রক্ত চাইলে রক্ত নে, রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ দে...
আজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রথম যে কাজটা করেছি সেটা হলো, পত্রিকার পাতায় বাংলাদেশের খেলার খবর খুঁজে বের করা। সাধারণত এটা আমার প্রতিদিনের কর্ম তালিকার প্রথমে থাকে না। ঘুম ভাঙার পর মাথার কাছে থাকা ফোন থেকেই মেইল চেক করাই আমার প্রথম কাজ। তারপর ধীরে সুস্থে উঠে কম্পিউটারটা অন করে কিছু মেইলের উত্তর দিয়েই আমার দিন শুরু হয়, মাঝে মাঝে হয়তো এনওয়াই টাইমস্, ইউএসএ টুডে, অথবা বিবিসির ওয়েব সাইটে গিয়েই খবর পড়া হয়। প্রথম আলো পড়া হয় খুবই কম, পড়লেও সেটা করি অফিস থেকে এসে।
গতকাল রাতে (শনিবার) বিছানায় যাওয়ার সময় মনেই ছিলোনা যে, নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের তৃতীয় দিনের ওয়ানডে খেলা এখনো বাকি আছে। অবশ্য আমি খুব একটা সিরিয়াসলি নেইও নি। সিরিজ তো জিতেই গেছি! হা হা হা
যাইহোক, খবরে যা দেখলাম তাতো আর নতুন করে বলার কিছু নেই। ইতিহাসের পাতায় বাংলার বাঘগুলো তাদের নাম লিখেই দিয়েছে "বাংলাওয়াশ" নাম দিয়ে। কিন্তু আমিতো খেলাই মিস করেছি।
ঘন্টাখানেক খুঁজে-টুঁজে ইউটিউবে বাংলাদেশের ব্যাটিংএর হাইলাইটস দেখলাম। এদিকে বেলা ১২টার কাঁটা ছুঁই ছুঁই করছে। সকালে নাস্তা করার কথা মনে হয় ভুলেই গিয়েছিলাম। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিলাম, নাস্তা করেই আজ কিছু একটা লিখে রাখবো। ইতিহাসের পাতায় এই খেলার পাশাপাশি আমার সামান্য এই পোস্টটাও অংশ হয়ে থাকুক।
প্রবাসের মাটিতে বসে দেশের খুব বেশী ভালো খবর পাইনা। মাঝে মধ্যে যতটুকুই পাই তার বেশীর ভা্গটাই জুঁড়ে থাকে বাংলার দামাল ছেলেরা। হাজার মাইল দূরে বসে যখন ফতুল্লায় বাংলাদেশ আর নিউজিল্যান্ডের খেলার হাইলাইটস দেখছি তখন মনে পড়ে গেল ২০০৫/২০০৬ সম্ভবত অস্ট্রেলিয়াও বাংলাদেশে এসে ফতুল্লায় খেলে গিয়েছিলো। সে সময় ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ক্লাসের আরো ৩ জন বন্ধু নিয়ে ২টা বাইকে করে গিয়েছিলাম খেলা দেখতে। ক্যামেরা যখন ঘুরে ফিরে বার বার স্টেডিয়াম দেখাচ্ছিলো, তখন বেশ নস্টালজিক হয়ে গিয়েলিছাম।
সেবার বাংলাদেশ টেস্টে হেরে গিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার সাথে। আজ ৭ বছর পরে যখন সেই একই মাঠে জয় দেখছি, তখন কিছুটা নস্টালজিক হওয়াটাই হয়তো স্বাভাবিক।
ভীষণ ভালো লাগছে। বাংলাদেশ অথবা বাংলাদেশ সম্পর্কিত যে কোন ভালো খবরই একটা অজানা ভালোলাগাকে ছড়িয়ে দেয়। শত সমস্যা আর ব্যস্ততার পরেও মনে হয় আমরা বাঙালীরা অন্তত এই একটা বিষয়ে এক সুঁতোয় গাঁধা হয়ে যাই।
হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ কোন ভেদাভেদ থাকে না। এই একতা, এই সাম্যতাইতো আমাদের মূল শক্তি হতে পারে দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও। জাত-পাত, ধর্ম ভুলে আমরা যদি একই ভাবে দেশের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারতাম, তাহলে সত্যিই বাংলাদেশ একদিন পৃথিবীর বুঁকে "সোনার বাংলাদেশ" হিসেবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো।
আমি হতাশ নই, বরং আশাবাদী। বাংলাদেশ একদিন মাথা তুলে দাঁড়াবেই, এই প্রত্যাশাই করি।
পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি, আমি বাঙালী, বাংলা আমার ভাষা, বাংলাদেশ আমার দেশ এই সত্যটা যেন আমরা কখনোই ভুলে না যাই। বাংলার বাঘদের আবারো অনেক অনেক অভিনন্দন। জয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকুক। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।