শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মানহানি, অপবাদ ও মিথ্যাচারের জন্য সাংবাদিকের বিচারের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট এবং ম্মারকলিপি প্রদান করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর ১ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত শিক্ষার্থী নিজ বিভাগের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। প্রথম আলোর সাংবাদিক শাবি প্রতিনিধি মুন্সী মিজবাহ উদ্দিন ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জামাত-শিবিরের অভিযোগ আনায় তার শাস্তির দাবি করে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মুন্সী মিজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের(সিএসই) সহযোগী অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু আউয়াল মো. সোহেব ও রুহুল আমিন।
কমিটি আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিবে বলে জানান কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শাহিদুর রহমান। জানা যায়, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগের প্রধান তাবলীগ জামায়াতের অনুসারী অধ্যাপক শাহিদুর রহমান কে ছাগু বলে আখ্যায়িত করেন মুন্সী মিজবাহ উদ্দিন। এর প্রতিবাদে বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান তুলে ধরলে মিজবাহ উদ্দিন ১৮ জন হিন্দুসহ ছাত্র শিক্ষকদের নাম সম্বলিত শিবিরের নামের তালিকা প্রকাশ করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী চিন্ময় সরকার ও সুদীপ্ত কর বলেন, ফেইস বুকে মিজবাহ উদ্দিন নকল ডকুমেন্টের মাধ্যমে আমাদের (১৮ জন হিন্দুসহ) শিবির বানিয়ে ‘মুখশ উন্মোচন-১’ নামে সিএসই ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করে। তাই আজকে আমাদের অবস্থান কর্মসূচী মিজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
তার এই তালিকা প্রকাশের পেছনে প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হাত রয়েছে। অবস্থান কর্মসূচি চলার সময় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, যে এই কাজটি করেছে সে আজগুবি নকল ডকুমেন্ট ছড়িয়ে আমাদের সবাইকে এক ধরনের গালি দিয়েছে। সিএসই বিভাগের ছাত্র শিক্ষকদের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। যেহেতু ঘটনার সাথে মিজবাহ উদ্দিনের নাম উঠে এসেছে তাই অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া আমি ব্যক্তিগত ভাবে প্রথম আলোর সম্পাদককে বলব বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার এমন একজন প্রতিনিধি রয়েছে যে কিনা শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
আপনি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কর্মসূচী চালাকালীন শিক্ষার্থীরা মুন্সী মিসবাহ উদ্দিনকে ‘আদু ভাই’ এবং শিবিরের চর আখ্যায়িত করে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও প্রকাশ্যে ছাত্র-শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। এর আগে মুন্সির বিরুদ্ধে শাবির বন্ধু সভার সভাপতি থাকাকালে তার বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এনে উপাচার্য, প্রথম আলো বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগে স্মারকলিপি প্রদান করে বন্ধুসভার কার্যকরী সদস্যরা । মিসবাহ উদ্দিন নয় বছর ধরে অধ্যয়নরত থাকালেও এখনো ¯œাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারে নি। ক্যাম্পাসে সে আদু ভাই হিসেবে পরিচিত বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
মিসবাহ উদ্দিনের পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়, জামাতী নিয়ন্ত্রিত মিরা বাজার জামেয়া ইসলামীয়া মাদ্রসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করে শাবিতে ভর্তি হয়। অভিযোগ সম্পর্কে মিসবাহ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে কল কেটে দেয়। বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মিজবাহ সিএসই বিভাগের ২০০৪-০৫(রেজি. নং- ২০০৪৩৩১০৮২) শিক্ষার্থী। সে নির্ধারিত ৮ সেমিষ্টারে তার স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে না পারায় সেমিষ্টার সিস্টেম অনুযায়ী আরো ৪ সেমিষ্টারেও স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারেনি। বর্তমানে সে একাডেমিক কাউন্সিলের বিশেষ অনুমতিতে অধ্যয়নরত।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের এগারই জানুয়ারীতে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষে শিবেরর রেখ যাওয়া গোপন নথি-পত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র-শিক্ষক-সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের নামের তালিকা পাওয়া যায়। ওইসব নথিপত্রে পরবর্তীতে অনেকের নাম সংযোজন-বিয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে হিন্দুসহ ছাত্র-শিক্ষক-সাংবাদিকদের নামে অপপ্রচার চালানোর মুন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে।
সূত্র: http://www.banglatimes24.com/?p=156255
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।