মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।
ব্লগে সামান্য যা লেখালেখি করি, জানি না অপরাধ কি না। পক্ষ-বিপক্ষ অনেকের দ্বারাই আহত হই।
নিরপেক্ষতার এই এক জ্বালা। গতকাল রাতে একজন ফোন করে ফরহাদ মজহারের ২৪/১১/২০১৩ ইং- নয়া দিগন্তের "নিরপেক্ষতার রাজনীতি" লেখাটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। জায়গামতো আমাকে একটা আঘাত করলেন, অনেক দূর থেকে। কারণ তিনি জানেন এত বড় একজন লেখক ও বুদ্ধিজীবীর কথা উড়িয়ে দেয়ার সাধ্য আমার নেই। যদি বলি আমাকে তার মুখোমুখি করান, তাচ্ছিল্যের হাসি।
সেই ফোনকারী জামায়াতের অকুণ্ঠ সমর্থক, আমার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ আছে। আমি কেন জামায়াত সমর্থন করি না তাতে তিনি নিশ্চয় বেদনাহত। তার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। আমি কোনো ব্যক্তিবিশেষকে নিয়ে পারতপক্ষে লিখি না। সর্বশেষ লিখেছিলাম কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে।
জানি না তার কাছে লেখাটা পৌঁছেছে কি না। না পৌঁছলেও আমার দোষ নেই। কেননা তিনি যদি কবরের একজন মৃত মানুষকে সম্বোধন করে আশা করতে পারেন (নাওযুবিল্লাহ) তার কথা তিনি শুনছেন, তাহলে আমি কেন জীবিত কাদের সিদ্দিকী আমার লেখা পেয়েছে সেটা আশা করতে পারব না?
জনাব মজহার ক'দিন আগেও লিখেছিলেন ভারতের এক ব্যক্তিকে নিয়ে, যাকে আমি চিনতাম না, অনেকেই চিনত না। মজহার জানেন না, আর তার অনুসারীরা ভাবতেও পারে না এর দ্বারা কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে। এই গিলু আছে বলে মনে হয় না।
সামু ব্লগে আরেকজন জামায়াত সমর্থক সেই দিনের সেই লেখার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ব্যাপারটা আমি তাকে কিভাবে বুঝাব? যাহোক, এর আগেও তাকে সমালোচনা করে দুটি লেখা লিখেছিলাম। একটি এই। আজ আরেকটি লিখতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। এবং এটি আমি তাকে ইমেইল করে পাঠিয়েছি।
চ্যালেঞ্জ করছি, মুখোমুখি অথবা যেকোনো মাধ্যমে। তার যখন যেখানে যেভাবে সুবিধা। সব জারিজুরি দেখে নেব।
তিনি সম্প্রতি মিডিয়া অফিসে বোমা হামলা বিষয়ে এক উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন। এরপর এটা ঢাকতে নিয়মিতই বকবক করে যাচ্ছেন।
তবু ভুল স্বীকার করবেন না। এক্ষেত্রে আমি বলব, সাংবাদিকরা কৌশলে কথা বের করেন এবং ইম্পরটেন্ট মন্তব্যটাই প্রচার করেন। তিনি সে কৌশলের কাছে পরাজিত। তার ভুল স্বীকার করা উচিত। যাহোক, আমি সেই ফোনকারীকে বলেছি, যদি মজহারের বক্তব্যকে আমি সামান্যতমও সমর্থন করি, তাহলে সর্বপ্রথম তার এবং জামায়াতের বিরুদ্ধেই আমাকে দাঁড়াতে হবে, এমনকি আক্রমণাত্মকভাবে।
কারণটাও তাকে ব্যাখ্যা করেছি।
তিনি ক্ষমতার স্বার্থে একটি পক্ষ নিয়ে চরমভাবে বিতর্কিত। এখন অন্যদেরও বিতর্কিত করতে চান, যারা কিছুটা হলেও নিরপেক্ষ। অথবা তার পক্ষে কথা না বলায় বিক্ষুব্ধ। তিনি নিরপেক্ষদের আক্রমণাত্মক ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
আমি তাকে প্রশ্ন করি, আপনি ক'কিসিমের নিরপেক্ষতা দেখেছেন? আপনার লেখার পেছনের ক্ষমতালিপ্সাটা আমার কাছে সুস্পষ্ট। সমাজতন্ত্রকে আমি ভালো করেই জানি। আপনি যে রাজনীতি আর নির্বাচন নিয়ে বছরের পর বছর লিখে, বক্তব্য দিয়ে বুদ্ধি বেঁচে উদর পূর্তি করছেন, এর ফলাফল কি? আমি যদি বলি আজকের সংকটের জন্য আপনাদের মতো চরমপন্থিরাই দায়ি? কেন নয়? আপনারা প্রচারে আছেন, অর্থ-সম্পদ-মান-জশের চূড়ায় আরোহন করছেন, বিদেশি শক্তির শেল্টার পাচ্ছেন, যার ফলে আমার মতো ব্যক্তির ইমেইলের জবাব দেয়ার প্রয়োজনবোধ করেন না, কিন্তু নগ্ন আক্রমণ ঠিকই করেন।
আপনি যে নির্বাচন, গণতন্ত্র নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন, ব্লগ-ফেসবুকের ছেলেরাও এরচেয়ে উপরের লেভেলে আছে। গতকাল এক ফ্রেন্ড মন্তব্য করল, নির্বচনই মূল সমস্যা।
"বর্তমান চরম অস্থিতিশীল ও নির্মম আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে জীবনের সর্বক্ষেত্রে মুক্তির প্রশ্নটি জনসাধারণকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা স্বাধীন বটে; কিন্তু কোন্ অর্থে স্বাধীন, কতটুকু স্বাধীন?"
"আমাদের আরেকটি ‘স্বাধীনতা’ অর্জন করতে হবে। যে স্বাধীনতা প্রকৃত অর্থে ১৬ কোটি মানুষকে জীবনের সকল পর্যায়ে মুক্তির পথ দেখাবে। "
"কেবল নির্বাচনের নাম গণতন্ত্র নয়। নির্বাচনকেন্দ্রিক গণতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও বর্তমান রোগাক্রান্ত রাজনীতির মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে মুক্তি অর্জন অসম্ভব।
নির্বাচনের নামে ক’বছর পরপর জনগণের কোটি কোটি টাকা লোটপাট ও অপচয়ের বিষয়টিও নতুন করে ভাবতে হবে। "
এই লেখার প্রেক্ষিতে।
মানুষের মৌলিক সমস্যা নির্বাচন সমাধান করবে না। স্বয়ং নির্বচনই আজ সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত। আর জাতি হিসেবে আমাদের মৌলিক মতবিরোধ দূর হলে নির্বাচন কোনো সমস্যা না।
সেই মৌলিক ইস্যুটি সামনে নিয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের তিনি এভাবে আক্রমণ করবেন, তার পক্ষে কেউ না থাকলেই ক্ষুব্ধ হবেন, এইসব নোঙড়ামী ও ভণ্ডামী তিনি কোথায় শিখলেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।