মুক্ত মনের মানুষের জন্য
আমাদের দেশে দুই শ্রেনীর লোক আছেন যারা বাথরুমে গিয়ে গান গেয়ে থাকেন। একটা হচ্ছে ঐচ্ছিক গায়ক এবং আরেকটা হচ্ছে আবশ্যিক বা বাধ্যতামুলক গায়ক! প্রথম শ্রেনীর গায়কেরা বাথরুমে ঢুকে গান গেয়ে গলার ক্ষমতা পরীক্ষা করেন, গানের চচর্াটাকে বহাল রাখেন। তাছাড়া সবাইকে তিনি জানাতে চান তিনিও গানের জগতে বিখ্যাত হতে পারতেন। কিন্তু তথাকথিত গায়কদের পেটে লাথি পড়বে বলেই কেবল তিনি গানের জগতে আসছেন না। মানবতা বলে একটা কথা আছেতো! আর দ্বিতীয় শ্রেনীর গায়কেরা বাথরুমে গিয়ে গান গেয়ে থাকেন কারণ তাদের বাসার বাথরুমের দরজা নেই।
বাথরুমে একজন থাকাকালীন সময়ে হঠাৎ কেউ যাতে ভুল করে সেখানে ঢুকে না পড়েন সে উদ্দেশ্যেই এ শ্রেনীর গায়কেরা গান গেয়ে থাকেন! তবে গান যে উদ্দেশ্যেই গাওয়া হোক না কেন তারা যে তাদের গলাটাকে একটু সেধে নিচ্ছেন ভবিষ্যতের কোন ক্লোজ আপ ওয়ান এর মত কোন প্রতিযোগিতার জন্য তাতে কোন সন্দেহ নেই কিংবা থাকতে পারে বলেও মনে হয়না!
আসলে প্রতিভার উন্নতি সাধন মনে হয় বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে। বাথরুমের ভিতর বসে যে কোন সাধনা করলে তার সফলতার চান্স মনে হয় একটু বেশীই! কথিত আছে মহাত্দ্বা গান্ধী প্রতিদিন বাথরুমে গোছল করার সময় একটি করে গীতা মুখস্থ করতেন এবং এভাবেই তিনি পুরো গীতাখানি মুখস্থ করেছিলেন। তাছাড়া আমাদের দেশের একজনতো এ ব্যপারে মনে হয় রেকর্ড করে বসতে পারেন! তিনি নাট্যাভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক, পরিচালক ও কলাম লেখক আবুল হায়াত। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে তার অবসর মিলেনা বললেই চলে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, তিনি প্রতিদিন সকালে ঘন্টাখানেক সময় বাথরুমে কাটাতেন ( এখনো কাটান কিনা জানা সম্ভব হয়নি)।
এ সময়টাতে তিনি বিভিন্ন বই পত্র পড়ে সময় কাটাতেন। শোনা যায় বাথরুমে বসেই তিনি রবীন্দ্র রচনাবলী সহ আরো অনেক কালজয়ী বই পড়েছেন!
এ পর্যন্ত পড়ার পর দয়া করে লেখার বাকী অংশটা পড়ে শেষ না করে উঠবেন না, কেউ ছুটবেন না বাথরুমের দিকে। কারণ ইতোমধ্যে আপনারা যারা বাথরুমের প্রেমে পড়ে গেছেন তাদের জন্য একটা দুঃসংবাদ আছে! সেটা হচ্ছে বাথরুম সবসময়ই সবার জন্য সফলতা বয়ে আনেনা। রেকর্ড ঘেটে দেখা যায় এ পর্যন্ত প্রায় ডজনখানেক বিখ্যাত ব্যক্তি মারা গেছেন বাথরুমের ভিতর। তাদের মধ্যে ফ্রান্সের রাজা তৃতীয় হেনরীকে হত্যা করা হয়েছিল বাথরুমে।
অবশ্য হেনরীর হত্যাকারীকেও ছুরিকাহত করে মেরে ফেলা হয়েছিল। তাছাড়া পঞ্চাশের দশকে আমেরিকার সেরা কমেডিয়ান লেননি ব্রুসও মারা গিয়েছিলেন বাথরুমে। বেশী মাত্রার হেরোইন খেয়ে তার এ অবস্থা হয়েছিল। বাথরুমে আরো মারা গিয়েছিলেন রক এন্ড রোলের রাজা এলভিস প্রিসলি। মাত্র 42 বছর বয়সে তিনি মারা গিয়েছিলেন মাত্রাতিরিক্ত নেশা করার কারণে।
এক্ষেত্রে স্কটল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমস-এর মৃত্যুটাই মনে হয় সবচে করুণ! জেমস তার প্রাসাদে অনেকগুলি জায়গা বানিয়ে রেখেছিলেন বিপদের সময় পালিয়ে থাকার জন্য। তারই একটি ছিল বাথরুমের ভেতর। একদিন বিপদের মূহুর্তে রাজা প্রথম জেমস তার প্রণয়ীনি ক্যাথোরিন ডগলাসকে নিয়ে সেখানে লুকিয়েও ছিলেন। কিন্তু শেষ রা তার হয়নি। বাথরুমের দরোজা ভেঙ্গে হত্যাকারী তাকে খুন করে।
আর তার বুকে হত্যাকারী বসিয়েছিল ষোলটি আঘাত!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।