আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করে গেলেন নিশা দেশাই

ঢাকায় তিন দিনের সফরে বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। তিনি সবার কাছ থেকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তবে শুধু দুই নেত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান করতে আগামী নির্বাচনের যে পদ্ধতিই নির্ধারণ করা হোক না কেন, তা হতে হবে উভয় পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য নিয়ে কয়েকটি বৈঠকে নিশার কাছে বিভিন্ন জনের পক্ষ থেকে জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ঢাকাস্থ মার্কিন কূটনৈতিক একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নিশা দেশাই সফরের শুরুই করেন বর্তমান সরকারের সমালোচনায় মুখর ছয় পেশাজীবীর সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে। সেখানে তিনি প্রত্যেকের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চান। এর সমাধানে তাদের চাওয়া কি এমন বিষয়ও জানতে চেয়েছেন নিশা দেশাই। নিজে শুধু বলেছেন বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা।

রাজনৈতিক সংকট নিয়ে বিশেষ কিছু বলেননি তিনি। পরদিন সকালে বৈঠক করে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এই বৈঠকেও নিশা ড. ইউনূসের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চেয়েছেন। সংকট নিরূপণে ড. ইউনূসের পরামর্শ কি তা জানতেও আগ্রহ ছিল নিশা দেশাইয়ের। প্রায় দেড় ঘণ্টার এ বৈঠকে আরেকটি বিষয় ছিল গ্রামীণ ব্যাংক।

এ বিষয়ে সর্বশেষ সব তথ্য নিশা দিশাই বৈঠকে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি এটি জানিয়েছেন যে, সব সর্বশেষ তথ্যই তার দফতরের জানা। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন ড. ইউনূসের কাছে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তার হতাশার কথা বলেছেন। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অন্য অংশের সঙ্গেও দুই ভাগে বৈঠক করেন নিশা দেশাই।

এ ছাড়া ছিল ঢাকার নাগরিক সমাজের সম্মানিত নাগরিক (রাজনীতিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী) ও ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। সুশীলদের সঙ্গে প্রথম দুই বৈঠকে ঢাকার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের কাছে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা রাজনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে। ঠিক তেমনি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সামনে পেয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা-সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত এক নারীর কাছে এই দেশের নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে মূল্যায়ন জিজ্ঞাসা করেন নিশা দেশাই। এ ছাড়া তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে যেসব বৈঠক করেছেন সেসব ক্ষেত্রে অফিসিয়াল বিষয়াদির বাইরে কোনো কথা বলেননি।

সূত্র মতে, এসব বৈঠকে তিনি শুনেছেন।

দুই নেত্রীর কাছেও শুনেছেন, তবে সেখানে বলেছেনও। স্পষ্ট করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। বলেছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ফর্মুলা নেই, হস্তক্ষেপও নেই। যুক্তরাষ্ট্র শুধু পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করছে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে তিনটি বিষয়ে কথা বলেছেন। এক. আলোচনার জন্য বিরোধী দলকে আহ্বান জানানোর কথা, দুই. বর্তমান মেয়াদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের কথা ও ভবিষ্যতেও নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং তিন. বিএনপির জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্টতা ও হরতালের সহিংসতা। জবাবে নিশা দিশাই আলোচনায় আহ্বানের প্রশংসা করেছেন এবং সেই পরিবেশ সৃষ্টিতে বিএনপির অভিযোগগুলো স্মরণ করে দিয়ে বলেছেন, মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে দেওয়া একটি নাগরিক অধিকার। বলেছেন, পদ্ধতি যেটাই হোক তা একতরফাভাবে করলে জনমনে ক্ষোভ দেখা যাবে। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে।

 

অপরদিকে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে আলোচনাতেও নিজের একই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। আলোচনার সুযোগ গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছেন। আলোচনায় সমাধান না হলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সমর্থন থাকবে বলেও জানিয়েছেন। তবে হরতালের সহিংসতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জিরো টলারেন্সের কথা স্পষ্টভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন নিশা দেশাই বিসওয়াল।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.