পত্রিকা হাতে নিলেই দেখা যায় স্বামী স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী স্বামীকে, ভাই ভাইকে, ছেলে পিতাকে বা পিতা ছেলেকে হত্যা করে অবশেষে নিজেও আত্দহত্যা করেছে। এ রকম ঘটনা চোখের সামনে অহরহ ঘটছে। অপরাধ করে আত্দহত্যা করতে হবে কেন? তওবার কি ব্যবস্থা নেই? আল্লাহপাক কোরআনে কারীমে ইরশাদ করেন 'তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। তিনি তোমাদের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
আল্লাহ তো বলেছেন, তুমি নিরাশ হয়ো না। বান্দা ভালো-খারাপ দুটোই করে। আর আল্লাহপাক শুধু ভালোই করেন খারাপ করেন না। ক্ষমা আল্লাহর এক মহৎ গুণ। অপরাধী অপরাধ স্বীকার করে তওবা করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন।
হাদিসের ভাষ্যমতে, কোনো মুসাফির সফর পথে বিশ্রাম করতে গিয়ে তার বাহন বেঁধে ঘুমিয়ে গেল। ঘুম থেকে ওঠে দেখে তার একমাত্র বাহন উটটি নেই। আর উট ছাড়া মরুভূমির পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ সবদিকে শত শত মাইলজুড়ে ধুধু বালুচর। গরমে পা যেন মুহূর্তেই পুড়ে যাবে।
বাহন ছাড়া মরুভূমি পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবাও যায় না। এবার সে জীবনের মায়া ছেড়ে নিরুপায় হয়ে আবারও শুয়ে গেল। এবার ঘুম থেকে ওঠে দেখে বাহনটি তার পাশে। এই মুসাফির তখন যত খুশি হয়, বান্দা গুনাহ করে তওবা করলে তারচেয়েও বেশি খুশি হন মহান আল্লাহ। পরে তওবা করে নেব এই মনোভাবে কোনো গুনাহ করলে তওবার দ্বারা সে গুনাহ মাফ হবে না।
বরং শয়তানের প্ররোচনায় অনিচ্ছায় যদি কখনো কোনো গুনাহ হয়ে যায়, খাঁটি তওবার দ্বারা সে গুনাহ মাফ হবে বলে আশা করা যায়। সুতরাং পরে মাফ চেয়ে নেব মনে করে গুনাহ করার কোনো সুযোগ নেই। খাঁটি তওবার তিন শর্ত। ক. কৃত গুনাহর জন্য অনুতপ্ত হওয়া। খ. তাৎক্ষণিক গুনাহ ছেড়ে দেওয়া।
গ. ভবিষ্যতে আর কোনো দিন গুনাহ করবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। এই তিন শর্ত অনুযায়ী তওবা করলে আল্লাহপাক ক্ষমা করে দেবেন বলে আশা করা যাবে। তওবা করার পরও যদি বারবার সে গুনাহ হতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে তওবা কবুল হয়নি। আল্লাহপাক জাতিকে আত্দহত্যার পথ পরিহার করে তওবার পথ বেছে নেওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : খতিব বায়তুল মারুফ জামে মসজিদ, টিভি রোড, রামপুরা, ঢাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।