আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পোশাক শ্যমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পথচারীসহ দেড় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। একদিনের ছুটি ঘোষণা হয়েছে অন্তত ৪০টি কারখানায়।
বিক্ষোভের কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল সকাল থেকেই ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া গাজীপুরের কোনাবাড়িতে একটি স্যুয়েটার কারখানার কর্মীরা কোনাবাড়ি-কাশিমপুর এবং ঢাকা টাঙ্গাইল সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ পরিস্থিতিতে কোনাবাড়ি এলাকার অধিকাংশ কারখানাতেও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজিবির টহল চলছে গাজীপুর, আশুলিয়া দুই জায়গাতেই।
আশুলিয়া
শিল্প পুলিশ-১ আশুলিয়া জোনের পরিদর্শক আব্দুস সাত্তার জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জিরাব, জামগড়া, শিমুলতলা ও নরসিংহপুর এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে।
ফাইল ছবি জিরাব-বিশমাইল সড়কের মাস্কটগ্রুপ, রেডিয়ামস নিটওয়্যার, আইরিশ ফ্যাশনস, সাউদার্ন ফ্যাশনস, ওটি ডিজাইনের তিন/চারশ শ্রমিক কাজে এসেই বিক্ষোভ করতে করতে কারখানা থেকে বেরিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
ফাইল ছবি
পরে তারা এক হয়ে বিশমাইল সড়কের বিভিন্ন কারখানার দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সরাতে পুলিশ লাঠিপেটা করলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
পরে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় শ্রমিকসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। তাদের অনেকেই বেরন এলাকার নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেন।
এদিকে, সকাল ৯টার দিকে জামগড়া শিমুলতলা ও নরসিংহপুরের ১০-১৫টি কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদেরও ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সাত্তার জানান, সংঘর্ষ শুরুর পরপরই এসব এলাকার অন্তত ৪০ কারখানায় একদিনের ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সকাল ৮টা থেকে ‘দুই প্লাটুন বিজিবি’ টহল শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর
গাজীপুর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কোনাবাড়ি এলাকার কয়েকটি স্যুয়েটার কারখনার শ্রমিকরা কারখানার থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এবং কোনাবাড়ি-কাশিমপুর ও ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে অবরোধের চেষ্টা করে।
এ সময় পুলিশ তাদের সরাতে গেলে শ্রমিকরা ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে সোমবারের সংঘর্ষে কাশিমপুরের সারদাগঞ্জে জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের দুই শ্রমিক নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবারও বিক্ষোভে নামে শ্রমিকরা।
এসআই জাহাঙ্গীর জানান, শ্রমিক নিহতের ঘটনায় সকালে জিএমএস কম্পোজিটের ফটকে কারখানা বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেয়া হয়। শ্রমিকরা এসে নোটিস দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা কোনাবাড়ি-কাশিমপুর সড়কে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেয়।
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গত কয়েক দিনের মতো মঙ্গলবারও কোনাবাড়ি-কাশিমপুর এলাকার অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে এসআই জাহাঙ্গীর জানান।
পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে কোনাবাড়ি ও কাশিমপুরে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মজুরি বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি মালিক পক্ষ মেনে নিলেও ৮ হাজার টাকার দবিতে আশুলিয়ার শিমুলতলা, নরসিংহপুর, জামগড়া এলাকার পোশাক শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ ভাংচুর চালিয়ে আসছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।