আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহিত্যে নোবেল পেলেন কানাডার এলিস মুনরো

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কানাডার ছোটগল্প লেখক এলিস মুনরো। সাহিত্যের এ শাখা থেকে এর আগে খুব কম লেখকই নোবেল পেয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে সুইডিশ নোবেল একাডেমি। মুনরোকে ‘সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার’ অভিহিত করে নোবেল কমিটি বলেছে, ‘তিনি খুব সুন্দর করে গুছিয়ে গল্প বলতে পারেন। তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু সুস্পষ্ট ও বাস্তববাদী।

অনেকেই তাঁকে কানাডার চেখভ বলে থাকেন। ’ কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত গভীর রাতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার খবরটি পৌঁছায় ৮২ বছর বয়সী মুনরোর কাছে। এ খবর পেয়ে তিনি ‘চরম বিস্মিত’ হন। তিনি বলেন, ‘জানতাম তালিকায় আমার নাম আছে। কিন্তু কখনো ভাবিনি যে আমিই জিতব।


মুনরোর জন্ম ১৯৩১ সালের ১০ জুলাই, কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায়। সেখানকার গ্রাম্য ও শান্ত পরিবেশেই তাঁর বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন খামার মালিক, মা স্কুলশিক্ষক।
মাত্র ১১ বছর বয়সেই মুনরো ঠিক করে ফেলেন, বড় হয়ে একজন লেখকই হবেন। সে মতোই এগিয়েছে সবকিছু।

নিজের পেশা নিয়ে পরবর্তী সময়ে আর কখনো তিনি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেননি।
ইউটিউবে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে মুনরো তাই বলেছেন, ‘আমি মনে করেছিলাম, লেখালেখি করেই আমি কেবল সফল হতে পারি। কেননা, আমার মধ্যে অন্য কোনো গুণ ছিল না। ’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি সত্যিই বুদ্ধিজীবী ধরনের কেউ নই, বরং একজন ভালো গৃহবধূ। ’
মুনরোর প্রথম গল্প দ্য ডাইমেনশন অব আ শ্যাডো।

 প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে। তখন তিনি ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখানেই পরিচয় হয় জেমস মুনরোর সঙ্গে। তাঁরা বিয়ে করেন ১৯৫১ সালে।
এরপর তিনি সংসার করেছেন, চালিয়ে গেছেন লেখালেখি।

জেমসের সঙ্গে তাঁর দুই দশকের সংসার ভেঙে যায় ১৯৭২ সালে। এর আগে তিন কন্যাসন্তানের মা হন তিনি। চার বছর পর আবার বিয়ে করেন জেরাল্ড ফ্রেমলিনকে।
তখন থেকে গড়ে প্রায় চার বছরে তাঁর একটি করে বই বেরিয়েছে। তাঁর বেশির ভাগ গল্পে উঠে এসেছে কানাডার গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ।

অন্য বড় লেখকদের মতো তিনি বিশ্বভ্রমণে বের হননি। স্বাভাবিকভাবেই নিজের চারপাশের গণ্ডির বাইরের বিষয় নিয়ে তাঁর লেখালেখিও কম।

নোবেল কমিটি বলেছে, ‘তাঁর প্রায় সব গল্পের উপজীব্য ছোট কোনো শহরের প্রেক্ষাপট। এতে উঠে এসেছে সম্পর্ক ও নৈতিকতার টানাপোড়েন, যার সৃষ্টি এক প্রজন্মের সঙ্গে আরেক প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য ও জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষার দ্বন্দ্ব থেকে। ’

মুনরো নিজেও স্বীকার করেছেন সে কথা, ‘এখানকার পরিবেশের ভেতরেই জীবন-যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে আমি বেড়ে উঠেছি।

কাজেই এখানকার আবহ আমি যতটা গভীরভাবে অনুভব করতে পারি, অন্য কোনো নতুন জায়গা সম্পর্কে সেটা সম্ভব নয়। ’

মুনরো গভর্নর জেনালের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিন তিনবার। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস, ১৯৭৮ সালে হু ডু ইউ থিংক ইউ আর এবং ১৯৮৬ সালে দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ বইয়ের জন্য। তিনি কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। আর সাহিত্যে নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৯ সালে।

দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন বইয়ের জন্য তিনি ওই পুরস্কার পান। তাঁর এই বই অবলম্বনে পরিচালক সারাহ পলি তৈরি করেছেন সিনেমা অ্যাওয়ে ফ্রম হার।

মুনরোর প্রকাশিত অন্যান্য ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান-১৯৭১, সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ-১৯৭৪, দ্য মুনস অব জুপিটার-১৯৮২, ফ্রেন্ড অব মাই ইয়োথ-১৯৯০, ওপেন সিক্রেটস-১৯৯৪, দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান-১৯৯৮, হেটশিপ ফ্রেন্সশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারিজ-২০০১, রানঅ্যাওয়ে-২০০৪, টু মাচ হ্যাপিনেস-২০০৯ এবং ডিয়ার লাইফ-২০১২। এএফপি, বিবিসি।



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।