ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর নবী-
রাসূলগণ অত্যন্ত স্বাভাবিক
পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। প্রধানত
মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন
সাধনের দিকে লক্ষ্য রেখেই
তাঁরা তাঁদের প্রয়াস চালিয়েছেন।
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহও
(ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
নিরলসভাবে চালিয়ে গেছেন ‘আদ্
দাওয়াতু ইলাল্লাহ’র কাজ। আর তাঁর
আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন
মাক্কার সত্য-সন্ধানী ও সাহসী একদল
যুবক-যুবতী। তিনি এঁদেরকে সংঘবদ্ধ
করে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যতিক্রম
ব্যক্তিত্ব- ইসলামী ব্যক্তিত্ব-
রূপে গড়ে তোলেন।
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের প্রায়
অধিকাংশ ইসলাম-বিরোধী হওয়ায়
মাক্কাবাসীরা গণ-হারে তাঁর
আহবানে সাড়া দিতে পারেনি।
ফলে মাক্কায়
গড়ে ওঠেনি ইসলামী গণ-ভিত্তি।
পক্ষান্তরে ইয়াসরিবের
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অধিকাংশ
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আহবানে সাড়া দিয়ে তাঁর
প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত
বাড়ান। নেতৃস্থানীয়
ব্যক্তিরা ইসলাম গ্রহণ করায় সাধারণ
মানুষের ইসলাম গ্রহণ করা সহজ
হয়ে যায়। ফলে দারুণ উৎসাহ
উদ্দীপনা নিয়ে এগিয়ে আসে ইয়াসরিবের
বিপুল সংখ্যক মানুষ।
গড়ে ওঠে ইসলামী ভাবধারা পুষ্ট গণ-
ভিত্তি, ইসলামী সমাজ-সভ্যতা-
সংস্কৃতি বিনির্মাণের বুনিয়াদ।
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক
ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম ও সরকার
গঠনের সংগ্রাম একটির পর একটি স্তর
অতিক্রম করে সামনে এগিয়েছে।
আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন আলকুরআনের
সূরা আলফাত্হে মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিচালিত
সংগ্রামের স্বাভাবিক বর্ধনের
একটি চমৎকার উপমা পেশ করেছেন।
আল্লাহ বলেন,
ﻛَﺰَﺭْﻉٍ ﺍَﺧْﺮَﺝَ ﺷَﻄْﺌَﻪ ﻓَﺎﺯَﺭَﻩ ﻓَﺎﺳْﺘَﻐْﻠَﻆَ ﻓَﺎﺳْﺘَﻮﻯ ﻋَﻠﻰ
ﺳُﻮْﻗِﻪ .
সূরা আল ফাতহ \ ২৯
‘‘এ এমন এক কৃষি যা অংকুর বের করলো,
অতপর শক্তি সঞ্চয় করলো, অতপর মোটা-
তাজা হলো এবং অবশেষে নিজ
কান্ডের ওপর
দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে গেলো। ’’
এই আয়াতাংশে মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহর (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিচালিত
আন্দোলনের ক্রমবিকাশ ও
প্রতিষ্ঠা লাভের চারটি স্তরের
কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
যথা :
১. অংকুর বের করা,
২. শক্তি সঞ্চয় করা,
৩. মোটা-তাজা হওয়া,
৪. কান্ডের ওপর
দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে যাওয়া।
‘অংকুর বের করা’র অর্থ হচ্ছে আল্লাহর
দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সূচনাকরণ।
‘শক্তি সঞ্চয় করা’র অর্থ
হচ্ছে আহবানে সাড়া দানকারী ব্যক্তিদেরকে সংঘবদ্ধ
ও সংশোধিত করে সাংগঠনিক
শক্তি অর্জন।
‘মোটা-তাজা হওয়া’র অর্থ হচ্ছে কর্ম-
এলাকার সর্বত্র প্রভাব সৃষ্টি ও গণ-
মানুষের সমর্থন লাভ। আর গণ-মানুষের
সমর্থন লাভেরই আরেক নাম গণ-
ভিত্তি অর্জন।
‘কান্ডের ওপর
দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে যাওয়া’র অর্থ
হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অর্জন।
প্রকৃতপক্ষে, এটাই
হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের স্বাভাবিক
পদ্ধতি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।