আবেদনটি বুধবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠলে কনিষ্ঠ বিচারপতি বিব্রতবোধ করেন।
রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন বিষয়টি নিয়ম অনুসারে প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, মো. একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, মাহবুবুল ইসলাম, সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী নামে চার আইনজীবী গত রোববার এই রিট আবেদন করার পর সোমবার ওই বেঞ্চে প্রাথমিক শুনানি হয়।
ওইদিন আবেদনকারী পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান আদালতে শুনানি করেন।
শুনানির এক পর্যায়ে আদালত এ বিষয়ে দায়ের হওয়া আগের রিটের আদেশ দেখতে চায়। তাৎক্ষণিকভাবে তা দেখানো সম্ভব না হওয়ায় বুধবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন বিচারক।
এই রিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিব, পরিবেশ সচিব, জ্বালানী ও বিদ্যুত সচিব, নৌ-পরিবহন সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রামপালের প্রস্তাবিত বিদ্যুত কেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশ ও বসবাসরত মানুষের জীবনে এ প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়নে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান পরিবেশবিদ এবং জীব-বৈচিত্র ও ইকোসিস্টেম বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনে কেন বিবাদীদের নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।
কমিটির সুপারিশ অনুসারে পরিবেশবান্ধব যে কোনো স্থানে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে কেন বিবাদীদের নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতেও রুল চাওয়া হয়েছে।
ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বিদ্যুত প্রকল্পের কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা চেয়েছেন রিটকারীরা।
রিট দায়েরের পর মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা একের পর এক খবর পাচ্ছি, ওই এলাকায় বিদ্যুতকেন্দ্র হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। পরিবেশের ক্ষতি হবে না বলেও একদল বলছে। সাধারণ দৃষ্টিতে আমারও মনে হয়, সেখানে বিদ্যুত কেন্দ্র হলে সেটা পরিবেশের জন্য ক্ষতি হবে। কিন্তু আমরা কেউ এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই।
”
তিনি বলেন, সুন্দরবন বাংলাদেশের গৌরব, বিশ্ব ঐতিহ্যেরও অংশ। এ বন ধ্বংস হয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া যবে না।
“তাই সুন্দরবনের কাছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাবও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। এ জন্যই আমরা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের জন্য আবেদন করেছি। সেই কমিটি রিপোর্ট না দেয়া পর্যন্ত প্রকল্পের কাজে স্থিতাবস্থা চেয়েছি।
”
রিটে এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত দুটি রায়ও সংযুক্ত করেছে বাদীপক্ষ।
এর মধ্যে আপিল বিভাগের একটি রায়ে বলা হয়েছে, মানুষের জীবন আইনের চেয়েও বড়। আর পরিবেশের ক্ষতি হলে সেটা মানুষের জীবনকেও বিপন্ন করবে। আর হাই কোর্টের অন্য একটি রায়ে বলা হয়েছে, উন্নয়ন কাজের পাশাপাশি পরিবেশও রক্ষা করতে হবে।
রামপালে বিদ্যুত প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর আগেই এ নিয়ে কয়েকটি রিট হয়েছিল।
হাই কোর্টের আদেশে প্রকল্পের কাজ ঝুলেও গিয়েছিল।
মনজিল মোরসেদ বলেন, রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন না দিতে ওই রিটগুলো দায়ের করা হয়েছিল। প্রকল্পের অনুমোদন ও কাজ শুরুর পর সেসব রিট অকার্যকর হয়ে গেছে। এ কারনেই নতুন করে এই রিট আবেদন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।