মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।
"একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী সমাজ-রাষ্ট্রের শুধু উন্নয়নই দেখতে পান, অবনতি বা সমস্যার ভয়াবহ স্রোত দেখতে পান না। তাদের টনক নড়ে যখন সমস্যার বিস্ফোরণ ঘটে।
কিন্তু ভেতর ঠোসা হতে হতে এক সময় যখন রাষ্ট্র চূড়ান্তভাবে ভেঙ্গে পড়বে, তখন টনক নড়লেও কাজ হবে না। উন্নয়নের হিসেব বের করতে হলে আমাদের সম্পদ, মেধা, জনশক্তি, রেমিটেন্স ও জনগণের চাহিদার আপেক্ষিক তুলনা করতে হবে। অবনতিগুলো পাশাপাশি রাখতে হবে। এ কথাটি আমি বইয়ে দু’এক জায়গায় সামান্য বলতে চেষ্টা করেছি। যে-কোনো ছয়মাসের দৈনিক পত্রিকাগুলো হাতে নিন, তারপর সুসংবাদ ও দুঃসংবাদগুলো পর্যালোচনা করুন।
হিসেব পরিষ্কার। তারপরও শাসকগোষ্ঠী কীভাবে বারবার জনগণকে ধোঁকা দেয় আমার বুঝে আসে না। ইতিহাসে ধর্ম ও রাজনীতির এমন কিছু সত্য আছে যা কায়েমি স্বার্থবাদীরা জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করে না, অথচ সেগুলো প্রকাশ করা উচিত। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, ধর্ম ও রাজনীতি কখনোই এবং কোনোভাবেই নব্বই শতাংশ জনসাধারণের বিপক্ষে যাবে না, বরং গরীব-দুঃখী, ভূখা-নাঙ্গা জনমানুষের কল্যাণেই ধর্মের অপরিহার্যতা এবং রাজনীতির উদ্ভব। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখছি এর উল্টো।
"
"রাজনীতি- বর্তমান বিশ্বে এমনকি বাংলাদেশেও অন্যতম প্রধান আলোচিত-সমালোচিত বিষয় হলেও এ বইয়ের মূল বিষয় ‘মনুষ্যত্বের বিকাশ’। সুতরাং রাজনৈতিক বক্তব্য কিছুটা এদিক-সেদিক হলেও মানবিক ও তাত্ত্বিক কথাগুলো দৃঢ়। পুরো বইজুড়ে আমি মনুষ্যত্ব প্রসঙ্গে সামান্য কিছু মৌলিক বিষয় বলতে চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতে এসবের আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা থাকবে ইনশাআল্লাহ। রাজনৈতিক লেখা, মন্তব্যধর্মী কলাম ইত্যাদিতে যা বলা হয় তা অধিকাংশই সাধারণ জনগণ ও খেটে-খাওয়া মানুষের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের অনুভূতি ও অনুধাবনগুলো আমাদের বিশিষ্ট লেখক-চিন্তাশীলদের চেয়েও মূল্যবান, শক্তিশালী।
এটা যেকেউ তাদের সঙ্গে কথা বললেই বুঝতে পারবেন। তবে সমাজ পরিবর্তন, গঠন, মনুষ্যত্ব ও এর বিকাশ সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সাধারণ জনগণ ও খেটে-খাওয়া মানুষ তেমন কিছু বলতে পারেন না। সুতরাং আমাদের কাজ হল সেই দিকটি নিয়ে যতবেশি সম্ভব বলা ও কাজ করা। আমি তাই করতে চেষ্টা করেছি। তবে সমস্যা হল, অনেকের কাছেই, বিশেষ করে যে নতুন প্রজন্মটি শীঘ্রই দেশ পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছে তাদের কাছে এ জাতীয় তাত্ত্বিক আলোচনা শুধু কঠিনই ঠেকে না, অপ্রয়োজনীয় হিসেবে বর্জিত হয়।
"
প্রতি মুহূর্তে দেশ-বিদেশে ঘটছে অগণিত অসংখ্য ঘটনা-দুর্ঘটনা। এসব ঘটনা-দুর্ঘটনার, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণগুলোর প্রকৃত সংবাদ প্রাপ্তি মানবসভ্যতার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। এক্ষেত্রে আমরা সরাসরি মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল। আর মিডিয়া অর্থাৎ টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রগুলোও দাবি করে তারা ‘নিরপেক্ষ’ ও ‘বস্তুনিষ্ঠ’ সংবাদ প্রচার করে। অথচ যেকোনো সংবাদ- মালিকের স্বার্থ ও পক্ষপাতিত্ব তো আছেই- সংবাদ সংগ্রহের পর যে সাংবাদিক সেটা তৈরি, সরবরাহ ও পরিবেশন করেন তার চিন্তা-চেতনা-দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারাও প্রভাবিত হয়।
কখনো ইচ্ছাকৃত, কখনোবা অনিচ্ছাকৃত। এ থেকে বাঁচার উপায় কি? আসলে সব সমস্যার মূল এক জায়গাতেই। সেটা হচ্ছে- মানবিক সঙ্কীর্ণ স্বার্থ, গণ্ডিবদ্ধ চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি, সীমিত চাহিদা পূরণের তাড়না ইত্যাদি দ্বারা প্রায় প্রতিটি মানুষ চালিত। এ থেকে বাঁচতে সৃষ্টি দর্শন, মানবিক অসীম চাহিদার বিপরীতে অসীম দুর্বলতা, বিপরীতমুখী অবস্থার চাপ- এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে উপলব্ধি করা।
"একটা বিতর্ক খুবই পুরনো, কিন্তু ক’বছর পরপর নতুন মাত্রা পায়।
বাংলাদেশ কি অদূর ভবিষ্যতে একটা মৌলবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হবে, নাকি কথিত প্রগতিশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে? কেউ কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে এ বিতর্কটা উস্কে দিচ্ছেন এবং বলছেন এ নির্বাচনেই তা ‘নির্ধারণ’ হবে। কী অদ্ভূত! এমনসব ফাঁকা তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য আমাদের রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীদের বাহবা দিতেই হয়। যে বিষয়টা গত বিয়াল্লিশ বছরে মীমাংসা হয়নি, তা এ নির্বাচনেই...। এ তত্ত্বে আমরা কতটুকু এগিয়েছি তা বুঝা না গেলেও কতটুকু পিছিয়েছি, পারস্পরিক শত্র“তা কোন মাত্রায় বেড়েছে এবং একপক্ষ অন্যপক্ষকে ‘শেষ’ করে দেয়ার চূড়ান্ত যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে তা স্পষ্ট। মূলত কেউ কাউকে শেষ করতে পারবে না এবং আরও বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগ এ যুদ্ধ চলতেই থাকবে।
যদি এ শব্দগুলোর বাস্তবতা ও প্রকৃত অর্থ আমরা অনুসন্ধান না করি। এগুলো বস্তির দুই মহিলার বিশ ও কুড়ির যুদ্ধ। একজন বলছে সে তার নিকট বিশ টাকা পায়, অন্যজন অস্বীকার করে বলছে কুড়ি টাকা। কতবড় মিথ্যুক!
প্রিয় ব্লগারবৃন্দের গঠনমূলক সমালোচনা প্রত্যাশী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।