আজ ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান-আবাহনীর লড়াই। অথচ এ নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে কোনো উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আগে ফেডারেশন কাপ, লিগসহ দুই দলের যে লড়াই অনুষ্ঠিত হতো তা দেশ জুড়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ত। ২০০৪ সাল থেকেই মর্যাদার লড়াইয়ে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। যাক উত্তেজনা বা আগ্রহ থাকুক বা না থাকুক ম্যাচটা মোহামেডান-আবাহনীর।
তাই আলাদা একটা আবেদন থাকবেই। তাছাড়া আজকের জয়-পরাজয়ের ওপর নির্ভর করবে ফেডারেশন কাপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। অনেক দিন পর এ আসরে দুই দল গ্রুপ পর্যায়ে মুখোমুখি হচ্ছে। আবাহনী প্রথম খেলায় রহমতগঞ্জকে ৩-০ আর মোহামেডান ৫-২ গোলে জয় পেয়েছিল। সুতরাং যারা জিতবে তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে লড়বে।
এমনিতেই ফুটবলের জনপ্রিয়তা নেই। তারপর আবার গত তিন মৌসুমে মোহামেডান শক্তিশালী দল না গড়াতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লড়াইয়ে আকর্ষণটা আরও কমে গিয়েছিল।
ফেডারেশন কাপে দুইদল শেষ বার মোকাবেলা করে ২০১০ মৌসুমে। সেবার ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে খেলা ড্র হওয়াতে টাইব্রেকারে জয়ী হয়ে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আর আবাহনী শেষবার শিরোপা ঘরে তুলে ২০১১ সালে।
ফাইনালে শেখ জামালকে তারা পরাজিত করে। এরপর বাকি দুই আসরে তারা ফাইনালেই উঠতে পারেনি। এবার শক্তির বিচারে মোহামেডানকে এগিয়ে রাখা যায়। কিন্তু চির প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে আবার কোনো হিসাব-নিকাশ চলে না। দুই দলের খেলোয়াড়রা এতটা স্নায়ুচাপে থাকে যে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে না।
তাই ফলাফল কি হবে বলা মুশকিল। মোহামেডানের শক্তিশালী দল গড়ার পরও আবাহনীর কাছে হারের রেকর্ড রয়েছে। তেমনিভাবে আবাহনীও জিততে পারেনি। আজকের ম্যাচে জয়ের ব্যাপারে দুই দলই আশাবাদী। মোহামেডানের অধিনায়ক জাহিদ হোসেন এমিলি বলেন, আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা বাড়তি টেনশন।
সে কারণেই নিশ্চিত করে কেউ জয়ের কথা বলতে পারবে না। তবে দল হিসেবে মোহামেডান যথেষ্ট শক্তিশালী। প্রতিটি পজিশনে আমাদের ভালোমানের খেলোয়াড় রয়েছে। সুযোগ যদি কাজে লাগানো যায় আর মাথা ঠাণ্ডা করে খেলতে পারলে মোহামেডান ভালোভাবেই জিততে পারবে। ফুটবল ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, অনেকদিন পর লিগের আগে আমরা আবাহনীর বিরুদ্ধে খেলছি।
এখানে যারাই জিতবে লিগে বাড়তি অনুপ্রেরণা পাবে। আশা রাখি মোহামেডান জিতেই মাঠ ছাড়বে। আবাহনীর অধিনায়ক সুজন বলেন, মোহামেডানের বিপক্ষে আমরা বরাবরই ভালো খেলি। আশা রাখি মৌসুমের প্রথম সাক্ষাতেই আমরা তাদের হারিয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাবো। ফুটবল ম্যানেজার সত্যজিত দাস রুপু বলেন, আবাহনী জেতার জন্যই মাঠে নামে।
সুতরাং মোহামেডানের বিপক্ষে আমাদের একমাত্র টার্গেট জয়। ১৯৮০ সালে শুরু হলেও ফেডারেশন কাপের প্রথম আসরে দুই দলের দেখা হয়নি। ১৯৮১ সালে প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে ফাইনালে। ২-০ গোলে জয়ী হয়ে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ পর্যন্ত তারা ১৬ বার একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ে।
জয়ের দিক দিয়ে মোহামেডানই এগিয়ে আছে।
দুই দলের পরিসংখ্যান
১. ১৯৮১ মোহামেডান-২ আবাহনী-০ (ফাইনাল)
২. ১৯৮২ মোহামেডান-০ আবাহনী-০ (ফাইনাল)
৩. ১৯৮৩ মোহামেডান-২ আবাহনী-০ (ফাইনাল)
৪. ১৯৮৪ গোলশূন্য অবস্থায় দুদলের ফাইনাল পরিত্যক্ত
৫. ১৯৮৬ আবাহনী-৪ মোহামেডান-৪ (সেমিফাইনাল)
আবাহনী ট্রাইবেকারে জয়ী)
৬. ১৯৮৮ আবাহনী-১ মোহামেডান-০ (ফাইনাল)
৭. ১৯৮৯-৯০ মোহামেডান-২ আবাহনী-১ (ফাইনাল)
৮. ১৯৯২ মোহামেডান-১ আবাহনী-১ (সেমিফাইনাল) (মোহামেডান টাইব্রেকারে জয়ী)
৯. ১৯৯৪ মোহামেডান-০ আবাহনী-০ (গ্রুপ পর্ব)
১০. ১৯৯৫ মোহামেডান-০ আবাহনী-০ (ফাইনাল)
(মোহামেডান টাইব্রেকারে জয়ী)
১১. ১৯৯৭ আবাহনী-৩ মোহামেডান-২ (সেমিফাইনাল)
১২. ১৯৯৯ আবাহনী-১ মোহামেডান-০ (ফাইনাল)
১৩. ২০০৪ মোহামেডান-৩ আবাহনী-২ (সেমিফাইনাল)
১৪. ২০০৬ আবাহনী-৫ মোহামেডান-১ (গ্রুপপর্ব)
১৫. ২০০৮-০৯ মোহামেডান-০ আবাহনী-০ ( মোহামেডান ট্রাইবেকারে জয়ী)
১৬. ২০০৯-১০ মোহামেডান-০ আবাহনী-০ (মোহামেডান টাইব্রেকারে জয়ী)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।