আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজনীতির মুখোশ ও মনুষ্যত্বের বিকাশ

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।

"প্রবীণ ও বুদ্ধিজীবীগণের একটা শ্রেণি পত্র-পত্রিকায় বিরামহীন লিখেই যাচ্ছেন। বই-পুস্তকও লিখছেন প্রচুর।

কিন্তু পাঠকের সঙ্গে সংযোগ নেই। যুবসমাজ এসব খুব কমই পড়ে। এমনকি লেখকের অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ, নিরপেক্ষ মূল্যায়ন ও কষ্টসাধ্য লেখাগুলোও তারা এক কথায় উড়িয়ে দেয়। কারণ তারা দেখে আসছে বছরের পর বছর ধরে এসব লেখার দ্বারা কিছুই হচ্ছে না, কেবল লেখকের নিজের পয়সা রুজি ও যশ-খ্যাতি ছাড়া। শিক্ষিত তরুণরা ইদানিং অবসর সময়টুকু নেটে কাটায়।

এখানে লেখক-পাঠক চমৎকার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সরাসরি প্রশ্নোত্তর ও মতবিনিময়ে কোনো বাধা থাকে না। তাছাড়া তারা কেবল দর্শক-শ্রোতা-পাঠক হয়েই থাকতে চায় না, সংকট উত্তরণ ও পরিস্থিতির উন্নয়ন-পরিবর্তনে কিছু বলতে, লিখতে ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে চায়। তাই আমি মনে করি অনলাইন-অফলাইনে নবীন-প্রবীণের সংযোগ ঘটানো জরুরি। বহুমুখি মত ও পথের পারস্পরিক উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ ও প্রশ্নোত্তর জরুরি। আর প্রকৃত চ্যালেঞ্জ সেটাই, যেখানে প্রতিপক্ষকে সব রকমের সুযোগ-সুবিধা এমনকি হাতের তরবারিটি পড়ে গেলে তা তুলে দিয়ে তারপর লড়াই করতে হবে।

" "রাজনীতির মুখোশ বলতে রাজনীতিকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি, বরং রাজনীতির মুখোশের পাশাপাশি মনুষ্যত্বের বিকাশ প্রসঙ্গটি এনে বুঝানো হয়েছে, মনুষ্যত্বের বিকাশের মহান লক্ষ্য ছাড়া শুধুই জাগতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির আওয়াজ রাজনীতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও কলুষিত করে, রাজনীতির মানবকল্যাণকামী প্রকৃত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত করে। " "সম্প্রতি দেশব্যাপী যেভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, শ্রমজীবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, ধর্মীয় সংগঠন, নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, সুশীলসমাজ, আলেমসমাজ, বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংঘ-সমিতি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী, সাধারণ জনতা, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অসংখ্য মানুষ সময়ে অসময়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠছে, আন্দোলন-সংগ্রাম করছে, মিছিল করছে, হরতাল-বিক্ষোভ-ভাঙচুর করছে, বোমা ফাটাচ্ছে, রাস্তায় টায়ার জালাচ্ছে, আগুন দিচ্ছে, সরকারের প্রতি অনাস্থা জানাচ্ছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পেশ করছে, আর পুলিশ যেভাবে তাদের লাঠিচার্জ করছে, গুলি করছে, মারছে, ধরছে, থানায় নিচ্ছে, মামলা দিচ্ছে, হয়রানী করছে, চাঁদা নিচ্ছে- এ চিত্র আমরা যদি মনে করি কেবল আওয়ামী সরকারের ব্যর্থতা তাহলে চরম ভুল হবে। কারণ পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বৈষম্য অনেক বেড়ে গেছে, হিংস্রতা, মূর্খতা, পাশবিকতা, স্বার্থের দ্বন্দ্ব, প্রবৃত্তিজাত চাহিদা আগের তুলনায় অনেক অনেক বেড়েছে। অপরদিকে এই বিয়াল্লিশ বছরে জনসংখ্যার তুলনায় স্বাভাবিক যে উন্নয়নের একান্ত প্রয়োজন ছিল শিক্ষাব্যবস্থায়, আবাসন খাতে, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি খাতে, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়- বাংলাদেশ তার ধারে-কাছেও যেতে পারেনি। ফলে এই সব সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে এবং বাড়বে, তা যে সরকারই আসুক বা থাকুক না কেন।

বাংলাদেশ এখন যে অবস্থায় পৌঁছেছে, স্বাভাবিক কোনো ফর্মূলায় তা থেকে উত্তরণের পথ নেই। যদি না বিপ্লবাত্মক কোনো পদক্ষেপ-পদ্ধতি-কর্মসূচি বা ফর্মূলা গৃহীত হয়। আর এমনটা আমরা আশা করতে পারি না এ কারণে যে, বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ, শিক্ষকসমাজ ও আলেমসমাজের সেই মেধা ও ঐক্য নেই। সুতরাং দৈবক্রমের উপর ভরসা করা ছাড়া আমিও এ মুহূর্তে নতুন কোনো পথ দেখছি না। " এগুলো হচ্ছে আমার প্রকাশিতব্য রাজনীতির মুখোশ ও মনুষ্যত্বের বিকাশ বইয়ের কয়েকটি বিচ্ছিন্ন উদ্ধৃতি।

এর উপর প্রিয় ব্লগারদের সমালোচনা প্রত্যাশা করি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.