আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগার রহিম চাচা



আজ আপনাদের বলতে চলছি সেই বিভিষিকাময় রাতের কথা যে রাতে পশু নির্যাতিত হয়েছিলাম আমি। যে রাতে হারিয়েছি জীবনের অর্ধেক। ৩০সেপ্টেম্বর,আমার জীবনের সবচেয়ে কালো অধ্যায়। সেদিন সম্মুখীন হয়েছিলাম বাঁচা মরার মাঝখানে। সেদি হাহাকার করেছিলাম বাঁচার আশায়।

আগের দিন চিন্ময় নামের এক ছেলের সাথে ধর্ম নিয়ে প্রচন্ড তর্ক হয়েছিল। সে আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটা বাজে ছবি দেখালো যা দেখে সহ্ করতে পারিনি। তুমুল দাঙ্গা হল ওর আর আম মাঝে। প্রিন্সিপালসহ বাকী অনেকেই ন দর্শকের ভুমিকায় দেখতে লাগল এই বাকবি আমি প্রিন্সিপালের কাছে বিচার চাইল প্রিন্সিপাল ওকে জিজ্ঞেস করল তুমি এটা কেন করলে?একটা দুষ্ট হাসি দিয়ে চিন্ময় প্রবেশ করল আমার ফে প্রফাইলে,দেখালো হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আম লেখা। আমি সত্যিই বিষ্মিত হলাম কারন আমার আইডি সম্পর্কে ওর জানার কথা ছিল না।

আমি সাথে সাথে অস্বীকার করলাম। বললাম এটা আমার আইডি না,আমি তিনমা আগে আমার আইডি ডিএকটিভ করেছি। কি সত্যকে তো আর মিথ্যার মাঝে আড়াল করা যায় না। সেদিন আমি কিছুই করতে পারিনি। আমার সামনে এক বিধর্মী আমার ধর্ম সম্পর্কে বাজে কথা বল আর আমি প্রতিবাদ করছি।

এটাই কি আমার অপরাধ?ফেসবুকে কখনও হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করিনি,শুধুমাত্র তাদ কুসংস্কারের সুফল ও কুফলগুলো জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তবু সেদিন খলনায়ক হতে হল আমায়। সেদিন রাতেই সবাই জেনে গেছে আমা আইডির কথা। স্থানীয় লীগ কাকুরা ভালোভাবেই মুগুস্থ করছিল লেখাগুলো। রাত সাড়ে এগারোটায় সেই লেখার মাশুল দিতে হল আমার বাবাকে।

তিনমাস আগে আমার ইমোশনাল ইতর নামে আইডিটি বন্ধ করতে হয়েছিল তাদেরই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে। তাদের হুমকিতে তখন আমার ঘুম ভাঙ্গেনি। সবার অগচরে তৈরি করলাম ব্লগার রহিম চাচাক পরের দিন কলেজে চিন্ময় অনুপস্থিত। শিক্ষকরা এমনভাবে আমার দিকে তাকাচ্ মনে হচ্ছে আমি আল কায়েদার শীর্ষ নেত সাড়ে এগারোটায় সাদা পোষাকে তিন লোক আসে ব্লগার রহিম চাচার খোজে। হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ি তাদের পরিচয় র্যাব হলেও পোষাক এবং গাড়ি সবই সাদা।

আমাকে র্যাব অফিসের সামনে এনেও নামানো হল না। সন্দেহ হচ্ছিল তবুও এতটা ভাবিনি। এরপরই শুরু আশ্চর্যজনক ঘটনা। তারা হাতকড়া খুলে দিল,একটা সাধারন হোটেলে খাওয়ালো আমায়। এরপর যে তারা কোথায় নিয়ে চলল কিছুই বুঝতে পারলাম না।

বরিশাল সদর থেকে অন দুরে এসে গেছে তারা। নিজেদের মধ্যে কি বলাবলি করল কিছুই বুঝতে পারল না। তখন সন্ধা গড়িয়ে রাত,সম্পুর্ন অপরিচিত ন একটা জায়গা যার আশেপাশ কিছুই খেয়া করতে পারলাম না। গাড়ি থেকে নামিয় লাথি শুরু। আমার ধারনা ভুল ছিল।

ভেবেছিলাম হাতকড়া খুলে দিবে এবং দৌড়াতে বলব আমি দৌড়াব তারা গুলি করবে। র্যাব সম্পর্কে এতটাই জানতাম। এই প্রথমবারের মত সন্দেহ হল তারা কি আসলেই র্যাব না অন্য কেউ। চড় দিতে দিতে একটা অন্ধকার কাঠ ঘরে ঢুকালো। কিছু বলার আগেই হয়ত মোটা লাঠি অথবা লোহার পাইপ দিয়ে মারতে লাগল।

অন্ধকারের ফলে কি দেখিনি। যখন শুয়ে পরলাম তখন একজন বলল,কুত্তার বাচ্চা,পাখনা গজাইছে তোর.ফেসবুকে ল চো*ও। ওদের প্রতিটি আঘাত এতটাই যন্ত্রন ছিল যে চিত্কারেরও সুযোগ পেলাম না। অকথ্য ভাষায় গালী দিল বুঝাতে পারব ন আমি জানিনা এরকম কতক্ষন পিটিয়েছে। য চোখ খুলাম তখন ডান হাতটা অনুভব করতে পারিনি।

একটা লাইটের আলোয় দেখলাম একটা লোককে যিনি ঐ তিনজন কেউ না। জিজ্ঞেস করল তোর ** এত *** মার কেন? **** পোলা। বড় অসহায় লাগছিল নিজেকে। যদিও ডান হাতটা অনুভব করছিল না তবুও যখন ডান হাতের সবগুলো নক প্লাস দিয়ে টেনে উঠাচ্ছিল,আমি জানিনা ত আমার চিত্কার খোদার কাছে পৌছেছি কিনা। অসহায়ের মত চিত্কার ছাড়া কিছুই করতে পারলাম না।

তখনই হয়ত এরপর কোন একস পিছন থেকে কেউ আমার মাথায় আঘাত করেছিল,যার ফলে দীর্ঘ বিশ্রাম পেলাম। হয়ত আমি ডান হাত দিয়ে কোন কাজ করতে পারব না। হয়ত দু পা দিয়ে হাটতে পারবনা কখনও। সাড়া জ পঙ্গুত্বের ভার বয়ে যেতে হবে আমাকে। কিন্তু ওরা তিনটি জিনিস এখনও ফেলে দিয়ে গেছে।

আমার বাম হাত,ব্রে এবং অন্তর। আমার প্রতিবাদ চালিয়ে যাব জন্য এটুকুই যথেষ্ট। ফ্রম ব্লগার রহিম চাচা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.