আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিকেটারের আগুনে দগ্ধ দুই চালকও মারা গেলেন

জামায়াতের হরতালে গাজীপুর ও কুমিল্লায় পিকেটারদের দেওয়া আগুনে পুড়ে দুই চালক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর আহত দুই চালক ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেলেন। নিহতরা হলেন- গাজীপুরে ছোড়া গান পাউডারের আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসচালক নজরুল ইসলাম (৩৫) এবং কুমিল্লায় ট্রাকচালক সেকান্দার বেপারী (৪০)। গতকাল সকাল ৬টার দিকে নজরুল ও সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেকান্দার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। নজরুলের শরীরের ৬৫ শতাংশ ও সেকেন্দারের ৫৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

ঢাকা মেডিকেল ও গাজীপুর সূত্র জানায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর হরতালে গাজীপুর থেকে আজিমপুরে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন নজরুল। গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় জামায়াত-শিবিরের পিকেটাররা তার গাড়িটি প্রথমে ভাঙচুর করে। নজরুলের নিজের গাড়ি নিজেই চালাতেন। এ কারণে গাড়ির মায়া ছাড়তে না পেরে পিকেটারদের গাড়িটি না পোড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু পিকেটাররা তার সে অনুরোধ অগ্রাহ্য করে গান পাউডার দিয়ে গাড়িটি জ্বালিয়ে দেয়।

জ্বালিয়ে দেয় নজরুলকেও।

নিহত নজরুলের স্ত্রী সাবিনা বেগম জানান, তার স্বামী নজরুল ঢাকা-গাজীপুর রুটে ২৭ নম্বর ভিআইপি যাত্রীবাহী বাস চালাতেন। তিনি গত ৪-৫ মাস আগে গাড়িটি ১০ লাখ টাকা দামে ধারদেনা করে ক্রয় করেন। দেনা কিছু শোধ করা গেলেও মোটা অঙ্কের টাকা এখনো বকেয়া রয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বামী হত্যার বিচার চেয়েছেন।

সাবিনা স্বামীসহ দুই মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর বড়বাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। নজরুলের বাবার নাম শামসুল হক। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. আবদুল বাতেন জানান, এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর জয়দেবপুর থানার এসআই মো. জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে জামায়াত-শিবিরের অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল, কুমিল্লা ও শরীয়তপুর সূত্র জানায়, জামায়াতের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সেকান্দার পণ্যবোঝাই ট্রাক নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমজাদের বাজার এলাকায় হরতাল সমর্থনকারীরা ওই ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ট্রাক চালক সেকান্দার অগ্নিদগ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েনেওয়া হয়।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। জানা গেছে, সেকান্দারের বাবার নাম মো. ইয়াছিন বেপারী। তার বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার উত্তর কেবলনগর গ্রামে। তিনি রাজধানীর শ্যামপুর বালুরমাঠ এলাকায় স্ত্রী রুমা, ছেলে হাবিবুর রহমান ও মেয়ে আয়েশাকে নিয়ে বসবাস করতেন। সেকান্দারের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়ি উত্তর কেবলনগরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তার বৃদ্ধ মা আলেকজান বিবি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের ব্যবহৃত জিনিসপত্র বুকে নিয়ে আহাজারি করছেন। এ হত্যার বিচার কার কাছে চাইব বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই রুহুল আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে জামায়াত-শিবিরের অজ্ঞাত আরও ৪৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.