তিনি ঈশ্বরপ্রদত্ত দুটি হাতে দুটি দন্ড নিয়া চলাচল করিয়াছেন, সেই পরিশ্রমে একবার তাহার হৃৎপিন্ড উষ্টা খাইয়া মরিতে চলিতেছিলো, নাকবোঁচা চীনা ডাক্তার ওষুধ ঠুকিয়া যমকে খেদাইয়াছে। এখন আবার তিন লম্বর দন্ডটি ধরাই দিলো মান্নু সদাগর। ত্রিভূজ না হইয়া গতি নাই।
লোকজনকে উপদেশ তিনি বহুই বিলাইয়াছেন, কিন্তু উপদেশ বিলানোকে জীবিকা করেন নাই।
উপদেশ মাগনা বিলাইতেই মজা। আগে ভগিনেয় ভ্রাতুষ্পুত্রদের ফুটবল খেলার সময়ে তাহাদের ডাকিয়া ঘন্টাব্যাপী নানা উপদেশ বিলাইতেন, সদা সত্য কথা বলিবে, সৎ পথে চলিবে, তাহার গা মোচড়াইতো, দেখিয়া ভালো লাগিতো। উপদেশ ঐভাবে দিয়াই না মজা। কিন্তু মান্নু সদাগর আজ তাহাকে উপদেশের পাইকার বানাইয়া ছাড়িয়াছে। শয়ে শয়ে লোককে এখন উপদেশ দিয়া তাহাকে সামলাইতে হবে।
তিনি খোনা গলায় গান ধরিলেন, আগে কী সোন্দর দিন কাটাইতাম ... কিন্তু নিজের কানেই বেসুরা ঠেকিলো। কী কুক্ষণেই যে তখন সম্মত হইয়াছিলেন, ইহাদের কুপ্রস্তাবে। স্ত্রী বলিয়াছিলো, ওগো, তুমি মাটি ঘাঁটো, আমি পোকা কাটি, ইহা করিয়াই কি দিন ফুরাইবে? বড় একটা বাড়িতে হাত পা ছড়াইয়া কি থাকা হইবে না? স্ত্রীবুদ্ধি সর্বনাশা, তাহারই নিরন্তর পীড়াপীড়িতে অতিষ্ঠ হইয়া অবশেষে তিনি রাজি হইয়াছিলেন। দুষ্টরা তাহাকে দিয়া কম উৎপাত করাইয়া লয় নাই। উচ্চশিক্ষিত লোক হইয়া তাহাকে কয়েকটি অনৈতিক কাজে সায় দিতে হইয়াছে।
হায়রে কপালের মুদ্রণ।
আজ সারাদিন তিনি অনেক বাঘা বাঘা পাজির সহিত বাক্যালাপ করিয়া হেদাইয়া পড়িয়াছেন। একেকজনের একেক আব্দার। কেহ বলে নমক খাইয়াছেন ভালোয় ভালোয় ঠমক দ্যাখান, নতুবা ঝামেলায় পস্তাইবেন। কেহ বলে আমার বচপানকা দোস্ত আবুল কয়েদিকে আপনার উপদেশের ব্যবসায় পার্টনার করিয়া লউন, তাহার কুবুদ্ধিদানের দক্ষতা ঈর্ষণীয়।
কয়েদি নাম শুনিয়াই তিনি ঘাবড়াইয়া গিয়াছেন, প্রস্তাবক হাসিয়া বলিয়াছে হাঁ, উহাদের বংশের পুরুষেরা সকলেই কয়েদখাটা বনেদী, আবুলও ছোটকালে খাটিয়াছে কয়েকবছর। একজন আসিয়া নৃশংসভঙ্গিতে আঙ্গুল ফুটাইয়া কহিয়াছে, ঈশ্বরের রাস্তায় চলিতেছি আমরা, ওভারটেক করিতে গেলে একদম চাপা খাইয়া মরিবেন। শুনিয়া তাহার বক্ষের আরোপিত যন্ত্রপাতি বিকল হইবার যোগাড়। বউ তো বড় বাড়িতে থাকিয়া মহানন্দে আছে, এদিকে তাহার প্রাণটি লুটিয়া লইলো।
এখন তাহাকে নিজের ব্যবসায় আরো দশটিকে টানিতে হইবে।
কোন দশটি, তিনি বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছেন না। এক এক দুষ্ট আসিয়া এক এক কথা বলে। কেহ দাগাইয়া দেয় দাগীদের নাম, কেহ ফুসমন্তর দেয় ততোধিক ওঁছার ঠিকুজি। তিনি যে এখন কী করিবেন বুঝিতে পারিতেছেন না।
সখেদে তিনি গাহন, মানুষ যেন কোরো না আমায়, ত্রিভূজ করে দাও আমায় ত্রিভূজ করে দাও ...।
স্রষ্টাও যেন ব্যঙ্গ করেন তাহার সহিত, টিভিতে ডিসকভারি চ্যানেলে এক ছাগু তারস্বরে বলিয়া ওঠে, ম্যাঅ্যাঅ্যা ...।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।