শ্রম সচিব মিকাইল শিপার সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বাকি ১৬৫টির লাশের পরিচয় এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তবে দাবিদারদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
“যে ১৫৭ জনের পরিচয় জানা গেছে, তাদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ ও ১১৬ জন নারী। নিয়ম অনুযায়ী তাদের স্বজনদের ২ থেকে ৫ লাখ টাকা আর্থিক অনুদানও দেয়া হবে। ”
সনাক্ত হওয়া লাশের উত্তরাধিকারীদের নাম ও ঠিকানা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে সংশ্লিস্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে বলে সচিব জানান।
গত ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার নয় তলা রানা প্লাজা ধসে পড়লে সরকারি হিসাবে মোট এক হাজার ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকেই উদ্ধার করা হয় এক হাজার ১১৬টি লাশ। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ওই ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন রানা প্লাজার পাঁচটি পোশাক কারখানার কর্মী।
ভবন ধসের ২০ দিন পর গত ১৪ মে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। যদিও অনেকেই এখনো তাদের স্বজনদের কোনো খোঁজ পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধ্বংসস্তূপে থাকার কারণে বহু লাশ এতোটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে চেহারা দেখে তাদের পরিচয় জানা সম্ভব ছিল না। এ কারণে ১ মে থেকে বেওয়ারিশ হিসাবে তাদের লাশ জুরাইনে কবর দেয়ার কাজ শুরু হয়।
তবে স্বজনরা যাতে পরে যে কোনো সময় লাশ ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে পারেন, সেজন্য প্রতিটি মরদেহের নমুনা সংরক্ষণ করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে।
প্রতিটি নমুনার জন্য একটি করে নম্বর বরাদ্দ করে সেই ক্রম অনুযায়ী জুরাইনে কবর দেয়া হয় তাদের। স্বজন হিসাবে পরিচয়দাতাদের মধ্যে কারো ডিএনএ নমুনা মিলে গেলে তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১১৭ জনের মধ্যে ৫৩ জনকেও একইভাবে দাফন করা হয়।
শ্রম সচিব জানান, রানা প্লাজার ঘটনায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা ৩২২টি লাশের জন্য মোট ৫৪০টি দাবি ছিল। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন ৫৪৮ জন।
“ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে এ পরীক্ষা করতে মোট খরচ হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এ টাকা দেয়া হয়েছে।
ডিএনএ বিশ্লেষণে বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে সহযোগিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। ”
রানা প্লাজা ধসে নিহত ৭৭৭ জনের উত্তরাধীকারী এবং অঙ্গ হারানো ৩৬ জন শ্রমিককে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে মোট ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার ৭২০ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে বলেও শ্রম সচিব জানান।
এছাড়া গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ দুই হাজার ৭৮৫ জন শ্রমিকের জন্য মোট ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা খরচ ও সহায়তা করেছে। এর মধ্যে ৩ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও দেয়া হয়েছে।
শ্রম সচিব জানান, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১০ শ্রমিকের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
যে ৫৩ জনকে বেওয়ারিশ হিসাবে দাফন করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৪৩ জনের উত্তরাধীকারীদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সনাক্ত করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।