তারেকের মামলার রায় দেখে বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভিরমি খেয়েছে বিএনপিঅলারা। নিদেন পক্ষে একটা মামুলি সাজাটাজা হবে তো! নাহ্, কিচ্ছু না, একদম বেকসুর খালাস। অন্ধ বিএনপি ভক্ত ভেবেছিল, এই সরকার নিজে রায় লিখে নির্দোষ তারেককে ফাঁসিয়ে রাজনীতি থেকে তারেককে নির্বাসনে পাঠাবে। আজকের রায়ে এই অন্ধ ভক্তদের বিহ্বল ঘোর বোধহয় এখনো কাটেনি। অন্ধ আওয়ামী সমর্থক হয়ত তাকে সান্ত¦না দিয়ে এখন বলছে, আমরা তোমাদের নেতাকে দয়া করে বাঁচিয়ে দিয়েছি, এই প্রতিদান মনে রেখো!...
রাজনীতিতে গত কয়েকদিন দ্রুত এমন এক সমীকরণ ঘটে যাচ্ছে যা আসলে বুঝা যত সহজ, বলা তত কঠিন।
কারণ বলতে গেলে এমন কিছু বলতে হয় যা নিজের কাছেই অবাস্তব ঠেকে। কিংবা এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের গায়ে গিয়ে লাগে যা আসলে কারুর কাম্য নয়। এই যেমন আদালত। এই রায় কি আওয়ামী লীগের রাজনীতি মেনে হয়েছে? বিচার ব্যবস্থা নিয়ে এইরকম বলার বা বিশ্বাস করার দিন যেন কোন জাতির জীবনে না আসে। আমি অতান্ত ব্যথিত দুঃখিত এই মুহূর্তে।
যা ঘটতে চলেছে বলে সন্দেহ করছি তা আমার বাংলাদেশকে নষ্টদের কাছে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। বিএনপিকে এখন যে সুরে কথা বলতে শুনছি তা খুবই স্পষ্ট, না বুঝার কোন কারণ নেই। এখন তারা সংলাপ চায়, নির্বাচনকালীয় সরকার নিয়ে সমঝোতা চায়। নির্দলীয় সরকার নয়, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা। খুব ভাল, দল ও দলের নেতার ভবিষ্যত ভেবে সঠিক সিদ্ধান্ত তাতে কোন সন্দেহ নেই।
খুব সম্ভবত বিএনপি এইবার ক্ষমতায় আসতে চাইছে না। এটা একটা রেকর্ড বাংলাদেশে কোন দলের জন্য যে ক্ষমতায় আসতে না চাওয়া। বিএনপি বুঝতে পেরেছে পাঁচ বছর ক্ষমতায় না থাকলে একটা দলের জন্য কিছুই না, কিন্তু আগামী পঞ্চাশ বছর নিশ্চিত করতে পারলে সেটা হবে কাজের কাজ। খালেদা দলের জন্য নয় তার অসৎ ছেলের চুরি-ডাকাতির নিশ্চিত সাজার রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষিতে যেতে দ্বিধা করবে না। কিন্তু গোটা বিএনপি এক তারেকের জন্য ক্ষমতার স্বাদ পেতে বঞ্চিত হতে চাইবে না, কিন্তু তারাও ভেবে দেখেছে, তারেক দোষী হলে তাদের করে খাওয়া আর আস্ত থাকবে না।
জিয়া পরিবারকে সামনে রেখে তাদের মন্ত্রীত্ব ক্ষমতার ভাগ নিতে হবে। কিন্তু সেই জিয়ার পূত্র তারেক চোর-ডাকাতের মত দাগি হলে ভবিষ্যত রাজনীতি জিয়া পুত্রের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। কাজেই এখন যদি তাকে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে নির্দোষ প্রমাণ করিয়ে আনা যায় তাহলে এই দেশে বুক ফুঁলিয়ে বলা যাবে জিয়া পুত্র নির্দোষ, তাকে শুধু শুধু রাজনৈতিক হায়রানী করে ফাঁসানো হয়েছিল।
গত কয়েকদিনে কি দেখছি জাতীয় রাজনীতিতে? হেফাজত নিয়ে এক ধরনের খেলা। হেফাজতকে হয়ত আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত পাতে নিবে।
জামায়াতকেও এক ধরনের ছাড় দিবে। “দন্ডিত রাজাকার আল বদরদের মায়া ত্যাগ করে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির সুযোগ নিন” টাইপের প্যাকেজ ছাড়া হতে পারে। জামাত নিঃসন্দেহে সেটা লুফে নিবে। আর আওয়ামী লীগ “সব গাধাকে এক ঘাটে জল খাওয়ার” তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে পুনরায় ক্ষমতার গিয়ে বসবে। আওয়ামী লীগের অন্ধ মূক বধির সমর্থকরা দল ও নেতানেত্রীদের বুদ্ধিমত্তা, রাজনীতিক কুটচালে মুগ্ধ হয়ে কিয়া বাত্ কিয়া বাত্ বলে আসর গরম করবেন।
তারপর?
তারেক নির্দোষ হয়ে বেরিয়ে আসবে। তার দল ফের ক্ষমতার বাইরে। সে বুক ফুঁলিয়ে দেশে ফিরে আসবে। আওয়ামী লীগ টানা দুইবার ক্ষমতায় আসার সুখের ভাতঘুম দিবে জানি। আর তারেক এই অবসরে ফের আরেকটা ২১ আগষ্ট ঘটানোঅলাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে বসলে কিছুই করার থাকবে না।
বারবার তো আর হান্নানরা ব্যর্থ নাও হতে পারে! আর ওরা এটা করে ছাড়বেই। কারণ ওরাই সবচাইতে ভাল জানে, আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন মানে বাংলাদেশ নিশ্চিহ্ন। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন বাংলাস্থান, শরীয়া, ইসলামী হুকুমত কিছু সম্ভব না। আওয়ামী লীগ নিজে থেকেই বোধহয় সেই সুযোগটা করে দিচ্ছে। আরো একটা গ্রেনেড হামলা?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।