আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপি না এলে অন্যদের নিয়ে সর্বদলীয় সরকার

বিএনপি না এলেও অন্য সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হবে।

অবশ্য সর্বদলীয় সরকারে নেওয়া হবে না বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে। তবে সরকার আশা করছে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সর্বদলীয় সরকারে অংশ নেবে। গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত গতকালের বৈঠকে আটটি আলোচ্যসূচি ছিল। এসব বিষয়ে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী ২৬ অক্টোবর বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে তার টেলিফোন কথোপকথনের বিষয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের অবহিত করেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আবারও তার অবস্থানের বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে নিয়েই নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের। সেক্ষেত্রে যদি বিএনপি না আসে তাহলে জামায়াতে ইসলামী বাদে অন্য সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হবে।

এ জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামানকে আলোচনার জন্য গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেবে।

এর পর প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতার টেলিফোন আলোচনার বিষয়টি মন্ত্রিসভার সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ওই দিন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ভীষণ উত্তেজিত কণ্ঠে তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

তিনি খুবই এগ্রেসিভ ছিলেন। কিন্তু আমি অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে তার কথাগুলো শুনেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার বিষয়টি তুলে ধরতেই বিরোধীদলীয় নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে আমাকে বলেন, এই হামলা আমরাই (আওয়ামী লীগ) করেছি। একই সময়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, শুধু গ্রেনেড হামলা কেন, '৭১-এ আপনার মুক্তিবাহিনী বহু মানুষ মেরেছিল। বিহারিদের হত্যা করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা সংলাপ আহ্বানের জন্য যে সময় দিয়েছেন সেই সময়ের মধ্যেই তাকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। হরতাল প্রত্যাহার করেননি।

হরতালের নামে সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ তাদের জোটের শরিক দলের সহিংস কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানান একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তারা হরতালের নামে মন্ত্রী, বিচারপতি, এমপিদের বাসায় বোমা হামলা করছে।

অ্যাটর্নি জেনারেলের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, হত্যা করছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে। এটা কোনোভাবে বরদাশত করা যায় না। তিনি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতা-কর্মীদের দৃঢ়ভাবে বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড মোকাবেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্যও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন। গতকাল বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ এর খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে ওঠার কথা থাকলেও প্রস্তাবটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা বলে সেটি পর্যন্ত আর উঠায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ মুহূর্তে কওমি মাদ্রাসার লোকজন বিরোধী দলের আন্দোলনের সঙ্গে নেই। তারা আগের চেয়ে অনেক নিষ্ক্রিয়। সরকার এ মুহূর্তেই নতুন করে তাদের আর রাস্তায় নেমে আসার উপলক্ষ দিতে চায় না।

এ কারণেই মূলত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন উঠানো হয়নি। এদিকে মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকে মোট আটটি বিষয় উত্থাপিত হয়। এগুলোর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন-২০১৩ এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন ২০১৩, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন-২০১৩, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১৩ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৩ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এর বাইরে জাতীয় উন্নয়ন কৌশল ও পরিসংখ্যান (এনএসডিএস) শীর্ষক পরিকল্পনা দলিল অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী আজ সিপিবি-বাসদের সঙ্গে বৈঠক করবেন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণভবনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে দেশের বিরাজমান রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার চলমান সংলাপ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নেতারা এ বৈঠকে মিলিত হবেন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.