আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খালেদা যাননি, ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, কেমন আছেন আপনার ম্যাডাম

সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদের মধ্যে প্রায় এক মিনিট কথা হয়। অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মোবাইলফোনে কুশল বিনিময়ের তথ্য জানান মির্জা ফখরুল।

সেনাকুঞ্জের ওই অনুষ্ঠানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা বিশিষ্টজনদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। একপর্যায়ে হাসতে হাসতে প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে যান মির্জা ফখরুলের দিকে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে সালাম দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। হাসতে হাসতে প্রধানমন্ত্রী সালামের জবাব দিয়ে বলেন, কেমন আছেন ফখরুল সাহেব? শরীর-স্বাস্থ্য ভালো?

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমিও ভালো আছি। এরপর প্রধানমন্ত্রী আবার জানতে চান, আপনার ম্যাডাম কেমন আছেন? তার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো তো? মির্জা ফখরুল জানান, ম্যাডাম ভালোই আছেন। তবে তার শরীরটা বেশি ভালো নেই।

তিনি শারীরিকভাবে একটু অসুস্থ। এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, আপনার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো আছে? প্রধানমন্ত্রী জানান, আমি ভালোই আছি। তবে কথা বলার সময় দুজনকে হাসতে দেখা যায়। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ। সংলাপের বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা একটা সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল।

সংলাপ নিয়ে এখানে কোনো কথা হয়নি। কুশল বিনিময় ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা হয়নি বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মির্জা ফখরুল জানান, প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের সঙ্গে তার কুশল বিনিময় হয়েছে। কুশল বিনিময় ছাড়া সেখানে অন্য কোনো বিষয়ে কথা হয়নি। পরে বেরিয়ে এসে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ বলেন, 'সশস্ত্রবাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে কিছুক্ষণ কথা হয়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফখরুলকে বলেন, 'আপনারা নির্বাচনে আসেন, আলোচনা শুরু করেন। আপনারা মহাসচিব পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেন। ' এর জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম তেমন কিছু বলেননি। ' তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার শুধু কুশল বিনিময় হয়েছে। ' বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিকালে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ড. আর এ গনি, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে ইলাহি আকবর, চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত: বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শুধু দেশের নয়, শান্তি মিশনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘেরও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সরকার। বিদেশ থেকে নানা ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি, বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার কেনা হয়েছে। এক সময় বাংলাদেশই যুদ্ধবিমান তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনদের সন্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের হাতে সম্মানী চেক ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত চার বছরে দুবার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার পরিমাণ ও ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়িয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনী তাদের দক্ষতার সুনাম সারা বিশ্বে রেখেছে। তারা কাজের মাধ্যমে দেশের মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করে শুধু দেশের ভাবমূর্তি নয়, জাতিসংঘের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করেছে। জাতিসংঘে সেনাবাহিনী যেন তাদের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারে, সেজন্য শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

এ ছাড়া বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সব বাহিনীকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। সময়োচিত প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বহু প্রতীক্ষিত সমুদ্রসীমানা নির্ধারিত হয়েছে। আগামী ২০১৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারতের সমুদ্রসীমা নির্ধারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনক্লস সেল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

শারীরিক অসুস্থতায় যাননি বেগম জিয়া : শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যোগ দেননি। এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল জানান, সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় নেতার যোগদানের কথা ছিল। কিন্তু তিনি আমাকে জানিয়েছেন, তার শরীরটা ভালো নয়। তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। তাই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি তিনি।

গেল বছর একই স্থানে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.