আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তসলিমা নাসরিনের চিন্তার নিদারুন সঙকীর্ণতা

ঘাটের এই পারে বসে আছি ঐ পারে যাওয়ার অপেক্ষা।

নারীর কোমোলত্ব আর অসহায়ত্ব আর অন্যদিকে পুরুষের কামুকত্ব আর প্রভুত্ব এই বৃত্ত থেকে তসলিমা বের হতে পারেননি। তাসলিমা নাসরিন নারীকে নারী ভাবতে রাজিনা। আর পুরুষ মানেই জানোয়ার। পুরুষমানেই কামুক।

ঠিক এইখানে আল্লামা শফীর সাথে তাসলিমার মিল আছে । নারী দেখলেই পুরুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে। অতএব নারীকে মেকানিজমড করতে হবে, কন্ট্রোলড করতে হবে। একজন মানুষ যদি জানোয়ারের মতো বিপরীতলিংগকে দেখা মাত্রই যৌনকাতর হয়ে আগ্রাসী হয়। তবে মানুষের যে বিবেক রয়েছে, মননশীলতা রয়েছে, চিন্তাশীলতা রয়েছে তার সাথে পশুর ফারাক রইলো কোথায়।

আল্লামা শফীর ভয়, নারী দেখলেই পুরুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে, না হয় সে পুরুষ নপুংসক। কী বিকারগ্রস্থ চিন্তা । তসলিমারও সে রকম ভয়। কী নিদারুন মনোবৈকল্য । তারা চিন্তা করতে পারেননি- মানুষ পশু না।

মানুষ জানোয়ার না। তার বিবেকবোধ রয়েছে, তার আত্মশুদ্ধি রয়েছে । তাসলিমা পুরুষকে সবসময় প্রতিদন্ধী হিসাবে দেখেছেন। স্ত্রী যখন স্বামীর কল্যান কামনা করে প্রার্থণা করে তাসলিমার সেটা ভালো লাগেনি। কেনরে ভাই, এইপুরুষ তো কারো ভাই হতে পারে, কারো সন্তান হতে পারে।

পুরুষ স্বামী কারো ভাই, কারো ভ্রাতা। মায়ের স্নেহচুম্বন কি সন্তানের মাথায় আশীর্বাদ হতে পারেনা। ঘরে না ফেরা ভাইয়ের প্রতি কি বোনের ব্যাকুলতা থাকতে পারেনা। বিদেশে থাকা কারো কল্যান কামনায় কোনো মাতা, ভগ্নি, চাচী,দাদী কি একটি বিনিদ্র রাত পার করতে পারেনা। আর তসলিমার চিন্তায় নারী মানেই স্ত্রী।

স্বামীর সেবাদাসী। যৌনপুতুল। আর কিছুনা। নারী নারীত্ব নিয়ে আর পুরুষ পুরুষত্ব নিয়ে থাকলে সমস্যা কোথায়? আর নারী পুরুষ দুজনের মাঝেই থাক মনুষত্ব। তাহলেইতো হয়।

নারীর নারীত্ব নিয়ে কোনো সংকীর্ণতা, কোনো অপ্রাপ্তি, কোনো হীনমন্যতা থাকারতো কিছুই নেই। পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুরতম শব্দ হলো"মা"। এই মা তো একজন নারীই। পৃথিবীতে মা'য়ের চেয়ে মর্যাদাবান, মা'য়ের চেয়ে সম্মান, মা'য়ের চেয়ে গৌরবের, এর চেয়ে মহিমান্বিত রুপ তো আর অন্য কিছুতেই নেই। নারী'ই সেই মায়ের স্থান দখল করে আছে।

এই সহজ জিনিসটা ভাবতে তাসলিমার সমস্যা কোথায়। নারী যখন বধু হয়। আমার সবচেয়ে আদরের ছোটবোন স্বামীর সাথে ঘর করতে বিদেশ পাড়ি দিলো। অনেকদিন পর ওদের সাথে দেখা। ছোটবোনের বৃদ্ধ শশুড় চেয়ারে বসতে যাবে।

দেখলাম, ছোটবোন দৌড়ে আসছে বাবা বাবা বলে। উনি চেয়ারে বসার আগেই ছোটবোন চেয়ারের ওপর হাত পেতে দিয়ে বললো- বাবা এখানে বসোনা। আমি ওকে বললাম- কীরে । এরকম দৌড়ে আসার কী হলো। ছোটবোন বললো- বাবাতো ভালো করে শুনতে পায়না।

আর চেয়ার ভিজা। তাই চেয়ারটা আগে মুছে দেই। তারপর বাবা বসবে। এরকিছুদিন পর দেশ থেকে ওর শশুড় বিদেশ ফিরবে। আমি ওনার সাথে আছি।

উনি প্রচুর শুটকি মাছ কিনছেন। বললাম, খালু । এতো শুটকি মাছ কার জন্য কিনবেন? উনি হেসে বললেন- আমার দুটি বিড়ালের বাচ্চা আছেনা। ওদের জন্য। দুটি বিড়ালের বাচ্চা হলো ওনার দুই ছেলের বউ।

এই যে অকৃত্তিম স্বর্গীয় পারিবারিক ভালোবাসা-তাসলিমা এটা পানওনি। চেষ্টাও করেননি, একবার চেয়েও দেখেননি। আপনি আস্থিক হোন, নাস্তিক হোন। এটা আপনার নিজস্ব পছন্দের ব্যাপার। কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে আপনি যেতে পারেননা।

প্রকৃতিই নারীকে নারী বানিয়েছে, পুরুষকে পুরুষ বানিয়েছে। নারী ছাড়া পুরুষ চলতে পারেনা, পুরুষ ছাড়া নারী না। এখানে পারষ্পরিক প্রতিদন্দ্বী ভাবার কিছুই নেই। মানুষের জীবন নামক গাড়ী নারী-পুরুষের সমান্তরাল লাইনের উপর দিয়েই বয়ে যাবে। এর বিরুদ্ধে গেলে প্রকৃতির নিজস্ব শৃঙখলা নষ্ট হবে।

পুরুষকে প্রতিদন্দ্বী হিসাবে দাঁড় করিয়ে নারীবাদীত্ব নিয়ে পড়ে থাকা হলো চিন্তার নিদারুন সঙকীর্ণতা। নারীকে নারীহিসাবে, মা হিসাবে, স্ত্রী হিসাবে , বোন হিসাবে দেখনু। দেখবেন মনে শান্তি পাবেন। মানসিক অস্থিরতা দূর হয়ে যাবে।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।